বিশেষ সংবাদদাতা: মা জুহি নন্দীকে নিয়ে সিকিম মণিপাল ইউনিভার্সিটিতে গিয়েছিলেন এক বিশেষ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে। তবে প্রকৃতির যে এহেন ভয়াল রূপ দেখতে হবে, তা বোধহয় স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেননি অন্তরা নন্দী (Antara Nandy)। ‘দেবতার গ্রাস’ কেমন? জানালেন সংবাদ প্রতিদিন ডট.ইন-কে।
প্রবল বর্ষণে বানভাসি উত্তর সিকিমের (Sikkim) চুংথাং, মানগান, রংপো-সহ একাধিক অঞ্চল। সেখানে বহু মানুষ এখনও নিখোঁজ। এই মুহূর্তে সিকিমে বেড়াতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন ৩ হাজারের উপর পর্যটক। খোলা হয়েছে ১৮টি ত্রাণ শিবির। আর সেই বিপর্যয়েই আটকে পড়েছেন জনপ্রিয় ‘নন্দী সিস্টার্স’-এর (Nandi sister) অন্তরা ও তাঁর মা। সোশাল মিডিয়ায় যাঁদের জনপ্রিয়তা তুমুল।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিকর্টবর্তী এক হোটেলে ছিলেন মা-মেয়ে। বুধবার ভোর রাতে এক বিকট আওয়াজে ঘুম ভাঙে তাঁদের। মা জুহি নন্দীর কথায়, “তখনও ঠাহর করতে পারিনি ঠিক কী ঘটেছে! তিস্তা নদীর এই প্রলয়ের সময়ে বাকি রাতটা কাটে ব্যালকনিতে। কলেজ কর্তৃপক্ষর সঙ্গে যোগাযোগ করি। ওঁরা আশ্বাস দেন যে, প্রকৃতির এহেন তাণ্ডবলীলার সাক্ষী সিকিম এর আগেও থেকেছে। তবে খুব একটা ভয় পাওয়ার দরকার নেই।”
অন্তরা নন্দী জানান, “পরের দিনই যখন হোটেলে চেক আউট করতে যাই, তখন হোটেলের তরফ থেকে জানানো হয় যে, মেঘভাঙা বৃষ্টিতে গোটা রাস্তাটাই ভেসে গিয়েছে। সিকিমের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত। মোবাইল নেটওয়ার্ক পরিষেবাও চলে যায়। ফলে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি আমরা।” বোন অঙ্কিতা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়া হওয়ায় পরীক্ষার জন্য সিকিমে যাননি। এদিকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় চিন্তায় পড়ে যায় নন্দী পরিবার। উদ্বেগে বিনিদ্র রাত কাটে। শেষমেশ বৃহস্পতিবার কোনওরকমে দার্জিলিংয়ে পৌঁছন অন্তরা এবং তাঁর মা। সেখান থেকে সোজা শিলিগুড়িতে।
[আরও পড়ুন: কৃষকমৃত্যু, সরকারি দুর্নীতি! ‘জওয়ান আসলে জনতার কণ্ঠস্বর’, হাটে হাঁড়ি ভাঙলেন শাহরুখ]
প্রসঙ্গত, ‘রক্তবীজ’-এর ‘নাক্কু নাক্কু’ গান লঞ্চের জন্য ৬ তারিখই কলকাতায় আসার কথা ছিল নন্দী সিস্টার্স-এর। কিন্তু সিকিমে এমন বিপর্যয়ের সাক্ষী থেকে পুণের বাড়িতে না ফিরে তাই সোজা কলকাতার উদ্দেশে রওনা হন মা-মেয়ে। অন্তরার কথায়, “এমন ভয়াবহ অভিজ্ঞতা কখনও ভুলতে পারব না।” উল্লেখ্য, বিগত কয়েক মাস ধরেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তের তারকাদের সঙ্গে জুটি বেঁধে গান করছেন ‘নন্দী সিস্টার্স’-এর অন্তরা এবং অঙ্কিতা। টলিউড সেলেবরাও বাদ যাননি তাঁদের ‘গুনগুনালে’ এপিসোড থেকে। আবির চট্টোপাধ্যায়, ইমন চক্রবর্তী সকলের সঙ্গেই কোলাব করে শোরগোল ফেলে দিয়েছে অন্তরা-অঙ্কিতা।
ইতিমধ্যেই বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য সিকিম সরকারের পক্ষ থেকে এনডিআরএফের তিনটি বাহিনী চাওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার তাতে অনুমোদন জানিয়েছে। ইতিমধ্যে সেখানে সাহায্যের জন্য এনডিআরএফের একটি দল পৌঁছেছে।