স্মৃতিশক্তি বাড়াতে কিংবা বুদ্ধিতে শান দিতে হবে ছোটদের মতো বয়স্কদেরও। ব্রেনের মারপ্যাঁচের অভ্যাস করবেন কীভাবে? টিপস দিলেন সুমিত রায়।
শরীর দিব্যি ঠিক আছে। কিন্তু প্রচণ্ড ভুলো মন। ৫০ পেরনোর পর অনেকেই এমন সমস্যায় পড়েন। বেশিরভাগই পাত্তা দেন না। যার জেরে ধীরে ধীরে শুরু হয় অ্যালজাইমার্স, ডিমেনশিয়ার মতো স্মৃতি ধূসর হওয়া অসুখ।
সন্তানের স্মৃতিশক্তি তুখড় হোক। তীক্ষ্ণ বুদ্ধির জন্য কেরিয়ারে সফল হোক। এমনই কামনা বাবা-মায়েদের। ছোটদের পড়াশোনায় একাগ্রতা, মনে রাখার ক্ষমতা বৃদ্ধি ও ব্রেনকে সুচারুভাবে কাজে লাগানোর অভ্যাস কীভাবে বাড়ানো যায়? কিংবা বৃদ্ধ বয়সেও কীভাবে সচল রাখা যায় ব্রেনের কর্মশক্তি? মস্তিষ্ক সুস্থ রাখতে তিনটি জিনিস সঠিকভাবে করা দরকার, সঠিক খাদ্য, এক্সারসাইজ বা যোগ ব্যায়াম ও ভাল গভীর ঘুম। শিশুর মস্তিষ্কের কোষিকা প্রাপ্তবয়স্কদের থেকে ২০ শতাংশ বেশি হয় এবং বয়ঃসন্ধিকালে পৌঁছতে এই ২০ শতাংশ বেশি কোষিকা নষ্ট হয়ে যায়।
জরুরি খাবার
- গবেষণা অনুযায়ী যে পরিপোষকগুলি মস্তিষ্কের বোধশক্তির জন্য প্রয়োজনীয়, সেগুলি হল-ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, হলুদ, ফ্লাভোনডস, স্যাচুরেটেড ফ্যাট, ভিটামিন বি, ডি, ই, ক্যারোটেন, ক্যালসিয়াম, জিঙ্ক, সেলিনিয়াম, কপার এবং আয়রন।
- বাচ্চাদের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য- দুধ, কালোজাম, শসা, আপেল, মিষ্টি আলু, ডিম, দই, তৈলাক্ত মাছ, সবুজ শাক-সবজি, টম্যাটো, কমলালেবু, অ্যাভোকাডো, মাংস, সোয়াবিন, গাজর, বিনস, বাদাম, মটরশুঁটি, মসুর ডাল।
- ৪৫ বছর বয়সের পর থেকেই উল্লেখ্য খাবারের সঙ্গে যুক্ত হবে ব্রকোলি, ডার্ক চকোলেট, বীজ-সহ গম, ফ্লেক্স সিড, আখরোট এবং কুমড়োর বীজ।
- কাঁচা হলুদ, গোলমরিচ, ব্রাহ্মীশাক, আমলকী, শঙ্খপুষ্পী আর অশ্বগন্ধা ব্রেনকে সক্রিয় রাখে।
- এর সঙ্গে মস্তিষ্কের একাগ্রতা আর স্মৃতিশক্তি বাড়াতে খেতে হবে বিট, সেলেরি, রোজমেরি এবং অলিভ অয়েল।
- ক্ষতিকর- ফাস্ট ফুড, চিনি, ময়দার তৈরি জিনিস (ব্রেড, বিস্কুট, কেক, পেস্ট্রি), প্রসেস করা মাংস বা চিজ এবং কৃত্রিম চিনি দেওয়া পানীয়।
এক্সারসাইজ
প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট যোগব্যায়াম করতে হবে। ইউনিভার্সিটি অফ ব্রিটিশ কলম্বিয়ার গবেষণা অনুযায়ী, হাঁটা, ফ্রি হ্যান্ড, সাঁতার কাটা, ডান্সের মতো যে কোনও শারীরিক এক্সাসাইজ যা হার্ট বিট বাড়িয়ে দেয় এবং ঘাম ঝরায় তা ব্রেনের জন্য ভাল। তবে শুধুমাত্র পেশি বাড়ানোর এক্সারসাইজ করলে ব্রেনের কোনও উপকার হয় না। করতে হবে এগুলি।
আসন
- শীর্ষাসন
- সর্বাঙ্গাসন
- সেতুবন্ধ আসন
- পশ্চিমত্তাসন
প্রাণায়াম
- পুরো ফুসফুস ভরে নিশ্বাস নেওয়া আর ছাড়া, এই অভ্যাসের উপর মনোযোগ দিলে একাগ্রতা বাড়ে। এর সঙ্গে সঙ্গে করতে হবে
- অনুলোম বিলম্ব
- কপাল ভাতি
- ভামরি প্রাণায়ম
ঘুম
বিশ্বজুড়ে সব গবেষণাই বলে যে অন্তত ৬-৮ ঘণ্টা গভীর ঘুম মস্তিষ্ককে ভাল রাখে। এটাও দেখা গিয়েছে যে, ঘুমের সময় তা রাত শুরু হওয়া থেকে ভোরের কাছাকাছি অবধি হলে সেটা প্রাকৃতিক ও শারীরিকভাবে পরিপূর্ণ হয়। যদিও সবাই নিজের নিজের সার্কাডিয়ান সাইকেল (ঘুমের চক্র) বানিয়ে নেন, কিন্তু যদি একটু বিশেষ প্রচেষ্টা করেন এটা পরিবর্তন করে রাত ১০টার কাছাকাছি থেকে ভোর ৪-টের কাছাকাছি অবধি যদি আনা যায় তাহলে ঘুম খুব ভাল হয়। এটা বোঝার একটা গুরুত্বপূর্ণ মাপকাঠি হল ঘুম থেকে উঠে আপনার কতটা চনমনে লাগছে।
এ ছাড়া কিছু খেলা ব্রেনের কার্যকারিতা বাড়ায়- ছোটদের দাবা, ধাঁধা/পাজেল, সুদকু, ব্লক বিল্ডিং এবং স্ক্রাবল খেলা উচিত।
বয়স্করাও দাবা, সুদোকু, ক্রসওয়ার্ড, শব্দজব্দ এবং স্ক্রাবল খেলুন। তাসে ব্রিজ খেলায় প্রচুর ব্রেন খাটাতে হয় এবং মেমরি গেম স্মৃতিশক্তিকে বাড়ায়।
The post ভুলো মন? মগজাস্ত্রের জোর বাড়াতে মেনে চলুন এই নিয়ম appeared first on Sangbad Pratidin.