অর্ণব আইচ: হৃদরোগে আক্রান্ত হলেও দেহে মিলেছে অল্প আঘাতের চিহ্ন। সিঁথি থানায় জেরার সময় সন্দেহভাজন প্রৌঢ়ের মৃত্যুর ঘটনায় পরিবারের হাতে আসা ময়নাতদন্তের রিপোর্টে এমনটাই উল্লেখ করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। কিছুদিন আগেই সিঁথি থানায় জেরার সময় মৃত্যু হয় প্রৌঢ় রাজকুমার সাউয়ের। সঠিক বিচার পেতে তাঁর পরিবারের লোকেরা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন। হাই কোর্ট পুলিশকে রিপোর্ট জমা দিতে বলেন। লালবাজারের একটি সূত্র জানিয়েছে, আদালতে রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে। এই মৃত্যুর ঘটনায় তিনজন পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল উঠেছে। তাঁদের মধ্যে একজনকে ইতিমধ্যেই সাসপেন্ড করা হয়েছে। বাকি দু’জনকে পুলিশ ক্লোজ করেছে।
সিঁথি থানায় ওই প্রৌঢ়ের মৃত্যুর ঘটনায় ময়নাতদন্তের রিপোর্টই মূল অস্ত্র বলে জানিয়েছিলেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। পুলিশ ও মৃতের পরিবারের দাবি, ময়নাতদন্তের রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই মৃত্যু হয়েছে রাজকুমার সাউয়ের। কিন্তু মৃতের বাঁ হাতের কনুইয়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। কানের কাছেও রয়েছে আঘাতের চিহ্ন। ওই আঘাতগুলির ফলেই যে মৃত্যু হয়েছে, এমনটা উল্লেখ করা নেই। গোয়েন্দা পুলিশ তদন্ত করে জানার চেষ্টা করছে যে, প্রৌঢ়কে থানার ভিতর মারধর করার ফলেই এই আঘাতগুলি লেগেছে কি না। কারণ, পড়ে গিয়ে আঘাত লাগার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
অন্যদিকে, পুলিশের দাবি দুই তরফের প্রত্যক্ষদর্শীর বক্তব্য মিলছে না। যার জেরে সমস্যা দেখা দেখা দিচ্ছে। মৃতের পরিবারের আটজনকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। তাঁদের প্রায় প্রত্যেকেই কোনও না কোনওভাবে পুলিশের কাছে দাবি করেছেন যে, রাজকুমার সাউকে থানার ভিতর মারধর করা হয়েছে। অন্যদিকে, সিঁথি থানার প্রায় ৩০ জন পুলিশকর্মী ও অফিসারকে প্রত্যক্ষদর্শী হিসাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাঁদের মধ্যে বেশিরভাগই মারধরের বিষয়টি গোয়েন্দাদের বলতে চাননি। তাঁদের মধ্যে অনেকেই বলেছেন, কিছু দেখেননি। আবার অনেকেই বলেছেন, তাঁরা ঘটনার সময় থানায় ছিলেন না। প্রাথমিক জেরায় তিন অভিযুক্তও মারধরের বিষয়েটি অস্বীকার করে ছিলেন। ময়নাতদন্তের রিপোর্টের ভিত্তিতে এবার তিন অভিযুক্তকে ফের জেরা করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
The post সিঁথি কাণ্ডে নয়া মোড়, দেহে একাধিক আঘাতের উল্লেখ নিহতের ময়নাতদন্তের রিপোর্টে appeared first on Sangbad Pratidin.