প্রিয়ক মিত্র: দু’বছর আগে আজকের দিনেই চলে গিয়েছিলেন স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত (Swatilekha Sengupta)। মঞ্চে তাঁর উপস্থিতির দীর্ঘ ধারাবাহিকতা রেখে গিয়েছিলেন তিনি, যা বাহিত হয়ে চলেছে আজও, তাঁর দল ‘নান্দীকার’-এর হাত ধরে। মহাভারত-আধারিত ‘পাঞ্চজন্য’ নাট্যে গান্ধারীর ভূমিকায় দেখা যেত স্বাতীলেখাকে। ২৯ জুন আবার ফিরছে এই নাটক, সোহিনী সেনগুপ্তর নির্দেশনায়। গান্ধারীর ভূমিকায় দেখা যাবে তাঁকেই।
কতটা বদলেছে এই প্রযোজনা? সোহিনী বলছেন, “বদলেছে অনেকটাই। মায়ের অভিনীত চরিত্র এখন আমি করছি। আগে মা গান্ধারী হতেন, আমি করতাম একই সঙ্গে তিনটি চরিত্র– রাধা, দ্রৌপদী, রুক্মিণী। এবারে তিন জন এই আলাদা আলাদা চরিত্রগুলি করছে। রাধা করছে নিবেদিতা, নতুন মেয়ে, সে মিনার্ভা রেপার্টরি থেকে এসেছে। বাকি চরিত্র দলের লোকজনই করছে। সপ্তর্ষি (মৌলিক) আছে। ওর চরিত্রটা ভীষণই পারফরম্যান্স-ভিত্তিক। বাবা-মায়ের কণ্ঠস্বর রেকর্ডেড অবস্থায় শোনা যাবে। এই বিষয়টা অপরিবর্তিত থাকছে।”
[আরও পড়ুন: ‘সত্যি কথা বললেই বিতর্কের তকমা দেওয়া হয়’, ‘শিবপুর’ ছবি নিয়ে অকপট স্বস্তিকা]
রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্তকে কি মঞ্চে দেখা যাবে? “বাবা অভিনয় করতে চান। কিন্তু ওঁর বয়সের কারণে পারবেন কি না, সেই বিষয়ে আমি খুব একটা নিশ্চিত নই। শেষ মুহূর্ত অবধি বাবা চেষ্টা করবেন,” বলছেন সোহিনী। প্রস্তুতি কেমন চলছে? সোহিনী সোৎসাহে বললেন, “যে কোনও প্রযোজনার মহড়ার সময়ই একটা উদ্দীপনা দেখা যায়। সেটা আমাদের দলের সকলের মধ্যেই রয়েছে।” ‘পাঞ্চজন্য’ যুদ্ধের অভিঘাতের কথা বলে। এই নাটকটার প্রাসঙ্গিকতা কতটা এখনও? “মহাভারতের প্রতিটি পাতাই সবসময় প্রাসঙ্গিক। এই নাটকে একটি দৃশ্যে গান্ধারী হেঁটে বেড়ায় একরাশ মৃতদেহের মধ্য দিয়ে। একদিন এই দৃশ্যের মহড়া সেরে বাড়ি ফিরে দেখলাম করমণ্ডলের ঘটনাটা,” বলছেন সোহিনী।
এককালে স্বাতীলেখা অভিনয় করেছেন যে চরিত্রে, সেই চরিত্রের ভার কতটা অনুভব করছেন? সোহিনীর কথায়, “খুব একটা ভাল করে বুঝতে পারছি না এখনও। আমার প্রতিটি বাঁচায়, প্রতিটি পারফরম্যান্সে আমি মাকে খুবই মিস করি। দু’বছর হয়ে গেল মনেই হয় না। ২২ মে থেকে ১৬ জুন মা ছিলেন হাসপাতালে, এই সময়টা আমার, বাবার, সপ্তর্ষির খুব কঠিন যায়। মা চলে যাওয়ার পর থেকে আমি একদিনও নিজেকে ছুটি দিইনি। এভাবেই ব্যথাটা ভুলে থেকেছি। মা একই সঙ্গে ছিলেন আমার গুরু, সহযোদ্ধা। আমি এখন যতটা না অভিনয় করছি, তার থেকে বেশি দলকে, বাবাকে, এতগুলো ছেলেমেয়েকে বাঁচানোর চেষ্টা করছি।’