shono
Advertisement

Breaking News

হিন্দুত্ব থেকে সাম্যবাদের পথে, বাম রাজনীতির উজ্জ্বল নক্ষত্র সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়

লোকসভার প্রথম বাঙালি স্পিকার ছিলেন তিনি৷ The post হিন্দুত্ব থেকে সাম্যবাদের পথে, বাম রাজনীতির উজ্জ্বল নক্ষত্র সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 09:43 AM Aug 13, 2018Updated: 10:48 AM Aug 13, 2018

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পরাধীন ভারতের নামকরা আইনজীবী ছিলেন বাবা৷ সক্রিয় রাজনীতিতেও অংশগ্রহণ করেছিলেন৷ ছেলেও তাই৷ তবে বাবা ও ছেলের রাজনৈতিক বিশ্বাস ছিল আলাদা৷ বাবা নির্মলচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় অখিল ভারতীয় হিন্দু মহাসভার প্রতিষ্ঠাতা৷ আর ছেলে সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় বেছে নিয়েছিলেন বামপন্থা৷ তাঁকে এ দেশের বাম রাজনীতির নক্ষত্রও বলা চলে৷ দীর্ঘ ৪০ বছরের বর্ণময় রাজনৈতিক জীবন৷ জ্যোতি বসুর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন তিনি৷ শেষ কয়েক দশ বছর অবশ্য সক্রিয় রাজনীতি থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন৷ দল থেকেও বহিষ্কৃত হতে হয়েছিল৷ তবুও মনেপ্রাণে সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় ছিলেন একজন খাঁটি কমিউনিস্ট৷ সোমবার সকালে ইতি পড়ল তাঁর বর্ণময় জীবনে৷ দেশ হারাল নেতাকে৷ 

Advertisement

[রাজনীতির মঞ্চ ছেড়ে মহাশূন্যের ঠিকানায় সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়]

সালটা ১৯২৯৷ অসমের তেজপুরে জন্ম সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের৷ বাবা নির্মলচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় সেকালের নামী আইনজীবী৷ হিন্দু মহাসভার প্রতিষ্ঠাতাও বটে৷ ১৯৪৮ সালে এদেশে কমিউনিস্ট পার্টিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু৷ গ্রেপ্তার হয়েছিলেন বহু বামপন্থী নেতা৷ আদর্শগত ভিন্নতাকে দূরে সরিয়ে রেখে কমিউনিস্টদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন নির্মলচন্দ্র৷ সেই সুবাদে প্রবাদপ্রতীম বামনেতা জ্যোতি বসুর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা হয় তাঁর৷ পরবর্তীকালে ছেলে সোমনাথ যোগ দেন সিপিএম পার্টিতে৷ হয়ে ওঠেন বাম রাজনীতির এক দিকপাল নেতা৷

ছাত্রজীবন কেটেছে কলকাতায়৷ ভবানীপুরের মিত্র ইনস্টিটিউটের ছাত্র ছিলেন সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়৷ পড়েছেন প্রেসিডেন্সি কলেজ ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ও কেমব্রিজের জেসাস কলেজেও৷ ১৯৫৭ সালে আইনে  স্নাকতোত্তর পাশ করার পর আইনজীবী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়৷ সক্রিয় রাজনীতি যোগ দেওয়ার আগে বেশ কয়েক বছর ওকালতি করেছেন কলকাতা হাই কোর্টে৷ সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় যখন সক্রিয় রাজনীতিতে আসেন, ততদিনে কমিউনিস্ট পার্টি ভেঙে গিয়েছে৷ সিপিআই থেকে বেরিয়ে আলাদা দল তৈরি করেছেন জ্যোতি বসু, হরেকৃষ্ণ কোঙাররা৷ ১৯৬৮ সালে সিপিএম পার্টির সদস্য হন সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়৷ নির্দল প্রার্থী হিসেবে প্রথম সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন ১৯৭১ সালে৷আটের দশকে লোকসভা ভোটে যাদবপুর লোকসভাকেন্দ্র থেকে সিপিএম প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতেন সোমনাথবাবু৷ টানা ন’বার জিতেছেন৷ ১৯৮৪ সালে মাত্র একবারই কংগ্রেস প্রার্থী ও আজকের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে হেরে গিয়েছিলেন৷ ১৯৮৯ সাল থেকে ২০০৯  সাল পর্যন্ত বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ ছিলেন সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়৷

২০০৪ সালে কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসে কংগ্রেস৷ মনমোহন সিংয়ের সরকারকে বাইরে থেকে সমর্থন করে বামেরা৷ লোকসভার স্পিকার নির্বাচিত হন সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়৷ ২০০৮ সালে যখন বামেরা সমর্থন প্রত্যাহার করে নেয়, দলের নির্দেশ মেনে সরকারের বিরুদ্ধে ভোট দিতে রাজি হননি সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়৷ সংসদীয় রাজনীতিতে স্পিকারকে সবসময় নিরপেক্ষ থাকতে হয়৷ সেই যুক্তিতেই নিজের সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন তিনি৷ শেষপর্যন্ত, তাঁর মতো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকেও দল থেকে বহিষ্কার করে তৎকালীন সিপিএম নেতৃত্ব৷ সক্রিয় রাজনীতি থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়৷  সক্রিয় রাজনীতিতে ছিলেন না ঠিকই৷ তবে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত বিভিন্ন ইস্যুতে বলিষ্ঠভাবে নিজের মতামত জানাতেন সোমনাথবাবু৷ বার্ধক্যজনিত রোগে সোমবার সকালে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে প্রয়াত হলেন বাম রাজনীতির এই বর্ণময় ব্যক্তিত্ব৷ অবসান হল একটি যুগের৷

[ হাওড়া ব্রিজের ফুটপাথ ঢাকবে অত্যাধুনিক শেডে, খুশি পথচারীরা]

The post হিন্দুত্ব থেকে সাম্যবাদের পথে, বাম রাজনীতির উজ্জ্বল নক্ষত্র সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement