নন্দন দত্ত ও সুমিত বিশ্বাস, বীরভূম ও পুরুলিয়া: শিয়রে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগেই রাজ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দু’টি জেলা বীরভূম (Birbhum) এবং পুরুলিয়ার (Purulia) পুলিশ সুপারকে বদল করা হল। শুক্রবার নবান্নের তরফে বদলির বিজ্ঞপ্তি জারি করা হল। ভোটের মুখে এই রদবদল যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার ছিলেন এস সেলভামুরুগান। তাঁর বদলে আসছেন বিশ্বজিৎ মাহাতো। সেলভামুরুগানকে সিআইডিতে বদলি করা হয়েছে। বিশ্বজিৎ মাহাতো বর্তমানে আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের পশ্চিম জোনের ডিসি পদে রয়েছেন। সূত্রে্র খবর, পুরুলিয়ার বর্তমান পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে একাধিক বেনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। কয়লা পাচার কাণ্ডেও তাঁর যোগ থাকতে পারে বলে অভিযোগ উঠছে। তাই পুরুলিয়া তৃণমূল জেলা নেতৃত্ব সেলভামুরুগানকে সরিয়ে দেওয়ার ‘সুপারিশ’ করে বলে খবর। তাঁদের দাবি, সরকারের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে স্বচ্ছ ভাবমূর্তির কোনও অফিসারকে জেলায় আনা হোক।এমনকী, মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফরেও এ কথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানানো হয়েছিল।
[আরও পড়ুন : ‘কলকাতায় কেন এত রাজনৈতিক হিংসা?’, নির্বাচন কমিশনের কড়া প্রশ্নের মুখে অনুজ শর্মা]
এদিকে অনুব্রত মণ্ডলের গড় হিসেবে পরিচিত বীরভূম। তার পুলিশ সুপার শ্যাম সিংকে বদলি করা হল। তাঁর পরিবর্তে এই পদে আসছেন কলকাতার ডিসি (সেন্ট্রাল) মীরাজ খালিদ। উল্লেখ্য, গত লোকসভা নির্বাচনের আগে কমিশন শ্যাম সিংকে সরিয়ে দিয়েছিল। এবার নির্বাচনের আগেই তাঁকে বদলি করল রাজ্য সরকার।
সূত্রের খবর, বীরভূমে আইনশৃঙ্খলা নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচিল কাণ্ড থেকে রাজনৈতিক হিংসা, একের পর এক ঘটনায় ক্রমাগত প্রশ্ন উঠছিল জেলা পুলিশ সুপারের ভূমিকা নিয়ে। এমনকী, নির্বাচন কমিশনের তরফে দিল্লিতে জমা করা রিপোর্টেও এই দুই জেলার পরিস্থিতির কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। এরপরই দুই জেলার পুলিশ সুপারকে তড়িঘড়ি সরিয়ে দিল নবান্ন।
প্রসঙ্গত, বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে মোটেই সন্তুষ্ট নয় নির্বাচন কমিশনের ফুলবেঞ্চ। ফলে রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে বারবার কমিশনের প্রশ্নের মুখে পড়ছে রাজ্যের পুলিশ-প্রশাসন। শুক্রবারই কলকাতার কমিশনারকে কার্যত ভর্ৎসনা করে কমিশন। আশঙ্কা প্রকাশ করেছে জেলাগুলির পরিস্থিতি নিয়েও। এরপরই সরানো হল দুই পুলিশ সুপারকে। যদিও নবান্নের দাবি, ‘এটা রুটিন বদলি।’