সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হাওয়া-বাতাস নেই। নেই মাধ্যাকর্ষণ। এক কণা মাটি পর্যন্ত নেই। এমন পরিস্থিতি চাষ করা কি সম্ভব? অসম্ভব! অনেকেই উচ্চস্বরে এই দাবি করবেন। কিন্তু দাবি করলেই তো আর হল না। এই অসম্ভবকেই সম্ভব করে তুলেছে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন (ISS)। নাসা (NASA) ও ফ্লোরিডা সরকারের যৌথ উদ্যোগে চলে এই স্পেস স্টেশনটি। যাতে এই অসাধ্য সাধন করেছেন মহাকাশ বিজ্ঞানী কেট রবিন্স এবং তাঁর টিম। সকলে মিলেই মহাকাশে করেছেন মুলো (Radish) চাষ। টুইটারে পোস্ট করা হয়েছে সেই ভিডিও।
[আরও পড়ুন: মঙ্গলের মাটির গভীরে ছিল প্রাণের অস্তিত্ব! চাঞ্চল্যকর দাবি গবেষকদের]
ফাস্ট ফরোয়ার্ড এই ভিডিওর মাধ্যমেই মহাকাশে মুলো চাষের প্রত্যেকটি স্তর দেখানো হয়েছে। ক্যাপশনে মজার ছলে জানানো হয়েছে, যতটা তাড়াতাড়ি মুলো গাছগুলি হতে দেখা যাচ্ছে তত তাড়াতাড়ি এই কাজ সম্পন্ন হয়নি। মোট ২০টি মুলো গাছ ফলাতে বেশ পরিশ্রম করতে হয়েছে নভোশ্চরদের। আলাদা কাঁচের পাত্রের মধ্যে রাখতে হয়েছে। সেখানে মাইক্রোগ্রাভিটিকে চ্যালেঞ্জ করে কৃত্রিম পরিবেশ তৈরি করতে হয়েছে। বিশেষ রকমের পাথুরে মাটিতে পৃথিবী থেকে নিয়ে যাওয়া মুলোর বীজ পোঁতা হয়েছে। লাল ও নীল কৃত্রিম আলো ব্যবহার করা হয়েছে। এতে ফলন ভাল হয়েছে। চাষের কাজ ঠিকঠাক হচ্ছে কিনা তা দেখার জন্য প্রায় ১৮০টি সেন্সর ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ক্যামেরা লাগানো হয়েছিল। প্রায় ২০টি মুলো এভাবে মহাকাশে তৈরি করা হয়েছে। সেগুলি বিশেষ ব্যবস্থাপনায় পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা হবে। তারপর পরীক্ষা করে গুণগত মান ও পুষ্টিকর দিকগুলি খতিয়ে দেখা হবে।
[আরও পড়ুন: মহাকাশ গবেষণায় বাণিজ্যিকীকরণের পথে নাসা, চাঁদের নমুনা সংগ্রহের জন্য কী পুরস্কার জানেন?]
কিন্তু মুলোর মতো সবজিকেই কেন বেছে নেওয়া হল? এর কারণ মুলোর পুষ্টিগুণ এবং এই গাছ অন্যান্য সবজির গাছের তুলনায় বেশি তাড়াতাড়ি বেড়ে উঠতে পারে। মহাকাশে মাসের পর মাস থাকতে হয় নভোশ্চরদের। পৃথিবী থেকেই প্যাকেটজাত খাদ্য নিয়ে যেতে হয়। তাতে একাধিক সমস্যা দেখা দেয়। প্যাকেটজাত খাবার শরীরের ক্ষতি তো করেই পাশাপাশি তা নির্দিষ্ট সময়ের পর শেষ হয়ে যায়। আবার খাবার পাঠাতে হয়। মাইক্রোগ্র্যাভিটিকে চ্যালেঞ্জ করে চাষের এই সাফল্যে খুশি বিজ্ঞানীরা। এতে তাজা খাবারের পাশাপাশি অর্থেক দিক থেকেও অনেকটা খরচ বাঁচানো যাবে বলে মনে করছেন তাঁরা।