সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বেসরকারি উদ্যোগে মহাকাশ অভিযানের রাস্তা ধীরে ধীরে আরও প্রশস্ত হচ্ছে। SpaceX’এর বার দুয়েকের সফল উৎক্ষেপণ আরও উৎসাহিত করেছে অন্যান্য সংস্থাগুলিকে। এবার আমাজন (Amazon) কর্তা জেফ বেজোসের সংস্থা ‘ব্লু অরিজিন’ আরও বড় ঘোষণা করল। আগামী চার বছরের মধ্যে চাঁদে তারা পাঠাবে মহিলা নভোশ্চর। পুরোদমে তার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে বলে নিজের সোশ্যাল মিডিয়ার পাতায় জানিয়েছেন জেফ বেজোস। চন্দ্রাভিযানের জন্য প্রয়োজনীয় ইঞ্জিন এবং অন্যান্য যন্ত্রাংশ তৈরি করছে সংস্থাই। নাসার (NASA) অনুমতিক্রমে তার প্রাথমিক পরীক্ষাও হয়েছে বলে দাবি আমাজন কর্তার।
কীভাবে তৈরি হচ্ছে ‘ব্লু অরিজিন’? জানা গিয়েছে, BE-7 নামে একটি ইঞ্জিন তৈরি করেছে বছরের পর বছরের চেষ্টায়। একে চাঁদে অবতরণের মতো করেই তৈরি করা হয়েছে। ল্যান্ডার হিসেবে ব্যবহারে যাতে সমস্যা না হয়, তার জন্য তরল অক্সিজেন বা তরল হাইড্রোজেনের সাহায্য ইঞ্জিন চালানোর পরিকল্পনা করেছেন ‘ব্লু অরিজিন’-এর বিশেষজ্ঞরা। সংস্থার নামের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ২০২৪-এর চন্দ্রাভিযানের নাম রাখা হচ্ছে – ‘ব্লু মুন।’ প্রস্তুতি দীর্ঘদিন ধরে চললেও, আনুষ্ঠানিকভাবে জেফ বেজোস নিজের মহাকাশ সংস্থাটিকে প্রকাশ্য আনেন ২০১৯ সালে। আর তখনই চাঁদে মহিলা নভোশ্চর পাঠানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন তিনি। মাত্র একবছরের মধ্যে কাজ বেশ দ্রুতই এগোচ্ছে তাঁর সংস্থায়। তবে এই অভিযানে ‘ব্লু অরিজিন’ একা নয়, তাকে সাহায্য করছে আরও তিন সংস্থা।
[আরও পড়ুন: করোনার থাবা মহাকাশ অভিযানে, আরও পিছোতে পারে ইসরোর ‘গগনযান’ মিশন]
আসলে, এই বেসরকারি সংস্থাগুলির এভাবে মহাকাশ গবেষণায় পূর্ণ উদ্যমে ঝাঁপিয়ে পড়ার নেপথ্যে কিন্তু নাসার ভূমিকাই বেশি। জানা গিয়েছে, তাদের ‘আর্টেমিস’ প্রকল্পে এমনই কয়েকটি বেসরকারি সংস্থাকে দিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা করাতে চায় নাসা। এমনিতেই নাসার মুখ্য প্রশাসক জিম ব্রিডেনস্টাইন এই বেসরকারিকরণের পক্ষে। তিনি মনে করেন, এতে আদতে মহাকাশ গবেষণার উন্নতিই হবে, রাস্তা খুলবে আরও। তাই যে কোনও বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগে তাঁর পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।
[আরও পড়ুন: বর্ষশেষে মহাকাশে বিরল দৃশ্য, ৮০০ বছর পর কাছাকাছি আসছে বৃহস্পতি-শনি]
সেভাবেই নাসার উৎসাহে খাস মার্কিন মুলুকেই বেশ কয়েকটি সংস্থা ডানা মেলছে, যাদের উদ্দেশ্য, মহাকাশ গবেষণায় বিনিয়োগ এবং এই ক্ষেত্র নিজেদের ব্যবসা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। যার মধ্যে বিখ্যাত শিল্পপতি আমাজন কর্তাও রয়েছেন। সবমিলিয়ে, অদূর ভবিষ্যতে মহাকাশ গবেষণা বিষয়টি আর ততটা জটিল কিংবা দূরের বলে মনে হবে না। এসব সংস্থার দৌলতে হয়ত সাধারণেরও অনেকটা নাগালের মধ্যে চলে আসবে।