দুলাল দে: ইউরো কাপের (Euro 2020) ম্যাচগুলিতে একটি চ্যানেলের হয়ে প্রতি রাতেই বিষেজ্ঞর ভূমিকায় দেখা যায় তাঁকে। ম্যাচের প্রতিটি মুহূর্ত নানাভাবে বিশ্লেষণও করে থাকেন। হাইভোল্টেজ ইউরো কাপের ফাইনালের আগে এবার সরাসরি সংবাদ প্রতিদিনের সামনে মুখ খুললেন প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক বাইচুং ভুটিয়া (Bhaichung Bhutia)। জানালেন, ইংল্যান্ড-ইটালির মধ্যে কে হতে পারে এবারের ইউরো চ্যাম্পিয়ন।
প্রশ্ন : সরাসরিই জানতে চাইছি, স্টার্লিং বক্সে পড়ে যাওয়ার পর যে পেনাল্টিটা ডেনমার্ক পেয়েছে, সেটা কি আদৌ পেনাল্টি ছিল?
বাইচুং : সত্যি বলতে, আমারও পেনাল্টির সিদ্ধান্তটা ঠিক মনে হয়নি। যতই ভিএআর সিষ্টেম দেখে সিদ্ধান্ত নিক, তবুও আমার মনে হচ্ছে, ডেনমার্কের বিরুদ্ধে পেনাল্টির সিদ্ধান্তটা দেওয়ার আগে রেফারি আরও একটু বেশি সতর্ক হতে পারতেন।
প্রশ্ন : ফাইনালর আগে ইটালির সংবাদমাধ্যম কিন্তু আশঙ্কা প্রকাশ করছে, ইংল্যান্ডকে চ্যাম্পিয়ন করার জন্য উয়েফা ফাইনালেও সাহায্য করতে পারে।
বাইচুং : দেখুন, আমার মনে হয়, এই পর্যায়ের ফুটবলে, এখনকার দিনে খুল্লাম খুল্লা কাউকে এভাবে সাহায্য করা যায় না। হয়তো সাময়িক ভাবে কোনও সিদ্ধান্ত বিরুদ্ধে যেতে পারে। কিন্তু তার পিছনে ষড়যন্ত্র আছে বলে মনে হয় না। আমাদের ফুটবলেও রেফারির কত সিদ্ধান্ত বিরুদ্ধে যায়। সেগুলি শুধুই ভুল সিদ্ধান্ত। এর পিছনে ষড়যন্ত্র থাকে না।
প্রশ্ন : কিন্তু ফাইনাল নিয়ে পাঁচটা ম্যাচ ওয়েম্বলিতে খেলার সুযোগ পাচ্ছেন হ্যারি কেনরা। এই সুযোগটা অন্য দলগুলো কেন পাবে না?
বাইচুং : নিজের মাঠে খেলতে পারলে অবশ্যই একটা অ্যাডভান্টেজ পাওয়া যায়। ইংল্যান্ড সেই অ্যাডভান্টেজটা পাচ্ছে। কিন্তু আমার বক্তব্য হল, ক্রীড়াসূচিটা তো আর উয়েফা গতকাল প্রকাশ করেনি। তাহলে ফাইনালের আগে এইসব প্রসঙ্গ তোলার অর্থ কি? ফাইনালে ইংল্যান্ড এমনিতেই এগিয়ে আছে।
প্রশ্ন : ফাইনালে আপনার মতে ফেভারিট ইংল্যান্ড?
বাইচুং : একশোবার। ম্যাচটা ইংল্যান্ড ২-০ গোলে জিততে পারে।
[আরও পড়ুন: মারাকানায় শাপমোচন মেসির, G.O.A.T বিতর্কে চিরতরে ইতি টানলেন ‘ফুটবল ঈশ্বর’]
প্রশ্ন : ইংল্যান্ডের চ্যাম্পিয়ন হওয়া নিয়ে এতটা সিওর কিভাবে হচ্ছেন?
বাইচুং : দেখুন, ইউরো শুরুর আগে আমার ধারণা ছিল, ফ্রান্স জিতবে। দলের গভীরতা, ফুটবলারদের পারফরম্যান্স দিয়েই একটা ধারণা করতে হয়। ফ্রান্স দলটার এবার এতটাই গভীরতা ছিল, মনে হয়েছিল, কোনও প্রবলেমের ম্যাচও অনায়াসে বের করে ফেলবে। এইবার ওদের ড্রেসিংরুমের কোনও গণ্ডগোল থাকলে, সেটা তো আর আমার পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়। শুধু দেখতে পেলাম, ফ্রান্স দলটা কখনই একটা দল হিসেবে খেলতেই পারল না। এবার চোখ ঘোরান ইংল্যান্ডের দিকে। প্রথম একাদশ ছেড়ে দিন। মাঠের বাইরে রিজার্ভবেঞ্চটায় দেখুন, কারা বসে আছে। শুরু থেকে আমার যেটুকু চিন্তা ছিল, তা হল হ্যারি কেনকে নিয়ে। কোনও টুর্নামেন্টে যতক্ষন না প্রথম গোলটা আসে, সব বড় স্ট্রাইকারেরই টেনশনটা থাকে। হ্যারি কেন যখন গোল পেতে শুরু করে দিল, আর ইংল্যান্ডকে নিয়ে টেনশন করার কিছু ছিল না।
প্রশ্ন : ইউরোতে ইটালি দারুণ খেলছে।
বাইচুং : একশোবার। মানচিনির হাত ধরে এ এক নতুন ইটালি। এই যে আমি ১৫ নম্বর জার্সি পড়ে খেলতাম, তার পিছনেও একজন ইটালির ফুটবলারই কারণ। ছোটবেলায়, যখন রবার্তো বাজ্জিওর একটা ম্যাচ দেখেছিলাম, সেদিন ১৫ নম্বর পড়েছিল। ব্যস, ঠিক করলাম, আমারও জার্সি নম্বর হবে ১৫। পরে বাজ্জিও জার্সি বদলালেও আমি আর বদলাইনি। তবে যেটা ফ্যাক্ট, সেটা হল, ইটালিকে এরকম আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে আগে কোনওদিন দেখিনি। না। কিন্তু ডিফেন্সে স্পিনাজ্জোলার না থাকাটা কিন্তু সমস্যায় ফেলবে মানচিনিকে।