সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শান্তাকুমারন শ্রীসন্থ (S Sreesanth)। ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসে যার নাম যতটা না ক্রিকেটীয় সাফল্যের জন্য লেখা হবে, তার চেয়ে অনেক বেশি করে লেখা থাকবে বিতর্কের জন্য। ক্রিকেট কেরিয়ারে টানা প্রায় আট বছর তাঁকে নির্বাসনে থাকতে হয়েছে। আবার ৩৭ বছর বয়সে নির্বাসন কাটিয়ে যিনি ক্রিকেট মাঠে ফেরার সাহস দেখাতে পারেন, সেই এস শ্রীসন্থকে আর দেখা যাবে না খেলার মাঠে। ৩৯ বছর বয়সে এসে সব ধরনের ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন শ্রীসন্থ।
বুধবার টুইটারে অবসরের সিদ্ধান্ত জানিয়ে শ্রীসন্থ আবেগঘন বার্তা পোস্ট করেছেন। টিম ইন্ডিয়ার (Team India) প্রাক্তন পেসার জানিয়েছেন,”আগামী প্রজন্মের ক্রিকেটারদের জন্য আমি আমার প্রথম শ্রেণির কেরিয়ারে ইতি টানার সিন্ধান্ত নিয়েছি। এটা আমার একার নেওয়া সিদ্ধান্ত। জানি এই সিদ্ধান্ত আমার জন্য আনন্দধারা বয়ে আনবে না। কিন্তু সিদ্ধান্ত নেওয়ার একেবারে সঠিক সময় এটাই।” নিজের ক্রিকেট কেরিয়ারের বেটিং বিতর্ক নিয়ে বিদায়বেলায় মুখ খোলেননি শ্রীসন্থ। তবে দেশের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পাওয়াটা যে তাঁর জন্য কতটা গর্বের ছিল সেটা স্পষ্ট করে দিয়েছেন এই ডানহাতি পেসার।
[আরও পড়ুন: বিশ্বক্রিকেটে নিয়ম বদল, বিতর্কিত ‘মানকাডিং’ নিয়ে বড়সড় সিদ্ধান্ত নিল MCC]
২০০৫ সালের অক্টোবর মাসে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে অভিষেক ঘটে শ্রীসন্থের। পেস এবং সুইংয়ের যুগলবন্দিতে একটা সময় জাতীয় দলের নিয়মিত সদস্যও হয়ে উঠেছিলেন তিনি। দেশের হয়ে ২৭টি টেস্ট এবং ৫৩টি ওয়ানডে এবং ১০টি টি-২০ খেলেছেন শ্রীসন্থ। ২০০৭ টি-২০ এবং ২০১১ সালের ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ দুই দলেরই সদস্য ছিলেন এই ডানহাতি পেসার। ২০০৭ সালের টি-২০ বিশ্বকাপ ফাইনালে মিসবা উল হকের ক্যাচ ধরেছিলেন শ্রীসন্থ। তাঁর নেওয়া সেই ক্যাচ পাকিস্তানের স্বপ্ন ভেঙে দেয়। ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে শ্রীসন্থের নেওয়া ক্যাচ অমলিন হয়েই থাকবে।
[আরও পড়ুন: শুধু মানকাডিং নয়, বড়সড় বদল আসছে ক্রিকেটের এই ৭টি নিয়মেও]
শ্রীসন্থের কাছ থেকে হয়তো আরও অনেক কিছু পেতে পারত ভারতীয় ক্রিকেট (Indian Cricket)। কিন্তু অযাচিত বিতর্ক তাঁর আন্তর্জাতিক কেরিয়ারকে অঙ্কুরে বিনাশ করে দেয়। ২০১৩ সালের আইপিএলে স্পট ফিক্সিংয়ের অভিযোগে শ্রীসন্থকে আজীবন ক্রিকেট থেকে নির্বাসিত করে বিসিসিআই। যদিও ২০১৫ সালে দিল্লি আদালত তাঁকে নির্দোষ বলে ঘোষণা করে। এরপর ২০১৮ সালে কেরল হাই কোর্ট বিসিসিআইকে আজীবন নির্বাসনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার নির্দেশ দেয়। পরের বছর একই মামলায় সুপ্রিম কোর্ট শ্রীসন্থকে ‘দোষী’ চিহ্নিত করলেও BCCI-কে শাস্তি কমানোর জন্য নির্দেশ দেয়। আর শীর্ষ আদালতের নির্দেশেই শ্রীসন্থের শাস্তির মেয়াদ কমে সাত বছরে নেমে আসে। নির্বাসন কাটিয়ে ২০২০ সালে শেষ হয় সেই নির্বাসন। দীর্ঘ নির্বাসন কাটিয়ে প্রথম সারির ক্রিকেটে কামব্যাকও করেছিলেন শ্রীসন্থ। গত সপ্তাহেই ৯ বছর পর রনজি ট্রফিতে প্রথম উইকেট পান তিনি। কিন্তু তাঁর এক সপ্তাহ বাদেই ঘোষণা করে দিলেন অবসর।