সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাইশ গজের যুদ্ধে অ্যাশেজ (The Ashes) নাকি ভারত বনাম পাকিস্তান (IND vs PAK)। কোন লড়াই বেশি জনপ্রিয়? কোন ডুয়েল দেখার জন্য অধীর আগ্রহে বসে থাকে ক্রিকেটপ্রেমীরা? সেটা নিয়ে অনেক বছর ধরেই তর্ক চলে আসছে। দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক টানাপোড়েন ও সীমান্ত সন্ত্রাসের জন্য সেই ২০১৩ সালের পর দ্বিপাক্ষিক সিরিজ বন্ধ। মাঝেমধ্যে আইসিসি (ICC) ইভেন্টে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশের সাক্ষাৎ হয়। এমন আবহে বাড়তি উত্তেজনা থাকাই স্বাভাবিক। যদিও গৌতম গম্ভীর (Gautam Gambhir) মনে করেন, বর্তমান যুগের টিম ইন্ডিয়ার (Team India) সঙ্গে পাকিস্তানের (Pakistan) কোনও তুলনাই হয় না। দুটি দলের মধ্যে আকাশ-পাতাল তফাৎ! চলতি বিশ্বকাপে (ICC ODI World Cup 2023) রোহিত শর্মার (Rohit Sharma) দলের কাছে বাবর আজম (Babar Azam) ও তাঁর সতীর্থরা ল্যাজেগোবরে হওয়ার পর, এমন উপলব্ধি করেছেন ভারতের প্রাক্তন ওপেনার।
প্রথমে দুরন্ত বোলিংয়ের সুবাদে ১৯১ রানে অলআউট হয়ে যায় পাকিস্তান। এর পর বাইশ গজে ঝড় তুলে দেন রোহিত। ফলে হেলায় রান চেজ করে সাত উইকেটে ‘মাদার অফ অল ব্যাটল’ জিতে যায় ‘মেন ইন ব্লু’ ব্রিগেড। ধারাভাষ্য দেওয়ার সুবাদে মেগা ম্যাচ খুব কাছ থেকে দেখেছেন গম্ভীর। ভারত-পাক ডুয়েল নিয়ে প্রশ্ন উঠলেই তিনি সটান বলে দেন, “ভারত ও পাকিস্তান ম্যাচ নিয়ে বাড়তি উত্তেজনা থাকে। সবসময় এই কথাটা শুনি। কিন্তু বিশ্বকাপের মঞ্চে এবারও ভারত তো পাকিস্তানকে একেবারে গুঁড়িয়ে দিল। যদি গত কয়েকটি ফলাফলের দিকে চোখ রাখেন, তাহলে দেখবেন ভারতের কাছে পাকিস্তান দাঁড়াতেই পারছে না। এবং সেটা কয়েক বছর ধরে ভারতীয় দল ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম করছে। কারণ দুটি দলের মধ্যে আকাশ-পাতাল তফাৎ! এবং এটা উপমহাদেশীয় ক্রিকেটের জন্য মোটেও ভালো বিজ্ঞাপন নয়।”
[আরও পড়ুন: ভারতের কাছে লজ্জার হারের পর আরও ব্যাকফুটে মিকি আর্থার! কিন্তু কীভাবে?]
মহারণের শুরুটা ভালো করলেও, চাপ বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়েছিল পাকিস্তান। ১৫৪ রানে ২ থেকে ১৯১ রানে অলআউট হয়ে যায় প্রতিবেশী দেশ। মাত্র ৩৬ রানে শেষ ৮ উইকেট হারান মহম্মদ রিজওয়ান (Mohammad Rizwan)-শাদাব খানরা (Shadab Khan)। এর পর শুরু হয়েছিল রোহিতের বিস্ফোরক ইনিংস। তাঁর মারমুখী ইনিংসের কোনও জবাব ছিল না শাহিন শাহ আফ্রিদি (Shaheen Shah Afridi)-হ্যারিস রউফদের (Haris Rauf)সামনে।
সেটা মনে করিয়ে গম্ভীর ফের বলেন, “যদি কোনও অধিনায়ক জশপ্রীত বুমরা ও কুলদীপ যাদবের মতো বোলারকে পায়, তাহলে সে অনায়াসে ম্যাচ জিতে যাবে। ওরা দুজন এমন বোলার যে ২০ ওভারের মধ্যে যে কোনও সময় বিপক্ষের উইকেট তুলে নেবে। পাকিস্তানে এমন বোলার আছে?”
ম্যাচ শুরুর অনেক আগে থেকে বুমরাহ ও শাহিনের মধ্যে তুলনা করছিলেন ক্রিকেট পণ্ডিতরা। সেটা মানতে রাজি নন গম্ভীর। তাঁর প্রতিক্রিয়া, “বুমরাহ ও শাহিনের মধ্যে তুলনা করা একেবারে বোকামি। মনে করে দেখুন বুমরাহ দুপুর ২টোর সময় বল করতে নামলেও সঠিক লাইন-লেন্থ বজায় রেখেছিল। উইকেট নিয়েছিল। ফলে পাকিস্তান চাপে পড়ে যায়। সেখানে শাহিন সন্ধার দিকে বল হাতে নামলেও কিছুই করতে পারেনি। উলটে বেদম মার খেয়েছে। তাই ওদের মধ্যে কোনও তুলনা করা উচিত নয়।”
চলতি কাপ যুদ্ধে অস্ট্রেলিয়া, আফগানিস্তান ও পকিস্তানকে হারিয়ে জয়ের হ্যাটট্রিক করে ফেলেছে ভারতীয় দল। এবার সামনে বাংলাদেশ। বিশ্বকাপে পদ্মাপাড়ের দেশের বিরুদ্ধে শুধু ২০০৭ সালে হারতে হয়েছিল ‘মেন ইন ব্লু’ ব্রিগেডকে। এছাড়া প্রতিবার ভারত দাপট দেখিয়েছে। এবারও কি বিরাট কোহলি-শুভমান গিলরা হাসিমুখে মাঠ ছাড়বেন? সেটা জানার জন্য ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত অপেক্ষা করতেই হবে।