ভারত, প্রথম ইনিংস: ২৪৫ (কেএল রাহুল ১০১, বিরাট ৩৮, রাবাডা ৫/৫৯, নান্দ্রে বার্গার ৩/৫০)
দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম ইনিংস: ৪০৮ (ডিন এলগার ১৮৫, মার্কো জ্যানসেন ৮৪*, ডেভিড বেডিংহাম ৫৬, বুমরাহ ৪/৬৯, সিরাজ ২/৯১)
ভারত, দ্বিতীয় ইনিংস: ১৩১ (বিরাট ৭৬, বার্গার ৪/৩৩, জ্যানসেন ৩/৩৬, রাবাডা ২/৩২)
দক্ষিণ আফ্রিকা ইনিংস ও ৩২ রানে জয়ী
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আইসিসি টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ে এক নম্বর দল। তবে শীর্ষে থাকা টিম ইন্ডিয়া (Team India), এবারও দক্ষিণ আফ্রিকার (South Africa) মাটিতে ফের একবার ব্যর্থ হল। বিদেশের মাটিতে ভারতের পুরনো রোগ ব্যাটিং ব্যর্থতা। এবারও সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটল। মাত্র ৩ ঘন্টায় ১৩১ রানে শেষ হয়ে গেল টিম ইন্ডিয়ার দ্বিতীয় ইনিংস। নান্দ্রে বার্গার (Nandre Burger), মার্কো জ্যানসেন (Marco Jansen) ও কাগিসো রাবাডার (Kagiso Rabada) পেস ও সুইংয়ের কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ করল ভারতের তারকাখচিত ব্যাটিং লাইনাপ। একা লড়লেন বিরাট কোহলি (Virat Kohli)। তবে ৮২ বলে তাঁর ৭৬ রানের ইনিংস ম্যাচ জেতা তো অনেক দূরের কথা, ড্র করার জন্যও যথেষ্ট ছিল না।
বিকেল ৫:২৯ মিনিট থেকে সন্ধ্যে ৮:৩৩ মিনিট। মাত্র ৩ ঘন্টায় সেঞ্চুরিয়ানের বাইশ গজে ভারতীয় ব্যাটিংয়ের সলিলসমাধি ঘটে গেল। ফের একবার একরাশ লজ্জা ‘উপহার’ দিয়ে রামধনুর দেশে লজ্জার পরাজয় হজম করল টিম ইন্ডিয়া। অ্যালান ডোনাল্ড, ফ্যানি ডিভিলিয়ার্স থেকে শন পোলক, মাখায়া এনটিনি। কিংবা বর্তমান যুগের বার্গার, জ্যানসেন ও রাবাডা। প্রোটিয়া পেসারদের দাপটে আগেও ভারতের ব্যাটিং নতজানু হয়েছিল। এবার সেটাই ঘটল। বছরের পর বছর কেটে গেলেও, ভারতীয় ব্যাটার পুরনো রোগ আর সারিয়ে তোলা গেল না।
প্রথম ইনিংসে তাও কেএল রাহুল (KL Rahul) ১০১ রান করেছিলেন। তাঁর শতরানের জন্য ভারতের মান কিছুটা বেঁচেছিল। তবে এবার একা লড়লেন বিরাট। যা ম্যাচ জেতা তো অনেক দূরের কথা, ড্র করার জন্যও যথেষ্ট ছিল না। তাই যা ফলাফল হওয়ার সেটাই হল। তবে প্রথম টেস্ট যে পুরো তিন দিনের খেলা শেষ হওয়ার আগেই যে ভারতের দ্বিতীয় ইনিংস শেষ হয়ে যাবে সেটা হয়তো অতি বড় দক্ষিণ আফ্রিকার সমর্থকও ভাবতে পারেননি। অভিষেক টেস্টের দুই ইনিংসে (৩/৫০, বার্গার ৪/৩৩) নিয়ে ভারতের ব্যাটিংকে একাই শেষ করে দিলেন নান্দ্রে বার্গার।
[আরও পড়ুন: ফের রাবাডার বিরুদ্ধে পেসে বিদ্ধ রোহিত! বিদেশে টিম ইন্ডিয়ার অধিনায়কের লজ্জার পরিসংখ্যান]
এদিকে ডিন এলগারের (Dean Elgar) ১৮৫ ও মার্কো জ্যানসেনের (Marco Jansen) ৮৪ রানের সৌজন্যে দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম ইনিংসে ৪০৮ রান তুলেছিল। ফলে প্রোটিয়াদের লিড ছিল ১৬৩ রানের। প্রথম ইনিংসে ভারত ২৪৫ রানে অলআউট হয়ে যায়। তবে কেএল রাহুল ১০১ রান না করলে টিম ইন্ডিয়ার ইনিংস অনেক আগেই থেমে যেত। এখন দ্বিতীয় ইনিংসে ভারত কেমন জবাব দেয় সেটাই দেখার।
ম্যাচে বল হাতে কামব্যাক করতে হলে তৃতীয় দিনের প্রথম সেশনে বিপক্ষের ব্যাটারদের তাড়াতাড়ি আউট করতে হত। কিন্তু সেটা হল না। বরং বাইশ গজে মার্কো জ্যানসেনকে নিয়ে দাপট দেখালেন ডিন এলগার। তাঁদের ব্যাটে প্রথম ইনিংসে বড় লিড পায় দক্ষিণ আফ্রিকা।
দ্বিতীয় দিন শতরানের পরে যেখানে শেষ করেছিলেন সেখান থেকেই তৃতীয় দিন খেলা শুরু করলেন এলগার। তাঁকে সঙ্গ দিলেন জ্যানসেন। জশপ্রীত বুমরাহ ও মহম্মদ সিরাজের প্রথম স্পেল তাঁরা সাবধানে খেললেন। প্রসিদ্ধ কৃষ্ণা ও শার্দূল ঠাকুর বল করতে আসার পর বড় শট মারতে শুরু করলেন তাঁরা।
প্রসিদ্ধ ও শার্দূল নিয়ন্ত্রিত বল করতে পারছিলেন না। কোনও ভাবেই ব্যাটারদের সমস্যায় ফেলতে পারছিলেন না তাঁরা। দ্রুত রান উঠছিল। এমনকি রবিচন্দ্রন অশ্বিনও ধাক্কা দিতে পারেননি দক্ষিণ আফ্রিকাকে। তার মাঝেই এক-দু’টি সুযোগ তৈরি হলেও উইকেট আসেনি।
এরইমধ্যে ১৮৫ রানে ফিরে যান বাঁহাতি ওপেনার এলগার। অর্ধশতরান করেন জ্যানসেনও। কিন্তু শার্দূলের লেগ সাইডের বলে গ্লাভস ছুঁয়ে কেএল রাহুলের গ্লাভসে বল জমা হতেই আউট হন এলগার।
জেরাল্ড কোয়েৎজি ব্যাট করতে নেমে কয়েকটি বড় শট খেললেও অশ্বিনের বলে আউট হন। শেষ পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম ৪০৮ রানে শেষ হয়ে যায়। ফলে সেঞ্চুরিয়ান টেস্টে ১৬৩ রানে এগিয়ে রয়েছে টেম্বা বাভুমার দল। যদিও বাঁ পায়ে হ্যামস্ট্রিংয়ে চোটের জন্য ব্যাট করতে পারেননি বাভুমা। প্রোটিয়া অধিনায়ক ব্যাট করলে তাঁর দল আরও বড় রানের লিড নিতেই পারত। তবে ভারত ব্যাট করতে নামার পর বোঝা গেল ১৬৩ রানের লিডই ভারতকে প্রথম টেস্টে ল্যাজেগোবরে হারিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল।