রিয়াল মাদ্রিদ: ৩ (বেঞ্জেমা, বেল-২)
লিভারপুল: ১ (মানে)
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ম্যাচের বয়স তখন ২৯ মিনিট। গত তিন সপ্তাহ ধরে বিশ্বজুড়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ নিয়ে উত্তেজনার যে পারদ চড়েছিল, তা সেই মুহূর্তেই অর্ধেক হয়ে গেল। ফাইনালের মতো গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে যে এত তাড়াতাড়ি এভাবে মাঠ ছাড়তে হবে মহম্মদ সালাহকে, কে ভেবেছিল। সের্জিও ব়্যামোসের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে মাটিতে লুকিয়ে পড়তেই কাঁদতে শুরু করে দেন লিভারপুল স্ট্রাইকার। বুঝে গিয়েছিলেন, এবারের মতো ইউরোপ সেরার লড়াইয়ে তাঁর ভূমিকা শেষ। খেলার নিয়ম মেনেই তাঁকে জায়গা ছেড়ে দিতে হল। আর সেই ফাঁকেই আরও একবার ইউরোপ সেরার শিরোপা মাথায় তুলে নিলেন জিনেদিন জিদান।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ তুমি কার? মুচকি হাসে রিয়াল মাদ্রিদ। সে তো ওই ক্লাবেরই আপনজনে পরিণত হয়েছে। চেনা ক্লাবে যেতে ওরও মন্দ লাগে না হয়তো। অথবা মন্দ লাগলেও যাওয়ার উপায় নেই। রিয়ালই তাকে রানি করে রাখার পণ করেছে যে। সেই মতোই টানা তৃতীয়বার রানিকে সসম্মানে বাড়ি নিয়ে তুললেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোরা। আর সেই সঙ্গেই ফুটবল বিশ্বে রচিত হল নয়া ইতিহাস। এবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ খেতাব ‘লাকি থার্টিন’ হয়ে রইল রিয়াল মাদ্রিদের কাছে।
[‘রশিদকে আমরা ছাড়ব না’, কেন নরেন্দ্র মোদিকে এমন বার্তা আফগান প্রেসিডেন্টের?]
এদিনের ম্যাচকে সহজভাবে ব্যাখ্যা করতে গেলে বলতে হয়, প্রথমার্ধ চোটাঘাতে জর্জরিত। আর দ্বিতীয়ার্ধ গোলে ভরপুর। বাঁ-কাঁধে চোট নিয়ে বেরিয়ে গেলেন সালাহ। তার মিনিট পাঁচেক পরই এক হাল উলটো দিকের দলের। চোট পেয়ে মাঠ ছাড়তে হল ডিফেন্সের অন্যতম স্তম্ভ কার্বাহালকে। তাঁর চোখ তখন জলে ভিজেছে। তার উপর প্রথমার্ধে রিয়ালের গোলটি অফসাইডের কারণ বাতিলও হয়ে যায়। কিন্তু এটা তো ক্লাইম্যাক্সের লড়াই। এত তাড়াতাড়ি তো হার মানলে চলবে না। তখন যে বাকি গোটা দ্বিতীয়ার্ধটা। যেখানে ম্যাচের ভাগ্য অপেক্ষা করেছিল। তিন-তিনটে গোল করে দলকে প্রত্যাশিত জয় এনে দিলেন দুই স্ট্রাইকার বেঞ্জেমা ও বেল। সত্যি কথা বলতে কী, এদিন তাঁদের পাশে অনেকটাই ফিকে দেখাচ্ছিল সিআর সেভেনকে। সালাহর অনুপস্থিতিতেও লড়াই চালিয়ে গিয়েছিলেন মানে। প্রথমার্ধে তাঁর একটি নিশ্চিত গোল আটকে দেয় নাভাসের হাত। বেঞ্জেমার গোলে পিছিয়ে গেলে তিনিই দলকে সমতায় ফিরিয়েছিলেন। কিন্তু শেষরক্ষা হল না।
তবে নিঃসন্দেহে রিয়ালের এই সাফল্যের নেপথ্য কারিগর সাইডলাইনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটিই। তিনি জিনেদিন জিদান। ইসকোকে তুলে বেলকে নামিয়েই বাজিমাত করলেন তিনি। আর বেল আসতেই নতুন করে ফাইনালের আঁচ অনুভূত হল কিয়েভে। মার্সেলোর লং পাশ থেকে বাইসাইকেল কিকে গোল করে নিজের প্রথম গোলটা ঐতিহাসিক করে রাখলেন ওয়েলশ তারকা। লং শটে দ্বিতীয় গোলটাও ছিল নিখুঁত। আর তার আগে তো দ্য রেডসের গোলকিপার কারিয়াসের চূড়ান্ত অপদার্থতায় বল জালে জড়ান বেঞ্জেমা। এদিন যদি লিভারপুলের হারের একটি কারণ হয় সালাহর চোট হয়, তবে দ্বিতীয়টি অবশ্যই গোলকিপার কারিয়াস। ম্যাচ শেষে তাই সবার কাছে হাত জোড় করে ক্ষমা চেয়ে নিলেন তিনি। কিন্তু ততক্ষণে তো যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে। ইতিহাসের পাতায় নিজেদের নাম স্বর্ণাক্ষণে লিখে ফেলেছেন রোনাল্ডোরা। যা বিশ্বে কেউ কখনও পারেনি, সেই অসাধ্যসাধন করেছে রিয়াল। লা লিগা হাতছাড়া হওয়ার জ্বালা আরও একবার ইউরোপ সেরা হয়ে মিটিয়ে নিল তারা। আর এর সঙ্গেই লিওনেল মেসি কি আরও একবার হতাশায় ডুবলেন?
[‘ফিক্সড’ ছিল ভারত-শ্রীলঙ্কা গল টেস্ট, সংবাদমাধ্যমের বিস্ফোরক দাবিতে উত্তাল দুনিয়া]
The post ইতিহাসে রিয়াল, লিভারপুলকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের হ্যাটট্রিক রোনাল্ডোদের appeared first on Sangbad Pratidin.