সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আহমেদাবাদে সাড়ে তিন বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটেছে। ইডেন গার্ডেন্সে অনুষ্ঠিত দিন-রাতের টেস্ট ম্যাচে সেঞ্চুরি পাওয়ার পরে আহমেদাবাদে শতরান পেলেন বিরাট কোহলি (Virat Kohli)। সব মিলিয়ে ৭৫টি শতরান হয়ে গেল তাঁর। নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার চতুর্থ টেস্ট ম্যাচ ড্র হয়। তার ফলে বর্ডার-গাভাসকর সিরিজ জিতে নেয় ভারতীয় দল। খেলার শেষে ভারতীয় দলের কোচ রাহুল দ্রাবিড় (Rahul Dravid) ও বিরাট কোহলি বিসিসিআই টিভি-র হয়ে কথাবার্তা বলেন।
ভারতীয় দলের কোচ রাহুল দ্রাবিড় বিরাটের উদ্দেশে বলেন, ”আমি জানি সেঞ্চুরি করা তুমি অভ্যাসে পরিণত করে ফেলেছো। কোভিড পরিস্থিতির জন্য বেশি টেস্ট ম্যাচ হাতে পাওনি। দীর্ঘদিন ধরে টেস্ট ক্রিকেটে সেঞ্চুরি না পাওয়া কীভাবে মেনে নিয়েছিলে? আমি জানি সংখ্যা নিয়ে আমরা বিশেষ ভাবে সচেতন। কেপ টাউনে ৭০ রানের ইনিংসটাও দারুণ ছিল। কিন্তু সেঞ্চুরি না পাওয়া কি মনের ভিতরে ছাপ ফেলেছিল? মনের ভিতরে নিশ্চয় সব সময়ে কাজ করছিল তা?”
[আরও পড়ুন: ‘যোগ্য দল হিসেবেই ফাইনালে ভারত, নিউজিল্যান্ডের কাছে ঋণী থাকার দরকার নেই’, বলছেন গাভাসকর]
অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সদ্যসমাপ্ত টেস্ট সিরিজের প্রথম তিনটি টেস্ট ম্যাচে কোহলি সেভাবে রান পাননি। চতুর্থ টেস্টে এসে শতরান পান কোহলি। সেঞ্চুরির খরা কাটান তিনি। রাহুল দ্রাবিড়ের সঙ্গে আলাপচারিতায় কোহলি জানান, তিনি ৪০ বা ৫০ রান নিয়ে খুশি নন। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ১৮৬ রানের পরে কোহলি বলছেন, ”সত্যি কথা হল, ব্যর্থ হওয়ার জন্য আমার নিজের মনের ভিতরেই জটিলতা বাড়ছিল। তিন সংখ্যার ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছনোর জন্য অস্থিরতা একজন ব্যাটারকে পরিপূর্ণতা দিতে পারে। আমার ভিতরে কিছুটা হলেও অস্থিরতা বাড়ছিল। তবে উলটো দিকও আছে। ৪০-৪৫ রান করে আমি খুশি হই না। দলের জন্য পারফর্ম করতে আমি গর্ববোধ করি। আমি যখন ৪০ রানে ব্যাট করি, তখনও জানি আমি ১৫০ রান করতে পারি। আমাকে কুঁড়ে কুঁড়ে খায়। দলের জন্য বড় রান কেন পাচ্ছি না আমি? দলের যখন প্রয়োজন, সেই সময়ে কঠিন পরিস্থিতিতে সেরাটা দিতে পছন্দ করি। প্রয়োজনে দলের কাজে আসতে পারছিলাম না। সেটাই আমাকে ভাবাচ্ছিল।”
সাড়ে তিন বছর পরে শতরান পাওয়ায় টেস্টে কোহলির সেঞ্চুরি সংখ্যা হল ২৮। সব মিলিয়ে ৭৫টি আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরি। ঘরের মাঠে ১৪টি শতরান করলেন কোহলি। যার ফলে বীরেন্দ্র শেহওয়াগ, দিলীপ ভেঙ্গসরকার ও মহম্মদ আজহারউদ্দিনকে ছাপিয়ে গেলেন।
কোহলি অবশ্য মাইলস্টোন নিয়ে ভাবিত নন। তিনি বলছেন, ”অনেক মানুষ আমার কাছে জানতে চেয়েছেন কীভাবে সেঞ্চুরির পর সেঞ্চুরি করতে পারছি। তবে দীর্ঘসময় সেঞ্চুরি না পাওয়ায় কিছুটা হলেও চাপ বাড়ছিল। সবার প্রশ্ন কবে পাব সেঞ্চুরি। হোটেল রুম থেকে বেরোলে, বাইরের লোকের সামনে পড়লে, লিফটে থাকা মানুষ বা বাস ড্রাইভারের মুখোমুখি হলেই শুনতে হত, আমরা সেঞ্চুরি চাই। ফলে আমার মনের ভিতরে সব সময়ে চলতো কেন সেঞ্চুরি পাচ্ছি না। তবে দীর্ঘদিন ধরে খেলার সুবাদে এখন অনুভব করি এই ধরনের চ্যালেঞ্জ টপকে যাওয়ারও একটা সৌন্দর্য রয়েছে।”