সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চিন নয়, বিপদে পড়ে এবার ভারতের দ্বারস্থ হল শ্রীলঙ্কা। অর্থের জোগান নেই। জ্বালানি তেল কেনার জন্য তাই এবার ভারতের কাছেই সাহায্য চাইল দ্বীপরাষ্ট্র। গুরুতর বৈদেশিক মুদ্রা সঙ্কটের কারণেই ভারতের কাছে ৫০ কোটি ডলার অর্থসাহায্য চেয়েছে তাঁরা। রবিবার এমনই খবর প্রকাশিত হয়েছে একাধিক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে।
সেদেশের পেট্রলিয়ামমন্ত্রী উদায়া গাম্মানপিলা কয়েকদিন আগেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন, আগামী জানুয়ারিতে শ্রীলঙ্কায় মজুত জ্বালানি শেষ হয়ে যেতে পারে। তারপরই তড়িঘড়ি তেল কিনতে ভারতের কাছে ঋণ চেয়েছে কলম্বো। সেদেশের রাষ্ট্রীয় জ্বালানি কোম্পানি সিলন পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (সিপিসি)-এর চেয়ারম্যান সুমিথ উইজেসিঙ্গে বলেন, ভারত-শ্রীলঙ্কা অর্থনৈতিক পার্টনারশিপের আওতায় আমরা ৫০ কোটি ডলার ঋণের জন্য ভারতীয় হাই কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। ওই টাকা দেশের জন্য পেট্রল-ডিজেল কিনতে ব্যবহৃত হবে। খুব শীঘ্রই দুই দেশ এই সংক্রান্ত চুক্তিতে সই করবে বলেই খবর।
[আরও পড়ুন: হাইতি থেকে অপহৃত ১৭ মার্কিন ধর্মপ্রচারক, খোঁজ নেই তাঁদের পরিবারেরও]
বলে রাখা ভাল, শ্রীলঙ্কায় (Sri Lanka) ধীরে ধীরে প্রভাব বিস্তার করছে বেজিং। ইতিমধ্যে সেদেশের হামবানটোটা বন্দর ৯৯ বছরের জন্য লিজ নিয়েছে চিন। আর এবার আরও একটি বন্দর তাদের হাতে আসতে পারে বলে খবর। আর এই খবরেই ‘সিঁদুরে মেঘ’ দেখছে ভারতীয় নৌসেনা। এই বিষয়টি যে নয়াদিল্লির কাছে খুবই চিন্তার এবং গোটা পরিস্থিতির দিকে যে নজর রাখা হচ্ছে তা স্পষ্ট। ডোকলামের পর গালওয়ান উপত্যকায় ভারত ও চিনা বাহিনীর সংঘর্ষের পর থেকেই দুই পড়শি দেশের সম্পর্ক তলানিতে। সাউথ ব্লকের উদ্বেগ বাড়িয়ে বিগত দিনে ভারত মহাসাগরে লাগাতার আনাগোনা বাড়ছে চিনা রণতরীর। শ্রীলঙ্কার বন্দরে নোঙর করেছে লালফৌজের সাবমেরিন ও যুদ্ধজাহাজ। ফলে কৌশলগত কারণেই এবার শ্রীলঙ্কাকে আরও কাছে পেতে চাইছে নয়াদিল্লি।
উল্লেখ্য, পরিকাঠামো উন্নয়নের নামে শ্রীলঙ্কাকে প্রচুর ঋণ দিয়ে ফাঁদে ফেলেছে চিন (China)। দ্বীপরাষ্ট্রটির কাছ থেকে হামবানটোটা বন্দর হাতিয়ে নিয়েছে কমিউনিস্ট দেশটি। উদ্দেশ্য ভারত মহাসাগরে ভারতকে ঘিরে ফেলা। এর আগে পাকিস্তানের গদর বন্দরে লালফৌজের রণতরী মোতায়েন করেছে বেজিং। তাই বলয় পূর্ণ করে ভারতকে বেকায়দায় ফেলার জন্য প্রস্তুতি সেরে ফেলেছে লালচিন। কিন্তু বেজিংয়ের চক্রান্ত বুঝতে পেরে পালটা চাল দিয়েছে দিল্লিও। সম্প্রতি চিনকে নজরে রেখে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও মজবুত করতে শ্রীলঙ্কার (Sri Lanka) প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষের সঙ্গে সাক্ষাতও করেছিলেন ভারতের বিদেশ সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা।