স্টাফ রিপোর্টার: দৃষ্টান্তমূলক সিদ্ধান্ত। মোহনবাগানের দুই শীর্ষকর্তা সৃঞ্জয় বোস ও দেবাশিস দত্ত পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার করলেন না। এমনকী ক্লাব নির্বাচন নিয়ে ওঠা জিগিরকে সরিয়ে রাখলেন দূরে। বুঝিয়ে দিলেন পরের মরশুমের দলগঠনের কাজে হাতে হাত লাগিয়ে না নেমে পড়লে বাগানের সর্বনাশ হবে। তাই দুই ‘বিদ্রোহী কর্তা’ই শনিবারের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় পাঁচজনের বিশেষ কমিটি গড়ার প্রস্তাব দিলেন। জানিয়ে দিলেন, সেই কমিটিতে যদি তাঁদের রাখা হয় তাহলে তাঁরা রাজি। যে প্রস্তাবকে মাথায় রেখে ক্লাব সচিব অঞ্জন মিত্র তৎক্ষণাৎ গড়ে ফেলেন পাঁচজনের কমিটি। আপাতত যে কমিটি দলগঠনের কাজে নেমে পড়বে।
বাগানের সভা নিয়ে শনিসন্ধেয় ময়দান ছিল উত্তাল। সভা শুরুর অনেক আগে থেকেই ক্লাব তাঁবুতে আগ্রহী সভ্য-সমর্থকরা ভিড় জমাতে শুরু করেন। গেট পাহারায় পুলিশ। সচিব পৌনে ছ’টায় সভা শুরুর সময় দেখা যায় সহ-সচিব সৃঞ্জয় বোস ও অর্থসচিব দেবাশিস দত্ত লনে বসে। তাঁদের ঘিরে অজস্র মানুষের কৌতূহল। তাহলে কি দুই শীর্ষকর্তা সভায় যাবেন না? সভার শুরুতেই আগের সভার মিনিটস পাস হয়ে যায়। তারপরেই উপস্থিত কার্যনির্বাহী কমিটি সদস্যরা তারস্বরে সচিবকে উদ্দেশ্য করে বলতে থাকেন, ‘সৃঞ্জয়-দেবাশিসকে সভায় ডাকতে হবে। নাহলে সভার মানে হয় না।’ সচিব দুই শীর্ষকর্তাকে ডাকতে পাঠান ফুটবল সচিব সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায় ও মাঠ সচিব স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সৃঞ্জয়-দেবাশিস সভায় ঢুকেই অঞ্জনের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ তুলতে থাকেন।
[পথ দুর্ঘটনার কবলে পড়লেন শামি, মাথায় গুরুতর চোট]
প্রধান অভিযোগ, বিগত চার বছরে কোনও বোর্ড মিটিং ডাকেননি সচিব। ক্লাবকে পেশাদারিত্বের দিকে নিয়ে যাওয়ার টার্গেট নেই। স্পনসর কীভাবে আসবে তার উদ্যোগ দেখানো হচ্ছে না, ইত্যাদি। সচিব সব শোনার ফাঁকে ফাঁকে বলতে থাকেন, যা বলা হচ্ছে তা ঠিক নয়। এরপর উঠে আসে রিপ্লে প্রসঙ্গ। কিছুদিন আগে সচিব মন্তব্য করেছিলেন, ‘রিপ্লে’ থেকে কত টাকা ক্লাব পায় তা জানা নেই তাঁর। সেই প্রসঙ্গ তুলে ধরে কার্যনির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য শৌমিক বোস লিখিত আকারে সব কিছু তুলে ধরে বলেন, “আমরা কত টাকা রিপ্লে থেকে দিয়েছি আপনার চেয়ে আর ভাল কে জানে? গত তিন বছরে ২৬ কোটি টাকা যে দিয়েছি তা আপনি ভাল মতো জানেন।’’ একই কথার রেশ ধরে দেবাশিস দত্ত বলেন, “অঞ্জনদা এই ব্যাপারটা আপনার চেয়ে ভাল কে জানবে? আপনি এই সংস্থা অডিট করেন।” তখন সচিব আর কথা বাড়ানোর চেষ্টা করেননি। এবার ফুটবল সচিব জানিয়ে দেন, সৃঞ্জয়-দেবাশিস দলগঠনের কাজে না থাকলে তিনি দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করবেন। এরপর আলাদা করে প্রায় ৪০ মিনিট নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেন অঞ্জন, সৃঞ্জয় ও দেবাশিস। যার শেষে সৃঞ্জয়-দেবাশিস জানিয়ে দেন, তাঁরা পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার করছেন না। তবে দলগঠনের কাজে যদি তাঁদের প্রয়োজন মনে করা হয় তা হলে থাকতে রাজি।
পরে অঞ্জন মিত্র সাংবাদিকদের সামনে স্বীকার করে নেন, ক্লাব নির্বাচনের চেয়ে তাঁদের কাছে জরুরি হল পরের মরশুমের দলগঠন। সেই কাজের জন্য পাঁচজনের কমিটিতে সৃঞ্জয় বোস ও দেবাশিস দত্তর সঙ্গে রাখা হয়েছে উত্তম সাহা, সঞ্জয় ঘোষ ও ফুটবল সচিব সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে। কিন্তু প্রশ্ন হল, শক্তিশালী দলগঠনের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ আসবে কোথা থেকে? উত্তর রয়ে গেল অন্ধকারে। সচিব দাবি করলেন, প্রাক্তন সভাপতি টুটু বোস অর্থ দেবেন। কিন্তু দেবেন কি? যেমন জানা যাচ্ছে না, ক্লাবে নির্বাচন হবে কবে? বর্তমান সচিব নির্বাচনে দাঁড়াবেন কিনা? সব কিছু হয়তো সময়ই বলবে।
[বিপাকে সৌম্যজিৎ, আরও দুই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ‘ফাঁস’ করলেন তরুণী]
The post পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার না করেও দলগঠনের কাজে ক্লাবের পাশে সৃঞ্জয়-দেবাশিস appeared first on Sangbad Pratidin.