স্টাফ রিপোর্টার: লোকসভা ভোটে বিপর্যয়ের পর আজ, শনিবার প্রথম বৈঠকে বসছে রাজ্য বিজেপির কোর কমিটি। চব্বিশের ভোটে বাংলায় ব্যর্থতার পর দায় নিয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে দোষারোপ, পালটা দোষারোপ চলছে। বঙ্গ বিজেপির মধ্যে ক্ষোভ, বিক্ষোভও প্রকাশ্যে। কোন্দল ফের বেআব্রু হয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতেই ভোটের ফলাফল নিয়ে আজ কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের উপস্থিতিতে পর্যালোচনা বৈঠক তপ্ত হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
বৈঠকে রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত দলের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সুনীল বনশল, মঙ্গল পাণ্ডে, অমিত মালব্যরা যেমন থাকবেন, তেমনই রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার(Sukanta Majumder), বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) ও প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও (Dilip Ghosh) উপস্থিত থাকছেন বৈঠকে।
ভোট বিপর্যয়ের পর রাজ্য বিজেপির একাংশ শুভেন্দুর দিকে আঙুল তুলেছে। নাম না করলেও দিলীপের নিশানাতেও রয়েছেন শুভেন্দু। পালটা শুভেন্দুও সংবাদ মাধ্যমে বলেছেন, দলের ফল খারাপ হলে তাঁর ঘাড়ে চাপানো হচ্ছে। সংগঠনে তিনি কখনও মাথা গলাননি।
[আরও পড়ুন: মহেশতলায় সিলিন্ডার বিস্ফোরণে উড়ল বাড়ির একাংশ, জখম ৫]
সেই পরিস্থিতির মধ্যেই আজকের বৈঠকে মুখোমুখি হতে চলেছেন শুভেন্দু ও দিলীপ। দিলীপ তো বৈঠকে থাকছেনই, কিন্তু শুভেন্দু কি থাকবেন? তা নিয়ে একটা জল্পনা রয়েছে। কারণ, এর আগে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে শুভেন্দুর গরহাজির থাকার উদাহরণ রয়েছে। তবে যেহেতু দুজনই কোর কমিটির সদস্য, ফলে তাঁদের থাকারই কথা। বৈঠকে দিলীপ ক্ষোভ উগরে দেন কি না সেদিকেও নজর রয়েছে রাজনৈতিক মহলের।
আজকের বৈঠকে অবশ্য চারটি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে (Bye Election) সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম নিয়েও আলোচনা হবে। একাধিক নাম দিল্লিতে (Delhi) পাঠানো হবে। কারণ বিধানসভায় প্রার্থীদের নাম কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফেই ঘোষণা করা হয়ে থাকে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, "উপনির্বাচনে প্রার্থী ঠিক করা নিয়ে বৈঠক হবে। সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম আলোচনা করে দিল্লিতে পাঠানো হবে চূড়ান্ত সিলমোহরের জন্য।" সূত্রের খবর, সোম কিংবা মঙ্গলবার উপনির্বাচনে চারটি আসনে প্রার্থীদের নাম দিল্লির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হতে পারে।
পাশাপাশি, বাংলায় দলের বিপর্যয়ের জন্য কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে সারা দেশের ফলাফলের যুক্তি খাড়া করতে পারেন বঙ্গ নেতারা। উনিশের লোকসভা ভোটে ৪০.৬০ শতাংশ ভোট পেয়েছিল বিজেপি। এবার তা কমে হয়েছে ৩৮.৭৩ শতাংশ। কিন্তু একুশের বিধানসভা ভোটের তুলনায় আবার এবার চব্বিশের লোকসভায় কিছুটা ভোট বেড়েছে বিজেপির। গত বিধানসভার নিরিখে সামান্য ভোট বৃদ্ধিকেই সাফল্য বলে তুলে ধরার যুক্তি খাড়া করে দিল্লিকে রিপোর্ট দেবেন রাজ্যনেতারা। বিধানসভাওয়ারি ফলও একুশের ভোটের থেকে এবার ভাল হয়েছে বলে দাবি করছেন রাজ্যনেতারা।
[আরও পড়ুন: তারুণ্য আর গতিতে অপ্রতিরোধ্য জার্মানি, স্কটল্যান্ডকে উড়িয়ে ইউরো শুরু মুসিয়ালাদের]
এদিকে বিধানসভায় বিজেপি (BJP) পরিষদীয় দলের পরবর্তী মুখ্যসচেতক কে হবেন, তা ঠিক করতে আগামী মঙ্গলবার নিউটাউনের একটি হোটেলে বৈঠকে বসবে বিজেপি। লোকসভা ভোটে জয়ী হওয়ায় মুখ্যসচেতক পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন মনোজ টিগ্গা। মনোজের উত্তরসূরী বেছে নিতেই ওইদিন বৈঠকে বসবেন বিজেপির রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতারা। সূত্রের খবর, উত্তরবঙ্গের কোনও এক বিধায়ককে মুখ্যসচেতক করা হতে পারে। মুখ্যসচেতকের দাবিদার হিসাবে রয়েছেন শঙ্কর ঘোষ, দীপক বর্মণ, মালতী রাভা রায়, অগ্নিমিত্রা পাল, শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরি। তবে কে হবেন মুখ্যসচেতক তাতে চূড়ান্ত সিলমোহর দেবে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।