সুকুমার সরকার, ঢাকা: সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল দাবিতে উত্তাল ঢাকা। সরকারের বিরুদ্ধে পথে নেমেছেন শিক্ষার্থীরা। সোমবার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলিগের সদস্যদের ঝামেলা বাঁধে। যা রণক্ষেত্রে রূপ নেয়। দুই দলের মধ্যে সংঘর্ষে আহত শতাধিক। সকলের চিকিৎসা চলছে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
এদিন বেলা তিনটের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হলের সামনে আন্দোলনকারী ছাত্রদের সঙ্গে ছাত্রলিগের প্রথমে সংঘর্ষ বাঁধে। এর পর সেই ঝামেলা সারা ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়ে। আহত শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেক ছাত্রীও রয়েছেন। আহতদের প্রায় সবাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়-সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের সামনে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক রাফিকুজ্জামান ফরিদ সাংবাদিকদের বলেন, কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলিগের হামলায় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য এসেছেন। এর বাইরে অন্যান্য হাসপাতালেও জখম অনেকেই চিকিৎসার জন্য গিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে বেশির ভাগই ইটপাটকেল ও লাঠির আঘাতে আহত হয়েছেন। অভিযোগ, আন্দোলনকারীদের উপর লাঠিসোঁটা ও দা দিয়ে হামলা চালায় ছাত্রলিগ কর্মীরা।
[আরও পড়ুন: চিন নয়, তিস্তা প্রকল্পে ভারতকেই চান হাসিনা, কূটনৈতিক জয় দিল্লির?]
সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে ১ জুলাই থেকে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা। তাঁদের এই কর্মসূচিতে সেদিন গোটা দেশ থেকে রাজধানী ঢাকা অনেকটা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। আন্দোলনকারীদের দাবি, কোটা বিরোধী ইস্যু নিয়ে সংসদে আইন পাস না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। গত রবিবার বিক্ষোভ দেখানোর সময় পুলিশের সঙ্গেও ঝামেলা বাধে ছাত্রছাত্রীদের। গাড়িতে ভাঙচুর, হামলা এবং মারধরের ঘটনায় শাহবাগ থানায় মামলা করে পুলিশ। অভিযুক্ত হিসেবে অজ্ঞাতপরিচয় অনেক শিক্ষার্থীর নাম উল্লেখ করা হয়।
বলে রাখা ভালো, গত ১০ জুলাই প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের নোটিস অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায়ের ওপর চার সপ্তাহের স্থিতাবস্থা জারি করেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে এই সময়ের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষ ও শিক্ষার্থীদের হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করতে বলে আদালত। এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য ৭ আগস্ট দিন ধার্য করা হয়েছে।