রাজ কুমার, আলিপুরদুয়ার: রেলের ধাক্কায় প্রায়ই শিরোনামে উঠে আসছে হাতিমৃত্যুর ঘটনা। এমন দুর্ঘটনা ঠেকাতে অভিনব পদ্ধতি আবিষ্কার করলেন জলপাইগুড়ি সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের মেকানিক্যাল বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র দীপাঞ্জন রায়। যাঁকে নিয়ে গর্বিত গোটা রাজ্য।
আলিপুরদুয়ারের শহর লাগোয়া ঘাগরার হরিতকীতলা এলাকার বাসিন্দা দীপাঞ্জন ‘থার্মাল ইনফ্রারেড ভিশন অ্যান্ড ডায়নামিক ইমেজ প্রসেসিং’ পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন। এই পদ্ধতিতে রেললাইন ও তার সংলগ্ন এলাকায় হাতি-সহ অন্যান্য বন্য জন্তুর উপস্থিতি জানা যাবে। শুধু উপস্থিতিই নয়, ট্রেনের চালককে বন্য জন্তুর উপস্থিতির জানান দিয়ে রেলচালক কোনওভাবে কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করতে অপারগ হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে রেলের ডায়নামিক ব্রেকের মাধ্যমে ট্রেন থামিয়ে দেওয়া সম্ভব হবে বলে দাবি করেছেন ওই ছাত্র। দীপাঞ্জন বলেন, “মূলত থার্মাল ভিশন ক্যামেরা ও একটি অত্যাধুনিক প্রসেসিং ইউনিটের মাধ্যমে এই কাজ করা সম্ভব। এই ক্ষুদ্র
ইউনিটটি পোর্টেবল। যা শিলিগুড়িতে কোনও ট্রেনের ইঞ্জিনে লাগিয়ে দিলে আবার আলিপুরদুয়ার জংশন রেলস্টেশনে তা খুলে নেওয়া যাবে। মূলত থার্মাল ভিশনের মাধ্যমে বন্য জন্তুর উপস্থিতি জানা ও সেই বিষয়ে ট্রেন চালককে সতর্ক করার উপায়। এটি অত্যন্ত কম খরচে করা যায়। এর সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ডায়নামিক ইমেজ প্রসেজিং ইউনিট, যা আমি আবিষ্কার করেছি। এতে হাতি বা অন্যান্য বন্য জন্তুর উপস্থিতির বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে মিনিটের মধ্যে। এটি পোর্টেবল হওয়ার কারণে সহজেই এক ট্রেন থেকে খুলে অন্য একটি ট্রেনে লাগানো যাবে। রেল, বনদপ্তর বা অন্য কোনও সংস্থা আমাকে আর্থিক সাহায্য করলে তা আমি হাতে কলমে করে দেখাতে পারি।”
[আরও পড়ুন: রাতভর বন্ধ থাকবে হোয়াটসঅ্যাপ! এমন মেসেজ পেলে সাবধান]
দীপাঞ্জনের তৈরি এই পদ্ধতি নিয়ে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন মহলে শোরগোল পড়েছে। বিষয়টি শুনে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের সিনিয়র ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার অমর মোহন ঠাকুর বলেন, “এটি তো খুব খুশির খবর। আমাদের সেফটি বিভাগ রয়েছে। সেই বিভাগে বিষয়টি নিয়ে ওই ছাত্র কথাবার্তা বললে আমরা বিষয়টি দেখতে পারি। তবে যদি সত্যিই ওই ছাত্রের আবিষ্কার করা পদ্ধতির বাস্তব ভিত্তি থাকে তাহলে সেটি নিয়ে অবশ্যই ভাবনাচিন্তা করা যেতে পারে।”
উল্লেখ্য, ডুয়ার্সের বনাঞ্চলে ট্রেনে কাটা পড়ে হাতি মৃত্যুর একাধিক ঘটনা ঘটেছে। যা নিয়ে বিভিন্ন সময় রীতিমতো রেল ও বনদপ্তরে তোলপাড় হয়েছে। একে অপরের ঘাড়ে দোষারোপের পালাও চলেছে। এমনকী বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলার রায়ের জেরে জঙ্গলপথে রেলের গতিবেগ নিয়ন্ত্রণ করেছে রেল। আর এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নয়া পদ্ধতির আবিষ্কার করেছেন একজন রেলকর্মীরই ছেলে।
[আরও পড়ুন: টিকটকের কেরামতি, তিন বছর পর স্বামীকে ফিরে পেলেন মহিলা]
The post রেলের ধাক্কায় হাতিমৃত্যু রুখতে বিশেষ যন্ত্র বানিয়ে তাক লাগালেন আলিপুরদুয়ারের ছাত্র appeared first on Sangbad Pratidin.