সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আমতায় ছাত্রনেতা আনিস খানের মৃত্যুর আঁচ কলকাতায়। শনিবার সন্ধেবেলা পার্কসার্কাস (Park Circus) সেভেন পয়েন্টের কাছে অবরোধে নামলেন আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। এই বিশ্ববিদ্যালয়েরই ছাত্র ছিলেন আনিস। মানববন্ধন করে তাঁরা অবরোধ করেন। যার জেরে যানবাহন স্তব্ধ হয়ে পড়ে। দীর্ঘক্ষণ ধরে চলা অবরোধ হঠাতে গেলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধে প্রতিবাদীদের। পরিস্থিতি ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। প্রসঙ্গত, শনিবার সকালে পুলিশের ছদ্মবেশে আমতার (Amta) বাড়িতে ঢুকে ছাত্রনেতা আনিস খানকে ছাদ থেকে ফেলে খুনের অভিযোগ ওঠে। এর প্রতিবাদে উত্তপ্ত আমতাও। বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
আনিস সিএএ-এনআরসি (CAA-NRC) বিরোধী আন্দোলনের এক পরিচিত মুখ। কলকাতার আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রাক্তনী আনিস। এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ পড়েছেন। বর্তমানে তিনি মাস কমিউনিকেশন নিয়ে পড়াশোনা করছেন। কলকাতায় থাকতেন। সপ্তাহান্তে বাড়ি আসতেন। এলাকায় এক ধর্মীয় অনুষ্ঠান উপলক্ষে শুক্রবার সন্ধ্যায় তিনি বাড়িতে এসেছিলেন। তিনি বামপন্থী সমর্থক হলেও পরবর্তীকালে আইএসএফ গঠিত হওয়ার পর তাঁদের সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়েন এবং ছাত্র সংগঠনের দায়িত্ব তাঁকে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল আইএসএফ। কিন্তু শনিবারই ঘটে যায় মর্মান্তিক ঘটনা। কেউ বা কারা পুলিশের পোশাকে তাঁর বাড়িতে ঢুকে ছাদ থেকে ধাক্কা দিয়ে মৃত্যুমুখে ঠেলে দেন বলে অভিযোগ।
[আরও পড়ুন: স্কুলে পিপিপি মডেল নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি, সাফ জানালেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু]
ঘটনার খবর পেয়ে আনিসের বাড়িতে যান আমতার বিধায়ক সুকান্ত পাল। তিনি বলেন, ”অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। এই ঘটনার সঙ্গে কে বা কারা জড়িত রয়েছে পুলিশ যথাযথ তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা করুক।” দুপুরের দিকে সেখানে যান ভাঙড়ের বিধায়ক তথা আইএসএফ নেতা নওশাদ সিদ্দিকী। তিনি আমতা থানায় যান এবং আমতা থানার পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন। থানায় আসা আনিসের বাবা ও দাদার সঙ্গে কথা বলেন। নওশাদ সিদ্দিকি বলেন, ”অত্যন্ত খারাপ ঘটনা। আমরা পুলিশের সঙ্গে কথা বলেছি। পুলিশ এরপর তারা জানিয়েছেন তাদের পক্ষ থেকে কেউ ওই এলাকায় তল্লাশি করতে যায়নি। তাই পুলিশ পুরো ঘটনার যথাযথ তদন্ত করুন এবং দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা করুক। তিনি প্রশ্ন তোলেন যদি পুলিশ না যায় তাহলে কারা পুলিশের পোশাক পড়ে এই ঘটনা ঘটাল সে ব্যাপারে পুলিশ যথাযথ তদন্ত করুক।”
[আরও পড়ুন: ফের সংঘাতে মমতা-ধনকড়, বিধানসভা অধিবেশন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সুপারিশ ফেরালেন রাজ্যপাল]
হাওড়ার গ্রামীণ এলাকার পুলিশ সুপার (SP) সৌম্য রায় বলেন, ”আমাদের কাছে খবর আসে ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যু হয়েছে যুবকের। তারপর পুলিশ গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। তবে যেহেতু পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছে তাই আমরা ডিএসপি (DSP)পদমর্যাদার এক পুলিশ আধিকারিকের নেতৃত্বে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছি।”