দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: অসুস্থ হলে এতদিন ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে হতো কয়েক কিলোমিটার দূরের কলকাতায়। আলিপুর চিড়িয়াখানায় রেখে চলত চিকিৎসা। কোনও কোনও ক্ষেত্রে আবার পাঠানো হয়ে সুদূর উত্তরবঙ্গে, খয়েরবাড়ি ব্যঘ্র পুনর্বাসন কেন্দ্রে। কিন্তু সুন্দরবনের রয়্যাল বেঙ্গল টাইগাররা (Royal Bengal Tiger) ঘরের পরিবেশ ছেড়ে অন্যত্র ঠিক মানিয়ে নিতে পারে না। সেই কারণে তাদের বাসস্থানের কাছেই তৈরি হচ্ছে সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল। ঝড়খালিতে ব্যঘ্র পুনর্বাসন কেন্দ্র লাগোয়া এই হাসপাতাল চলতি বছরের শেষ থেকেই চালু হয়ে যাবে বলে আশা করছেন বনকর্মীরা।
২০০৮ সালে বাম সরকারের আমলে ঝড়খালির (Jharkhali) এই পুনর্বাসন কেন্দ্রের সঙ্গে হাসপাতাল তৈরির জন্য বিশাল জমি নেওয়া হয়েছিল। কাজও শুরু হয়। কিন্তু নানা জটিলতায় কাজ আটকে যায়। এরপর ২০১১ সালে রাজ্য রাজনৈতিক পালাবদলের পর ফের কাজ শুরু হয়। এবার তা শেষের পথে। এ বছরের শেষ থেকে সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল (Super Specialist Hospital) চালু করে দেওয়া হতে পারে। মূলত রয়্যাল বেঙ্গলদের নানা ধরনের চিকিৎসার জন্য পূর্ণ পরিকাঠামো থাকবে এখানে।
[আরও পড়ুন: আজও তাড়া করে বেড়ায় ১৫ আগস্টের বিভীষিকা, স্মৃতিচারণ হাসিনার]
এমনিতে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের ওজন অনেক বেশি। সেই কারণে তাদের দূরে নিয়ে যাওয়া-আসা অসুবিধাজনক। তাছাড়া জরুরি পরিস্থিতিতে বাঘেদের এক্স রে করার দরকার হলে সাধারণ এক্স রে মেশিনে তা করা হতো। ঝড়খালির সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল চালু হলে এসব সমস্যা মিটবে। এখানে বাঘেদের গায়ে হাত না দিয়ে গোটা চিকিৎসাই মেশিনের সাহায্যে যাতে করা যায়, তার ব্যবস্থা হচ্ছে। থাকছে অত্যাধুনিক মেশিন, যন্ত্রপাতি, অপারেশন থিয়েটার। থাকবেন ৪ জন চিকিৎসক, একজন সার্জেন, প্যাথোলজিস্ট, ফার্মাসিস্ট। এছাড়া অন্যান্য জরুরি পদেও পশু চিকিৎসক নিয়োগ করা হবে সময়ের ব্যবধানে। এদিকে ঝড়খালিতে একটি মিনি জু তৈরির কাজ চলছে। ফলে শুধু বাঘ নয়, অন্যান্য প্রাণীর চিকিৎসাও হবে এখানে। এখন অপেক্ষা শুধু সময়ের।