গৌতম ব্রহ্ম: মান্যতা পেল পদ্মশ্রী (Padma Shri) পাওয়া ১২৬ বছর! যাবতীয় বয়স বিতর্কে জল ঢেলে বাংলাদেশ (Bangladesh) সরকার জানিয়ে দিল, স্বামী শিবানন্দের জন্ম ১৮৯৬-এর ৮ আগস্ট, স্বামী বিবেকানন্দের শিকাগো বক্তৃতার ঠিক তিন বছর পর। জন্মস্থান সিলেটের হবিগঞ্জ উপজেলার বাহুবল গ্রাম। সেই হিসেবে তিনি এখন ১২৬ পেরিয়ে ১২৭-এর পথে।
অর্থাৎ স্বামীজির পাসপোর্ট, আধার কার্ডে যে বয়সের উল্লেখ আছে তাতে একবর্ণও অসত্য নেই। তথ্যতালাশ করে সার্টিফিকেটও দিয়েছে হবিগঞ্জ উপজেলা পরিষদ। রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মুগ্ধতা কেড়ে নেওয়া স্বামী শিবানন্দর ভক্ত শুধু ভারতেই নয়, ছড়িয়ে রয়েছেন বাংলাদেশেও। তাঁরাই স্বামীজির জন্ম শংসাপত্রের জন্য প্রশাসনের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন।
[আরও পড়ুন: মতুয়াদের বার্ষিক মেলায় ‘রাজনৈতিক হিংসা’ নিয়ে বার্তা প্রধানমন্ত্রীর, CAA ইস্যুতে মিলল না সদুত্তর]
তার ভিত্তিতেই হবিগঞ্জের জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন বিভাগের কর্তারা খোঁজখবর শুরু করেন। আবিষ্কার হয় বেশ কিছু প্রামাণ্য নথি। যার ভিত্তিতে স্বামী শিবানন্দর নামে ইস্যু করা হয় বার্থ সার্টিফিকেট।
শংসাপত্রে উল্লিখিত, স্বামীজির পিতা শ্রীনাথ দাস, মা ভগবতী দেবী। স্থায়ী ঠিকানা বেনারসের দুর্গাকুণ্ডের কবীর নগর। শংসাপত্রের নিচে হবিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মহম্মদ আজমল হুসেন চৌধুরি ও সম্পাদক মহম্মদ ইকবাল হোসেনের স্বাক্ষর।
স্বামীজির অন্যতম সহচর ও ভক্ত সুব্রত ঘোষ জানিয়েছেন, “আমরা যাঁরা বাবাকে দীর্ঘদিন ধরে চিনি তাঁদের মনে বাবার বয়স নিয়ে কোনও সংশয় নেই। কিন্তু অনেকের হয়তো আছে। আগামী ৮ আগস্ট স্বামীজি ১২৭ হবেন। এটা তো সত্যি একটা চলমান রূপকথা। বার্থ সার্টিফিকেট আশা করি সব সংশয় দূর করবে।” সুব্রতবাবু আরও জানালেন, স্বামীজি মে মাসের শেষে বাংলায় আসছেন। কলকাতা থেকে যাবেন নবদ্বীপে।
[আরও পড়ুন: শুনশান পথঘাট, লকডাউনে ঘরবন্দি সাংহাই! করোনা আতঙ্কে কাঁপছে চিন]
যোগের প্রচার ও প্রসারে দৃষ্টান্ত হয়ে ওঠার জন্য ভারত সরকার স্বামীজিকে পদ্ম পুরস্কারে ভূষিত করেছে। দু’দিন আগেই ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে স্বামী শিবানন্দর প্রসঙ্গ টেনে আনেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, “আপনারা নিশ্চয়ই ১২৬ বছর বয়সি বাবা শিবানন্দকে দেখেছেন। সকলেই তাঁর শারীরিক ক্ষমতা দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন। বর্তমানে গোটা দেশে ওঁর স্বাস্থ্যই অন্যতম চর্চার বিষয়। যোগাসনের মাধ্যমেই তিনি এত বয়সেও সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে পেরেছেন।”
সুস্বাস্থ্যই বটে। নেতাজির সঙ্গে ছেলেবেলা কাটানো এই যোগী এখনও অবলীলায় কঠিন যোগমুদ্রায় ধ্যনস্থ হতে পারেন। করতে পারেন চক্রাসন, সর্বাঙ্গাসনের মতো আসনও। তুখোড় ইংরেজি লিখতে, বলতে পারেন। গুরুর নির্দেশে ৪০টির বেশি দেশ পরিক্রমা করে ফিরে এসেছিলেন ভারতে।