সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তালিবান (Taliban) জমানায় মেয়েদের জন্য হাই স্কুলের দরজা বন্ধ। দীর্ঘদিন ধরে পড়াশোনার সুযোগ থেকে বঞ্চিত আফগান কিশোরীরা। এহেন পরিস্থিতিতেই স্কুলের ফাইনাল পরীক্ষার কথা ঘোষণা করল তালিবান প্রশাসন। গোটা আফগানিস্তান জুড়েই মাত্র একদিনেই পরীক্ষা সেরে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে দেশের শিক্ষা দপ্তর। তবে পরীক্ষাকেন্দ্রে ছাত্রী ও শিক্ষিকা-সকলকেই হিজাবে মাথা ঢেকে রাখার ফতোয়া জারি করা হয়েছে। ৭ ডিসেম্বর আফগানিস্তানের ৩১টি প্রদেশের সমস্ত স্কুলে পরীক্ষা নেওয়া হবে।
তালিবানের এহেন সিদ্ধান্তে স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে নানা মহলে। মাত্র একদিন আগে পরীক্ষার বিষয়টি ঘোষণা করেছেন আফগানিস্তানের (Afghanistan) শিক্ষামন্ত্রী। জানা গিয়েছে, মাত্র তিন ঘণ্টার মধ্যে ১৪টি বিষয়ের পরীক্ষা দিতে হবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আফগান কিশোরীদের মতে, “দীর্ঘদিন ধরে একটা ভয়ের পরিবেশে থাকছি আমরা। স্কুল খোলার কথা শুনলেও বাস্তবে সেটা হয়নি। মানসিক চাপে বইয়ের একটা পাতাও পড়তে পারিনি। এই পরিস্থিতিতে মাত্র একদিনের নোটিসে পরীক্ষা দেওয়া- গোটা ব্যাপারটা খুবই অবাস্তব। দেড় বছর ধরে স্কুল যাইনি, পড়াশোনা করতে পারিনি, এই অবস্থায় পরীক্ষা দেওয়া একেবারে অসম্ভব।”
[আরও পড়ুন: সাংবাদিক খাশোগ্গি হত্যায় সৌদি যুবরাজকে ‘ক্লিন চিট’ মার্কিন আদালতের]
একই মত আফগানিস্তানের শিক্ষিকাদেরও। স্কুল বন্ধ থাকায় ছাত্রীদের কাছে বইখাতা নেই। একা একা বাড়িতে বসে পড়াশোনা করাও সম্ভব হয়নি ছাত্রীদের পক্ষে। এমতাবস্থায় পরীক্ষা দিলেও পাশ করা প্রায় অসম্ভব। তাই এরকম পরীক্ষার কোনও মানেই হয় না। প্রসঙ্গত, এই পরীক্ষায় পাশ করতে না পারলে আগামী বছর মার্চ মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে পড়ুয়াদের। এই পরীক্ষায় পাশ করে গেলে কলেজে পড়ার জন্য আবেদন করতে পারবে আফগান মেয়েরা। তবে উচ্চশিক্ষার জন্য তারা আবেদন করতে পারবে কিনা, তালিবানের শাসনে সেটাই কোটি টাকার প্রশ্ন।
২০২১ সালের আগস্টে কাবুল দখল করার পর সেপ্টেম্বরেই মেয়েদের প্রাথমিক স্কুলগুলি খোলার সিদ্ধান্ত নেয় তালিবান। তবে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্তই। তার থেকে উঁচু ক্লাসে মেয়েদের আর স্কুলে যাওয়ার উপায় নেই। তারপরে একাধিকবার মেয়েদের জন্য হাইস্কুলের দরজা খোলার কথা হলেও, নানা অজুহাত দেখিয়ে সেই সিদ্ধান্ত বাতিল করে দিয়েছে তালিবান। বিশেষজ্ঞদের মতে, এহেন পরিস্থিতিতে মেয়েদের জন্য পরীক্ষার ব্যবস্থা করা আসলে ভণ্ডামি।