সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এই তালিবানই (Taliban) সেই তালিবান, নতুন করে আফগান তখতে বসার পর মুখে যতই প্রগতিশীলতার কথা বলুক, মেয়েদের উপর জারি হওয়া একাধিক ফতোয়ায় ইতিমধ্যে তা প্রমাণিত। এবার শরিয়তি আইনকে মান্যতা দিয়ে সংগীতশিল্পীকে 'শাস্তি' দিল তালিবান। একজন শিল্পীর সামনে তাঁর শিল্পকে ধ্বংস করার চেয়ে বড় শাস্তি হতে পারে না। সেই কাজই করল আফগান জেহাদিরা। সংগীতশিল্পীর সামনেই পুড়িয়ে দেওয়া হল তাঁর বাদ্যযন্ত্র।
আফগানিস্তানের (Afghanistan) পাকতিয়া প্রদেশে ওই সংগীতশিল্পীর সামনেই তাঁর বাদ্যযন্ত্রটিকে পুড়িয়ে দেয় তালিবানরা। আফগান সাংবাদিক আবদুল্লা ওমেরির (Abdulhaq Omeri) পোস্ট করা ভিডিওতে এই ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে।
[আরও পড়ুন: তালিবান আতঙ্কে কাবুল ছাড়ার পথে নিখোঁজ শিশু, ৫ মাস পর ফিরল পরিবারের কাছে]
ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, আগুনে দাউদাউ করে পুড়ছে বাদ্যযন্ত্র। যে দৃশ্য দেখে নিজেকে সামলাতে পারেননি সংগীতশিল্পী। হাউহাউ করে কেঁদে ফেলেন তিনি। যদিও সংগীতশিল্পীর অঝোর ধারায় কান্না দেখে হাসতে দেখা যায় এক তালিবান বন্দুকধারীকে। ভিডিওটির সঙ্গে টুইট বার্তায় আফাগান সাংবাদিক ওমেরি লেখেন, "সংগীতশিল্পীর বাদ্যযন্ত্র পুড়িয়ে দেওয়ার পর তিনি কাঁদছেন। ঘটনাটি আফগানিস্তানের পাকতিয়া প্রদেশের জাজাইআরুব জেলায় ঘটেছে।" ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে ভিডিওটি।
প্রসঙ্গত, আগেই যানবাহনে গান শোনা নিষিদ্ধ করেছিল তালিবান। এছাড়া বিয়েতে লাইভ মিউজিক নিষিদ্ধ করা হয়েছে নয়া তালিবানি জমানায়। উৎসবের ক্ষেত্রে পুরুষ ও নারীদের আলাদা ভাবে উদযাপনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
[আরও পড়ুন: ‘প্রয়োজন নেই’, নির্বাচন কমিশন এবং আইনসভা বিষয়ক মন্ত্রক বন্ধ করল তালিবান]
ইতিমধ্যে আফগান চ্যানেলগুলির সেইসব ধারাবাহিক বন্ধ করে দিতে বলা হয়েছে তালিবান সরকারের তরফে, যেগুলিতে মহিলারা কাজ করছেন। এছাড়াও মহিলা সাংবাদিকদের হিজাব পরে খবর পড়তে বলা হয়েছে। পাশাপাশি পুরুষ সঙ্গী ছাড়া বেড়াতে যেতে পারবেন না আফগান মহিলারা। বাস ও অন্য গাড়ির চালিকদের উদ্দেশে বলা হয়েছে, একমাত্র ইসলামিক হিজাব পরা মহিলাদেরই তাঁরা গাড়িতে ওঠার অনুমতি দিতে পারবেন।
উল্লেখ্য, গত আগস্টে আফগানিস্তান দখল করেছিল তালিবান। তারপর থেকেই সেদেশ নিয়ে সারা বিশ্বের উদ্বেগ বেড়েছে। পরিস্থিতি এমনই দাঁড়িয়েছে দ্রুত ফুরিয়ে যেতে বসেছে খাদ্য ও অন্যান্য জীবনদায়ী রসদ। বিধ্বস্ত সেদেশের অর্থনীতি। সেই সঙ্গে চলছে তালিবানি জুলুমও। বিশেষ করে বিপন্ন নারীরা।