সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তালিবান (Taliban) আছে তালিবানেই। আগস্টে আফগানিস্তান (Afghanistan) দখলের পর যতই মুখে আপাত শান্তির বাণী দিক জেহাদিরা, জঙ্গিদের নিষ্ঠুরতায় যে এতটুকু বদল আসেনি ফের তার প্রমাণ মিলল। শনিবার আফগানিস্তানের মাজার-ই-শরিফের একটি বাড়ি থেকে মিলল চারজন মহিলার মৃতদেহ। বিবিসি সূত্রে জানা যাচ্ছে, তাঁরা দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পরিকল্পনা করছিলেন। এও জানা যাচ্ছে, মৃতদের মধ্যে একজন মহিলা অধিকার কর্মী। যদিও তালিবানের ভয়ে তাঁর পরিবারের সদস্যরা এই নিয়ে মুখ খুলতে চাননি।
আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রকের মুখপাত্র কারি সঈদ খোস্তি এক ভিডিও বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা জেরার মুখে স্বীকার করেছে, ওই মহিলাদের নিজেদের ডেকে পাঠিয়ে তাদের খুন করেছে তারা। ওই চার মহিলা পরস্পরের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন বলেও জানা গিয়েছে।
[আরও পড়ুন: আমেরিকার মিউজিক ফেস্টিভ্যালে ভয়াবহ দুর্ঘটনা, ভিড়ের চাপে মৃত্যু অন্তত ৮, আহত বহু]
তালিবান আফগানভূমে দখলদারি শুরুর পর থেকেই দেশ ছেড়ে পালানোর হিড়িক পড়ে গিয়েছে সাধারণ আফগানদের মধ্যে। তবে সব থেকে বেশি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন মহিলারা। আক্রান্ত চার মহিলাও তালিবানের হাত থেকে বাঁচতে দেশ ছাড়ার পরিকল্পনা করছিলেন বলে মনে করা হচ্ছে। প্রায় দুই দশক ধরে গণতন্ত্রের খোলা হওয়ার পর ফের আফগানভূম ঢেকে গিয়েছে মৌলবাদের কালো মেঘে। আর আশঙ্কা সত্যি করে ১২ বছরের ঊর্ধ্বে মেয়েদের পড়াশোনা করলেই কঠিন শাস্তির বিধান দিয়েছে তালিবান। স্কুল-বিশ্ববিদ্যালয়ে মহিলা শিক্ষক ও পড়ুয়া উভয়ের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে জেহাদিরা। কর্মক্ষেত্রেও মহিলাদের উপর নেমে এসেছে খাঁড়া।
তালিবান আফগানিস্তান দখল করার পর থেকেই গোটা বিশ্বের নজর পড়ে কাবুলের উপরে। গত দু’দশক সেদেশে থাকার পর মার্কিন সেনা সরতেই নতুন করে ‘কাবুলিওয়ালার দেশে’ ক্ষমতা কায়েম করে জেহাদিরা। আর তারপর থেকেই ধীরে ধীরে ফের ধর্মান্ধ জঙ্গিদের হাতে সাধারণ মানুষের অসহায় অবস্থায় শিউরে উঠেছে সকলেই।
[আরও পড়ুন: এবার ত্রাণকার্যেও মহিলাদের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করল তালিবান]
এখনও পর্যন্ত কোনও দেশই তালিবানের সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি। কেবল ‘বন্ধু’ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান রাষ্ট্রসংঘে জঙ্গিদের পক্ষে সওয়াল করার পাশাপাশি পাকিস্তানের আফগান দূতাবাসে তালিবান রাষ্ট্রদূতদের ঢোকার অনুমতি দিয়েছেন বলে শোনা যাচ্ছে।