সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত বছরের আগস্টে নতুন করে আফগানিস্তান (Afghanistan) দখল করার পর তালিবান (Taliban) আশ্বাস দিয়েছিল, এটা তালিবান ২.০। যারা নারী স্বাধীনতা, বাকস্বাধীনতার মতো বিষয়গুলিতে বিশ্বাস করে। কিন্তু সেই কথা যে স্রেফ কথার কথা, তা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল কয়েক দিনের মধ্যেই। তেমনই এক ঘটনা ফের সামনে এল। ভরা স্টেডিয়ামে পরকীয়া ও চুরির মতো অপরাধে দোষী সাব্যস্ত ১২ জনকে বেত মারা হল তালিবান প্রশাসনের নির্দেশে। তাঁদের মধ্যে ৩ জন নারী। বাকিরা পুরুষ।
কাবুলের প্রশাসনিক দপ্তরের এক কর্মী, যিনি নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক, তিনিই এই ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছেন। জানিয়েছেন, দোষীদের দলে শিক্ষাকর্মী থেকে মুজাহিদিন, বয়স্ক থেকে আদিবাসী নেতা- সকলেই রয়েছেন। যাঁদের বয়স ২১ থেকে ১৯ বছরের মধ্যে। সকালের ৯টার মধ্যেই দর্শকদের মাঠে হাজির হতে বলা হয়। শয়ে শয়ে দর্শকরা গ্যালারিতে ছিলেন বলে জানাচ্ছেন তিনি। পাশাপাশি তাঁর দাবি, সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খোলা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তাই নাম প্রকাশ না করেই এই বিষয়টি সকলের কাছে তুলে ধরেছেন তিনি। জানা গিয়েছে, মাঠের সকলের প্রতিই জেহাদিদের কড়া নির্দেশ ছিল কেউ যেন মোবাইল ক্যামেরায় বেত মারার দৃশ্যের কোনও ছবি বা ভিডিও না তোলেন। তবে ছবি, ভিডিও না উঠলেও সরকারি আধিকারিকদের মাধ্যমেই ছড়িয়ে পড়েছে শাস্তিদানের খবর।
[আরও পড়ুন: চার্জশিট ব্যবহার করে অপপ্রচার! শুভেন্দুর কয়লা পাচারে ‘প্রভাবশালী’ তত্ত্বের পালটা কুণালের]
এই ধরনের শাস্তিদান অনেককেই মনে করিয়ে দিচ্ছে আফগানিস্তানের তালিবান শাসনের প্রথম পর্যায়ের কথা। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত সময়কালে পরকীয়া, চুরির মতো ঘটনায় প্রকাশ্য়ে বেত মারা এমনকী মেরে ফেলার ঘটনাও ছিল স্বাভাবিক। সেই দিনই ফের ফিরল কাবুলে। হিসেব অনুয়ায়ী, এটাই এমন ভাবে ভরা স্টেডিয়ামে বেত মারার প্রথম ঘটনা, তালিবান শাসনের দ্বিতীয় পর্যায়ে।
উল্লেখ্য, মেয়েদের উপর একের পর এক কঠোর সামাজিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হচ্ছে আফগানিস্তানে। ইতিমধ্যে তাদের শিক্ষার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। স্থানীয় মিডিয়াগুলি জানাচ্ছে, বেশকিছু প্রদেশে বয়স ছয় বছরের বেশি হলে মেয়েদের স্কুলে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। কর্মক্ষেত্রেও তাঁরা বঞ্চিত। এমনকী বাস-ট্যাক্সি চালকরা পর্যন্ত তালিবানদের ভয়ে ভাড়া দিলেও মেয়েদের গাড়িতে উঠতে দিতে নারাজ। একটি পরিসংখ্যানে জানা গিয়েছে, তালিবান আমলে আফগান সংবাদমাধ্যম থেকে কাজ হারিয়েছেন ৮০ শতাংশ মহিলা কর্মী।