সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ব্রটিশ রাজপরিবারে কেচ্ছার অন্ত নেই। এবং অধিকাংশেরই কেন্দ্রে রয়েছেন রাজকুমার হ্যারি ও তাঁর অভিনেত্রী স্ত্রী মেগান মর্কেল। তাঁদের নিয়ে কম জলঘোলা হয়নি বাকিংহাম প্যালেসে। ‘অভিমানি’ ও ‘দেশান্তরী’ ছোট ছেলেকে নিয়ে বিস্তর ঝামেলা পোহাতে হয়েছে বর্তমান রাজা তৃতীয় চার্লসকে। কিন্তু এবার পাওয়া গিয়েছে ‘যোদ্ধা’ হ্যারিকে। যিনি একাহাতেই খতম করেছেন পঁচিশজন তালিবান জঙ্গিকে।
আর দু’দিন পরেই প্রকাশ্যে আসতে চলেছে হ্যারির আত্মজীবনী ‘স্পেয়ার’। বইটিকে কেন্দ্র করে কৌতূহল এবং বিতর্কের পারদ দ্রুত চড়ছে। ইতিমধ্যেই সংবাদমাধ্যমে বইটির কিছু অংশ প্রকাশ পেয়েছে। যেখানে দাদা উইলিয়াম, বাবা তৃতীয় চার্লসের বিরুদ্ধে একাধিক ক্ষোভ অভিমানের কথা জানিয়েছেন তিনি। প্রকাশ্যে এসেছে রাজপরিবারের অন্দরমহলের একাধিক অন্ধকার দিক। এবার প্রকাশ্যে এল আত্মজীবনীর আর একটি অংশ। সেখানে পাওয়া গিয়েছে ‘যোদ্ধা’ হ্যারিকে (Prince Harry)। যিনি একাহাতেই খতম করেছেন পঁচিশ জন তালিবান জঙ্গিকে। ‘দ্য টেলিগ্রাফে’র এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, আত্মজীবনীর একটি অংশে ব্রিটিশ সেনার অংশ হিসাবে আফগানিস্তানে তালিবান দমনের স্মৃতি রোমন্থন করেছেন হ্যারি।
[আরও পড়ুন: ‘কে জানে আমি সত্যিই তোমার বাবা কিনা’, রাজকুমার হ্যারিকে এমনই বলেছিলেন চার্লস!]
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, রাজকুমার হ্যারি প্রায় ২৫ জন তালিবকে হত্যা করেছিলেন। একই সঙ্গে তাঁর দাবি, এর জন্য সন্তোষ বা গর্ব না থাকলেও কোনও লজ্জা নেই। এই বিষয়ে কেন তাঁর কোনও আপসোস নেই, তারও ব্যাখ্যা দিয়েছেন হ্যারি। তাঁর দাবি, ব্রিটিশ সেনার সদস্যরা তাঁকে তালিবানকে মানুষ হিসাবে গণ্য করতে বারণ করেছিলেন। ওই তালিবদের দাবার ঘুঁটি হিসেবে গণ্য করতে বলা হয়েছিল।
এদিকে, আফগানিস্তানে সেনা অভিযান নিয়ে ব্রিটিশ যুবরাজকে একহাত নিয়েছে তালিবান নেতা আনাস হাক্কানি। তার বক্তব্য, “আমাদের নিরীহ মানুষজন তোমাদের কাছে দাবার ঘুঁটি মাত্র। তোমাদের সিপাহী, সেনাবাহিনী ও রাজনেতারা আমাদের ঘুঁটি ভাব। কিন্তু দেখ সাদা-কালোর এই লড়াইয়ে তোমরা হেরে গিয়েছ। যাদের তুমি (হ্যারি) হত্যা করেছো তারা ঘুঁটি নয় মানুষ ছিল। তাদের পরিবার রয়েছে। তাদের প্রিয়জনেরাও অপেক্ষা করছিল।”
উল্লেখ্য, টুইন টাওয়ার হামলার পর আফগানিস্তানে ‘সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ শুরু করে আমেরিকা ও ন্যাটো। ওই বাহিনীর অংশ হিসেবে ২০০৭ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত ব্রিটিশ রয়্যাল আর্মির হেলিকপ্টার চালক ছিলেন হ্যারি। ২০১২ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ‘অ্যাপাচে’ হেলিকপ্টারও চালিয়েছেন তিনি। আফগানিস্তানে এই রকমই একটি হেলিকপ্টার থেকে তালিব যোদ্ধাদের লক্ষ্য করে বোমা ফেলা হয়। ঠিক কত জন সেই বোমার আঘাতে মারা গিয়েছেন, তা অবশ্য হ্যারি বলতে পারেননি। তাঁর অনুমান সংখ্যাটা পঁচিশ।