সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শের মহম্মদ আব্বাস স্তানিকজাই (Sher Mohammad Abbas Stanikzai)। আফগানিস্তানে তালিবানি দাপটের সৌজন্যে গোটা বিশ্ব এই নামটির সঙ্গে পরিচিত। আফগানিস্তানের মতো আস্ত একটি দেশ দখল করে নেওয়া তালিবানের ‘সপ্তরথী’ অর্থাৎ শীর্ষ সাত নেতার মধ্যে একজন হলেন এই শের মহম্মদ আব্বাস স্তানিকজাই। এই মুহূর্তে দোহাই তালিবানের রাজনৈতিক সদর দপ্তরের দায়িত্বে আছে সে। আর পাঁচজন তালিবান নেতার মতোই একগুঁয়ে এবং নির্মম এই নেতাও। অথচ, এই শীর্ষ তালিবান নেতাই নাকি একটা সময় ছিলেন মিতভাষী। কট্টরপন্থার নামমাত্র ছিল না তাঁর মধ্যে। অন্তত দেরাদূনের সেনা অ্যাকাডেমিতে প্রশিক্ষণ নেওয়ার সময় তার মধ্যে নিষ্ঠুরতা বা কট্টর মনোভাব কোনওটাই ছিল না।
হ্যাঁ, ঠিকই পড়েছেন। তালিবানের (Taliban) শীর্ষ এই নেতা একটা সময় ভারতে থেকে গিয়েছে। বস্তুত, দেরদূনের IMA থেকেই তার সেনা প্রশিক্ষণ। প্রায় ৪০ বছর আগে ভারতে যখন আফগানদের জন্য সেনা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র খোলা হল তখনই মিলিটারি ট্রেনিংয়ের জন্য দেরাদূনের সেনা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে এসেছিল সে। দেরদূনের ইন্ডিয়ান মিলিটারি অ্যাকাডেমির (Indian Military Academy) ১৯৮২ ব্যাচের ছাত্র এই শের মহম্মদ আব্বাস স্তানিকজাই। তখন অবশ্য এই নামে কেউই চিনত না এই শীর্ষ তালিবান নেতাকে। সকলেই তাকে চিনত ‘শেরু’ হিসাবে।
[আরও পড়ুন: কেন পাক সেনার হেফাজতে Taliban শীর্ষনেতা আখুনজাদা? বাড়ছে জল্পনা]
৮২-তে স্তানিকজাই যখন ভারতে আসে তখন তার বয়স ছিল মোটে বছর ২০। স্বল্প এবং মৃদুভাষী ছিলেন ‘শেরু’। অল্প কথা বলা এবং লাজুক স্বভাবের জন্য খুব অল্প সময়েই IMA-তে সকলের প্রিয়পাত্র হয়ে উঠেছিল শেরু। তার এক সতীর্থ অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল ডিএ চতুর্বেদী স্মৃতি হাতড়ে বলছিলেন,”শেরুকে যখন প্রথম দেখেছিলাম ওঁর মধ্যে কট্টরপন্থী চিন্তাভাবনা একেবারেই ছিল না।” শেরুর আরেক সতীর্থ বলছিলেন, শেরু নাকি নিজের গোঁফের জন্য খুব পরিচিত ছিল। এমনিতে লাজুক হলেও মাঝে মাঝেই গোঁফে তা দিত।
[আরও পড়ুন: Taliban Terror: সাংবাদিকের বাড়িতে হানা, না পেয়ে আত্মীয়কেই খুন করল তালিবান]
আইএমএ থেকে প্রশিক্ষণ পাওয়ার পর আফগানিস্তান ফিরে যায় শেরু। প্রথমে যোগ দেয় আফগান ন্যাশনাল আর্মিতে। আফগানিস্তানের (Afghanistan) হয়ে সোভিয়েত সেনার বিরুদ্ধে লড়াইও করেছে সে। তারপর কালক্রমে তালিবানে যোগ। এবং ক্রমে তালিবানের প্রথম সারিতে উঠে আসা। ১৯৯৬-এ তালিবানরা আফগানিস্তান দখল করলে সেসময় বিদেশ মন্ত্রকের দায়িত্বে ছিল এই আব্বাস স্তানিকজাই। এবারেও নতুন তালিবান সরকারে গুরুত্বপূর্ণ পদ পেতে চলেছে সে। দেরাদূনের সেই লাজুক, মিতভাষী শেরু যে আই এত বড় জঙ্গিগোষ্ঠীর শীর্ষে, বিশ্বাস হচ্ছে না তার সতীর্থদের।