সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিনোদন মানেই যেন নরকের পথ। কী সুর, কী গান, কী কাব্য – এসবের কোনও অর্থ নেই তালিবানের কাছে। ‘খিলাফত’ প্রতিষ্ঠাই তাদের একমাত্র লক্ষ্য। আফগানিস্তানে (Afghanistan) তালিবানি শাসন কায়েমের পরই সমস্ত শিল্পচর্চার পথ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তবু খানিকটা আশা ছিল, যদি জঙ্গিদের মন বদলে থাকে, তাহলে হয়ত গণমাধ্যমগুলিতে অল্পসল্প গানবাজনা চলতে পারে। কিন্তু রবিবার সেই আশাটুকুও ভেঙে খানখান হয়ে গেল। আর এবার কান্দাহার প্রদেশের রেডিও, টেলিভিশনের মহিলা সঞ্চালকদের কাজ নিষিদ্ধ করে দিল তালিবান। পাশাপাশি বন্ধ হয়ে গেল গানবাজনার সম্প্রচারও।
রবিবার আফগানিস্তানের প্রাক্তন অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী মাসুদ আন্দরাবি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, আফগানিস্তানের বাঘলান প্রদেশের আন্দরাব জেলার কৃষ্ণাবাদ গ্রামের বাসিন্দা খ্যাতনামা লোকসংগীত শিল্পী ফওয়াদ আন্দরাবি। শনিবার রাতে তাঁকে বাড়ি থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করে নিয়ে যায় জঙ্গিরা। পরে প্রকাশ্যেই তাঁকে খুন করা হয়। এর আগে নজর মহম্মদ নামে এক কৌতুকশিল্পীকেও নৃশংসভাবে হত্যা করেছিল তালিবান (Taliban)। আফগানিস্তানের শিল্পীমহলের এখন এমই অবস্থা। হয় পালিয়ে বাঁচতে হবে। পপ তারকা আরিয়ানা সঈদ যেভাবে বাঁচলেন। আর নয়ত তালিবানের কোপে পড়তেই হবে। তাদের অনুশাসন মেনে থাকতে হবে। স্তব্ধ করে দিতে হবে শিল্পের চর্চা। জোর করে চর্চা করতে চাইলে মৃত্যু অবধারিত।
[আরও পড়ুন: Taliban Terror: গানবাজনা ‘হারাম’, কৌতুক শিল্পীর পর এবার লোকসংগীত গায়ককে খুন তালিবানের]
এবার কান্দাহারে রেডিও, টিভি কোথাও সঞ্চালনা কিংবা অন্য কোনও ক্ষেত্রে মহিলাদের কাজ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে তালিবান। নিজেদের কর্মক্ষেত্রে গেলে তাঁদের বাড়ি ফিরিয়ে দেওয়া হয়। কোনও মহিলা কণ্ঠস্বর সম্প্রচারিত হবে না, টেলিভিশনের পর্দায় কোনও মহিলার মুখ দেখা যাবে না। এমনই ফতোয়া কার্যকর করে ফেলল তালিবান বাহিনী। মহিলাকণ্ঠে গান, পাঠ স্তব্ধ হয়ে গেল সেই দেশে।
[আরও পড়ুন: UNSC on Afghanistan: সন্ত্রাস নিয়ে রাষ্ট্রসংঘের বিবৃতিতে নেই তালিবানের নাম, নীরব দর্শক ভারত]
যদিও তালিবানি ফতোয়ায় এটা নতুন নয়। নব্বইয়ের দশকে আফগানিস্তানে যখন প্রথমবার শাসন কায়েম করেছিল জঙ্গিবাহিনী, সেসময়ও একই নিষেধাজ্ঞা জারি ছিল। মেয়েদের হিজাব-বোরখা পরাই দস্তুর ছিল। এবার তালিবান ফিরে আসার পর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, শরিয়তি আইনের আওতায় নির্দিষ্ট স্তর পর্যন্ত পড়াশোনা করতে পারবে মেয়েরা। কিন্তু সে কথা তারা রাখেনি। বাইরের কর্মক্ষেত্রেও তালা পড়ে গিয়েছিল ‘অন্দরবাসিনী’ মহিলাদের জন্য। আর এবার কান্দাহারে (Kandahar) সুর থামিয়ে দিল জঙ্গিরা।