সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আফগানিস্তানে এখন তালিবানের (Taliban) শাসন। কাবুলের রাস্তায় রাইফেল হতে ঘুরে বেড়াচ্ছে হাক্কানি নেটওয়ার্ক ও লস্করের জঙ্গিরা। ফলে দেশটি ফের জেহাদিদের বিচরণ ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে তা স্পষ্ট। এহেন পরিস্থিতিতে আমেরিকায় গচ্ছিত আফগানিস্তানের টাকা ‘ফ্রিজ’ করে দেয় আমেরিকা। এবার সেই টাকা তাদের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য ওয়াশিংটনের কাছে আরজি জানিয়েছে তালিবান নেতৃত্ব।
[আরও পড়ুন: ইউক্রেনে বাজতে চলেছে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের ঘণ্টা! রাশিয়াকে হুমকি আমেরিকার]
মঙ্গলবার কাতারের রাজধানী দোহায় আলোচনায় বসে আমেরিকা ও তালিবান। আলোচনা চলাকালীন তালিবান নেতৃত্ব আবেদন জানায় যে অর্থনৈতিক সংকটের জেরে বিপাকে পড়েছে দেশ। তাই আমেরিকা যেন আফগানিস্তানের ‘ফ্রিজ’ করা টাকা তাদের হাতে তুলে দেয়। আফগান বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র আবদুল কাহার বালখির বক্তব্য, “দুই পক্ষের মধ্যে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, স্বাস্থ্য-শিক্ষা ও সুরক্ষা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা ব্যাংকিং ও নগদ জোগানের বিষয়ে প্রয়োজনীয় বিষয়ে আলোচনা করেছি।” সবমিলিয়ে, গোড়ার দিকে আমেরিকার বিরুদ্ধে সুর চড়ালেও অর্থনৈতিক সংকটের জেরে আবারও আলোচনার টেবিলে বসতে বাধ্য হয়েছে তালিবরা।
তালিবানের উপর চাপ বাড়িয়ে গত আগস্ট মাসে কাবুলকে দেওয়া আর্থিক মদত বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করে বিশ্ব ব্যংক। তার আগে আফগানিস্তানকে আর্থিক সাহায্য বন্ধ করার কথা জানিয়েছিল আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল (IMF)। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সরকার আমেরিকার সেন্ট্রাল ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ এবং অন্যান্য মার্কিন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে রাখা আফগানিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক, দ্য আফগান ব্যাংকের প্রায় ৯৫০ কোটি ডলার ‘ফ্রিজ’ করে দেয়, যাতে ওই অর্থ তালিবান তুলে নিতে না পারে।
উল্লেখ্য, ২০০১ সালের ৯/১১ হামলার পর ‘মিশন আফগানিস্তান’ শুরু করে মার্কিন ফৌজ। তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ জুনিয়রের নেতৃত্বে বিশ্ব সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করে আমেরিকা। আফগান মিলিশিয়াদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে মাস খানেকের লড়াইয়ের পর তালিবানকে কাবুল থেকে বিতাড়িত করে মার্কিন ফৌজ। কিন্তু তারপর পরিস্থিতি পালটেছে। প্রায় দুই দশক কেটে গেলেও তালিবানের বিনাশ সম্ভব হয়নি। কিন্তু গৃহযুদ্ধে বিধ্বস্ত দেশটিকে ফের গড়ে তুলতে প্রচুর আর্থিক অনুদান দেওয়া শুরু করে ভারত, আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলি।যদিও আখেরে লাভ কিছুই হয়নি। আমেরিকার প্রস্থানে আবারও সংকটে আফগানভূম।