সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: খুনের প্রত্যক্ষদর্শী নিরঞ্জন বৈষ্ণবের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনার পর তপন কান্দু হত্যাকাণ্ডের পুনর্নির্মাণ করল সিবিআই (CBI)। বুধবার পুরুলিয়ার ঝালদা-বাঘমুন্ডি সড়কপথে গোকুলনগর গ্রামের কাছে সকাল ন’টা নাগাদ এই পুনর্নির্মাণ (Reconstruction) করান সিবিআই আধিকারিকরা। একেবারে মোটরবাইকে তিন আততায়ী-সহ নিহত কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দুকে সাজিয়ে কাঠের বন্দুক দিয়ে গুলি ছোঁড়া হয়। এই পুনর্নির্মাণের সময় চার প্রত্যক্ষদর্শী ছাড়াও তার ভাইপো মিঠুন কান্দু ও ঝাড়খণ্ডের রাঁচির হাসপাতালের এক চিকিৎসক ছিলেন। যিনি নিহত কাউন্সিলরের ময়নাতদন্ত করেন। এছাড়া এদিন একাধিক জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। কয়েকদিন আগেই এই খুনের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী তথা নিহত তপন কান্দুর বাল্যবন্ধু নিরঞ্জন বৈষ্ণবের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনার পুনর্নির্মাণ হয় তাঁর বাড়িতেই।
এদিন পুনর্নির্মাণের সময় চার প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন – প্রদীপ চৌরাশিয়া, যাদব রজক, সুভাষ গড়াই ও সুভাষ কর্মকার। ১৩ মার্চ খুনের ঘটনার দিন গুলির আওয়াজে এই প্রত্যক্ষদর্শীদের মধ্যে সকলেই রাস্তা থেকে দূরে নিরাপদ স্থানে ঝাঁপ দিয়েছিলেন। কিন্তু প্রদীপ চৌরাশিয়ার পায়ে চোট থাকায় তিনি সেখানেই দাঁড়িয়ে ছিলেন। আততায়ীরা ভেবেছিল তিনি হয়তো প্রতিরোধ করছেন। তাই তাকেও লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে আততায়ীরা। কিন্তু তা মিস ফায়ার হয়ে যায়।
[আরও পড়ুন: ‘হিন্দুরা নয়, কারা দাঙ্গা করে সবাই জানে’, জাহাঙ্গিরপুরীর হিংসায় ববিতা ফোগতের টুইটে বিতর্ক]
পুনর্নির্মাণে তা হুবহু করে দেখানো হয়। বাইকে যে তিন আততায়ী ছিলেন, তার মধ্যে যিনি বাইক চালাচ্ছিলেন, তার মাথায় ছিল হেলমেট। বাকি দু’জনের অবশ্য কোনও হেলমেট ছিল না। সিবিআইর হাতে যা তথ্য এসেছে তাতে তিন ‘ভাড়াটে খুনি’র মধ্যে শুটারের (Shooter) মাথাতেই হেলমেট ছিল। এদিন প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে এই পুনর্নির্মাণ চলে। সেই সঙ্গে ওই এলাকায় মাপজোক করার পাশাপাশি যে গুলির খোল এখনো পাওয়া যায়নি তার খোঁজ চলে।
[আরও পড়ুন: আইপিএলে করোনার থাবা, এবার আক্রান্ত দিল্লির এই তারকা ক্রিকেটার]
এদিন দ্বিতীয়ার্ধে এই ঘটনায় ধৃত তৃণমূল (TMC) নেতা সত্যবান প্রামাণিকের হোটেলের বিভিন্ন কর্মীদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। সাধারণ কর্মী থেকে রাঁধুনিদের বেস ক্যাম্পে নিয়ে এসে টানা জিজ্ঞাসাবাদ চলে। একইভাবে প্রত্যক্ষদর্শী নিরঞ্জন বৈষ্ণবের দাদা নেপাল বৈষ্ণবকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়l জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় প্রাইভেট টিউটর নিরঞ্জনের ছাত্র-ছাত্রীদের এক অভিভাবককেও।