সুকুমার সরকার, ঢাকা: বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার পুত্র তারেক রহমানের নির্দেশেই ছাত্র আন্দোলনে রক্তাক্ত হয়েছে বাংলাদেশ! সরকারী চাকরিতে কোটাবিরোধী আন্দোলনের হোতা হিসাবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেককে উল্লেখ করেছেন আওয়ামি লিগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বিদেশমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ। তিনি বলেন, বিদেশ থেকেই ছাত্রদের প্রতিবাদে হিংসা ছড়ানোর জন্য দলের নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন তারেক। এমনকী এনিয়ে খালেদাপুত্রের ভয়েস বার্তাও হাতে এসেছে হাসিনা সরকারের হাতে।
শুক্রবার দুপুরে ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘দেশ ও স্বাধীনতা বিরোধী সন্ত্রাস নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের শপথ’শীর্ষক আলোচনা সভায় বিদেশমন্ত্রী যোগ দিয়েছিলেন। সেখানে বক্তৃতা রাখার সময় হাসান বলেন, "তারেক রহমানের ভয়েস সরকারের হাতে এসেছে। সে বলছে যে, কারফিউ ভঙ্গ করো, না হলে পদ ছাড়ো। বিএনপির এক নেতাকে বলেছে, তোমরা আন্দোলনে ঢুকে যাও, নৈরাজ্য সৃষ্টি করো। এভাবে কোনও রাজনৈতিক দল দেশের ক্ষতি করতে পারে না।"
হাসান মাহমুদ বলেন, "আজ এমন একটা সময়ে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে, যখন স্বাধীনতা বিরোধীদের দ্বারা দেশ আক্রান্ত। বাংলাদেশ টেলিভিশন স্থাপিত হয়েছে ১৯৬৪ সালে। কিন্তু বাংলাদেশের ইতিহাসে বিটিভিতে কখনও হামলা, ভাঙচুর হয়নি। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বিটিভির কিছু আধিকারিককে হত্যা করেছিল। কিন্তু কখনও বিটিভিতে হামলা হয়নি। দুর্যোগকালীন সময়ে মানুষ যে মন্ত্রকে ছুটে যায়, সেই ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রকে ভাঙচুর চালিয়েছে তারা। ঢাকাবাসীর গর্ব, দেশবাসীর গর্ব মেট্রোরেল জ্বালিয়ে দিয়েছে। আমরা প্রথম থেকেই বলে এসেছি, সর্বোচ্চ আদালতের মাধ্যমে সমাধান হবে। আমরা শেষ পর্যন্ত দেখেছি সর্বোচ্চ আদালতের মাধ্যমেই সমাধান হয়েছে। শিক্ষার্থীরা যা চেয়েছিল, তার থেকে বেশিই পেয়েছে। কোটা থাকলেও সবাইকে মেধার মাধ্যমে যোগ্যতা প্রমাণ করতে হয়। কিন্তু সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের ভুল বোঝানো হয়েছে। যদি শিক্ষার্থীরা একটু ধৈর্য ধরতো, তাহলে বিএনপি-জামাত এই সুযোগটা পেত না।"
[আরও পড়ুন: ছাত্র আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশ টেলিভিশন ভবন দেখে হাসিনার চোখে জল]
বলে রাখা ভালো, খালেদা জিয়ার পুত্র তারেক রহমানকে লন্ডন থেকে ধরে এনে শাস্তি দেওয়া হবে। এমনই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিদেশে বসেই বাংলাদেশের বুকে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যকলাপের হুকুম দেন তারেক। এই অভিযোগ আগে একাধিকবার এনেছে আওয়ামি লিগ।
উল্লেখ্য, শাসকদল আওয়ামি লিগের অভিযোগ, এই ছাত্র আন্দোলনে মুখোশের আড়ালে উসকানি দিয়েছে ও সশস্ত্রভাবে অংশগ্রহণ করেছে জামাত ও বিএনপি। যার ফলে এখনও পর্যন্ত ঝরেছে ১৯৭টি প্রাণ। হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে বহু মানুষের। জঙ্গি-জামাত ও বিএনপির নাশকতা ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড প্রতিরোধ করতে না পারাকে সাংগঠনিক দুর্বলতা হিসেবে মেনে নিয়েছে আওয়ামি লিগ। যুবলিগ, ছাত্রলিগ,আওয়ামি লিগ, স্বেচ্ছাসেবক লিগ, কৃষক লিগ, যুব মহিলা লিগ, মহিলা আওয়ামি লিগ-সহ সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সমন্বয়হীনতা কাটিয়ে ওঠার নির্দেশনা দিয়েছেন হাসিনা। একই সঙ্গে দায়িত্বশীল পদে থেকে দলের সংকট মুহূর্তে গা ঢাকা দেওয়া নেতা এমনকী দলের সাংসদ-সহ প্রভাবশালী যাঁরা বিদেশে পাড়ি দিয়েছেন তাঁদের তালিকা করার নির্দেশনা দিয়েছেন আওয়ামি লিগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।