ধনরাজ ঘিসিং, দার্জিলিং: পুজোয় বোনাস নিয়ে মালিক-শ্রমিক পক্ষের 'দরাদরি', মতানৈক্য। সপ্তাহের প্রথম দিন দার্জিলিংয়ের চা বলয়ে ১২ ঘণ্টা ধর্মঘটের ডাক দিলেন শ্রমিকরা। আর তাঁদের ডাকা ধর্মঘটের জেরে সোমবার সকাল থেকে কার্যত স্তব্ধ দার্জিলিং। চা বাগানগুলি তো বটেই, পাহাড়ি শহরের জনবহুল স্থানও কার্যত শুনশান। চা শ্রমিকদের দাবিকে সমর্থন জানিয়েছে অনীত থাপার দল ভারতীয় গোর্খা গণতান্ত্রিক মোর্চা। ফলে শ্রমিকদের এই প্রতিবাদ আরও কিছুটা অক্সিজেন পেল বলে মনে করা হচ্ছে।
চা শ্রমিকদের ধর্মঘটে শুনশান পাহাড়। নিজস্ব চিত্র।
শ্রমিকদের দাবি, ২০ শতাংশ হারে দিতে হবে পুজোর বোনাস। আর মালিকপক্ষের সিদ্ধান্ত, ২০ নয়, ১৩ শতাংশ বোনাস দেওয়া হবে। এনিয়ে আগেও একাধিকবার আলোচনা হয়েছে উভয়পক্ষের। দুজনেই নিজ নিজ দাবিতে অনড়। দাবি আদায়ে তাই এবার কাজকর্ম বন্ধ রেখে ১২ ঘণ্টা ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে চা শ্রমিক সংগঠনগুলি। যার জেরে সকাল থেকে চা বাগানের দরজা পর্যন্ত খোলেনি। দার্জিলিংয়ের জনবহুল ম্যাল একেবারে ফাঁকা। এদিকে, গরুবাথানের সাপ্তাহিক হাটও বসেনি। যার জেরে বড়সড় ক্ষতির আশঙ্কা থাকছে। তবে শ্রমিক স্বার্থে এই ধর্মঘটে শামিল হয়েছেন সকলেই।
কালিম্পংয়ে অবশ্য ধর্মঘটের প্রভাব পড়েনি। স্বাভাবিক জনজীবন। নিজস্ব ছবি।
চা শ্রমিকদের এই ধর্মঘটের জেরে সমস্যায় পড়েছেন পর্যটকরা। বেড়াতে গিয়ে আটকে পড়েছেন। পাহাড়ে থেকে সমতলে কোনও গাড়ি ওঠানামা করছে না। কোনও কোনও জায়গায় রাস্তা অবরোধ করছেন শ্রমিকরা। তবে পাহাড়ে ধর্মঘট হলেও কালিম্পংয়ে এতটা প্রভাব পড়েনি। বেলার দিকে এখানকার দোকানপাট খুলতে শুরু করে। স্কুল, কলেজও স্বাভাবিক। সকাল থেকে কালিম্পং বাস টার্মিনাস এলাকায় বাস, গাড়ির জন্য হাঁকাহাঁকির চেনা ছবিটা দেখা গেল এদিন।
উল্লেখ্য, পাহাড়ে প্রায় ৮ বছর পর এভাবে ধর্মঘট চলছে। রবিবার শিলিগুড়িতে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আজ তাঁর ফেরার কথা। তবে তাঁর সফরের মাঝেই চা শ্রমিকদের ধর্মঘট পালন যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।