সম্যক খান, মেদিনীপুর: ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের মাধ্যমে অর্থনীতিকে শক্তিশালী করা প্রয়োজন। সেজন্য বেকার যুবক-যুবতীদের শিল্পোদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানালেন মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের প্রসারে ‘সিনার্জি’তে যোগ দিতে এসে এমনই মন্তব্য করেছেন তিনি। মানসবাবু বলেছেন, "বাংলায় আমরা সব থেকে বেশি ক্লাস্টার করেছি। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে এক নম্বরে পশ্চিমবঙ্গ।" বায়োডিগ্রেডেবল প্রোডাক্ট উৎপাদনের উপর জোর দিয়েছেন তিনি।
মন্ত্রীর দাবি, এতে গ্রামীণ অর্থনীতিতে বিপ্লব আসবে। অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন ক্ষুদ্র শিল্প দপ্তরের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহও। তিনি দাবি করেছেন, সিনার্জিতে যোগ দিয়েছেন তিন জেলা পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রামের অংশগ্রহণকারী উদ্যোক্তারা। তাঁদের কাছ থেকে ৪,১০০ কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রস্তাব পাওয়া গিয়েছে। গত কয়েক বছরে ব্যাঙ্কঋণ দেওয়ার প্রবণতা ও অতীতের কর্মক্ষমতাকে মাথায় রেখে আশা করা হচ্ছে, দুই মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলায় আগামী বছরগুলিতে মূল বিনিয়োগ ৮,২২০ কোটি টাকা গিয়ে দাঁড়াবে। যার ফলে প্রায় এক লক্ষ লোকের কর্মসংস্থানের সম্ভাবনাও তৈরি হবে।
মন্ত্রীর কথায়, শিল্প সম্ভাবনা বাড়িয়ে তুলতে হবে। আর তাহলেই বাড়বে কর্মসংস্থান। ঘুচবে বেকারত্ব। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইচ্ছাতেই ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের প্রসারে সিনার্জির মাধ্যমে দুয়ারে দুয়ারে হাজির হয়েছে সরকার। শিল্পোদ্যোগীদের মুখ থেকে সমস্যা শুনে তৎক্ষণাৎ সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। চাকরি দিয়ে সবাইকে সন্তুষ্ট করা যায় না বলেই মন্তব্য করেছেন অন্যান্য বক্তারাও। চাকরির আশায় বসে না থেকে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প গড়ে অপরকে কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন তঁারা। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের প্রসারে ‘সিনার্জি’তে যোগ দিতে এসে ওই মন্তব্যই করেছেন তাঁরা।
দুই মন্ত্রী ছাড়াও হাজির ছিলেন জেলা সভাধিপতি প্রতিভা মাইতি, জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদরি, পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার, বিধায়ক দীনেন রায়, সুজয় হাজরা প্রমুখ। এদিন ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে সমন্বয় সাধনের জন্য তিন জেলা পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামকে নিয়ে সিনার্জি হয় জেলা পরিষদ হলে। কয়েকশো শিল্পোদ্যোগী হাজির ছিলেন। হাজির ছিলেন স্ব-সহায়ক দলের মহিলারাও। পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথিতে কাজুবাদাম প্রক্রিয়াকরণ ক্লাস্টারের জন্য একটি সাধারণ পরিষেবা কেন্দ্র স্থাপনের জন্য ২.৪৬ কোটি টাকার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ওই কেন্দ্রে কাজু প্রক্রিয়াকরণের সঙ্গে যুক্ত প্রায় ১৩০০ জন উপকৃত হবেন।
আবার পশ্চিম মেদিনীপুরের সবং ব্লকের অধীন রুইনানে ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে মাদুর হাব তৈরি হয়েছে। যেখানে ওই ব্লকের কুড়ি হাজারেরও বেশি কারিগর ওই হাবের সুবিধা পাচ্ছেন। পাশাপাশি পশ্চিম মেদিনীপুরেরই দাসপুর দুই ব্লকের ফরিদপুরে ৭.৭৮ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি গোল্ড হাব তৈরি হচ্ছে। এতে প্রযুক্তি, দক্ষতা, উৎপাদনশীলতা এবং গুণমান বাড়বে। প্রায় ১,২৫০ কারিগর এখানে নিরাপদ ও দূষণমুক্ত পরিবেশে কাজ করার সুযোগ পাবেন। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প গঠনের ক্ষেত্রে ঝাড়গ্রাম জেলা যে দুই মেদিনীপুর থেকে অনেকটা পিছিয়ে আছে। তাও এদিন স্মরণ করিয়ে দেন মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ।