দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: সুন্দরবনের নদী ও খাঁড়িগুলিতে পঞ্চান্নটি কুমির ছাড়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করল বনদপ্তর। বৃহস্পতিবার সুন্দরবনের (Sundarban) বিদ্যা ফরেস্টের স্টোরখালি খালে ছাড়া হল ছ’টি কুমির। এর ফলে সুন্দরবনের নদী ও খাঁড়িগুলিতে জীববৈচিত্র্যে রক্ষা হবে বলেই মত বনদপ্তরের আধিকারিকদের।
১৯৭৬ সালে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ভগবতপুর কুমির প্রকল্প তৈরি হয়েছিল। এরপর থেকেই প্রতি চারবছর অন্তর সুন্দরবনের নদী ও খাঁড়িগুলিতে কুমির ছাড়া হয়ে থাকে। সেই মতো বৃহস্পতিবার কুমির ছাড়া হল বিদ্যা ফরেস্টের স্টোরখালি খালে। তার মধ্যে পাঁচটি ভগবতপুর এবং একটি কুমির সজনেখালি থেকে আনা হয়েছে। বনদপ্তর সূত্রে খবর, ২০১৮ সালে সর্বশেষ কুমির গণনায় দেখা গিয়েছে, সুন্দরবনের নদী ও খাঁড়িগুলিতে মোট কুমিরের সংখ্যা ২৪০। তার মধ্যে ১৪১টি কুমিরকে গণনার সময় সরাসরি দেখতে পাওয়া গিয়েছিল। প্রত্যক্ষভাবে অনুসন্ধান করে বাকি কুমিরগুলির হদিশ পাওয়া যায়। ১৯৭৯ সাল থেকে সুন্দরবনের নদীগুলিতে মোট ৬২৯টি কুমির ছাড়া হয়েছে। ভগবতপুরের প্রকল্পে কুমিরের জন্মের পর থেকে চার বছর পর্যন্ত সেটিকে সেখানেই রাখা হয়। পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে শুরু করলে কুমিরগুলিকে সুন্দরবনের নদীতে ছাড়া হয়।
[আরও পড়ুন: ফেব্রুয়ারিতে নন্দীগ্রাম যেতে পারেন ‘প্রার্থী’ মমতা, ভোটযুদ্ধের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত তৃণমূল]
রাজ্যের মুখ্য বনপাল বিনোদকুমার যাদব বলেন, “সুন্দরবনের নোনাজল এলাকায় ভারসাম্য রক্ষার জন্য কিছুদিন পরপর কুমির ছাড়া হয়। এবছর মোট ৫৫টি কুমির ছাড়া হবে। তার মধ্যে এদিন ছ’টি কুমির ছাড়া হল।”
সুন্দরবনের নদীগুলিতে দূষণ বেড়ে যাওয়ায় সমস্যা হচ্ছে কুমিরের প্রজননে। পাশাপাশি, নৌকা-সহ বিভিন্ন জলযান চলাচল বেড়ে যাওয়ার প্রভাবও পড়ছিল কুমিরের প্রজননে। বহু ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, ডিম পাড়ার সময় কুমির ঢুকে পড়ছে লোকালয়ে। পরে বনদপ্তর সেই কুমিরগুলিকে উদ্ধার করে পুনরায় ছেড়ে দিয়েছে সুন্দরবনের নদীগুলিতে। আগে পাথরপ্রতিমা, কুলতলি এবং ঝড়খালিতে কুমির লোকালয়ে ঢুকে পড়ার মতো ঘটনা ঘটেছে। তাই সুন্দরবনের নোনাজল এলাকায় প্রজনন বাড়াতেই নতুন করে কুমির ছাড়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করল বনদপ্তর।