ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: ক্ষমতার বাইরে তো বটেই ভোটব্যাংকেও ধস নেমেছে৷ ‘সংকট’ থেকে মুক্তি পেতে তাই আবারও জনসম্পর্ক তৈরির উপর গুরুত্ব দিলেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র৷
দীর্ঘদিন পর দলীয় মুখপত্রে রবিবার সূর্যকান্ত মিশ্র লিখেছেন, “এখনও পর্যন্ত আমরা এ রাজ্যের মানুষকে কেন এই সত্য বোঝাতে পারছি না। মানুষকে সঙ্গে না নিয়ে আমরা কোনও পরিবর্তনই আনতে পারব না।” এমন স্বীকারোক্তির পাশাপাশি নিবন্ধে সূর্যকান্ত মিশ্র জনগণের সঙ্গে গভীরভাবে মেশার জন্য পার্টি কর্মীদের কাছে আবারও আবেদন করেছেন৷ তাঁর কথায়, “পার্টির রাজনৈতিক স্লোগান যতক্ষণ না জনগণ গ্রহণ করছে ততক্ষণ পার্টি জনগণকে রাজনৈতিক নেতৃত্ব দিতে পারবে না।”
[মিষ্টি খেতে ভালবাসেন? তবে একবার ঢুঁ মারতেই হবে ইকো পার্কে]
বস্তুত রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, সূর্যবাবুর এদিনের মন্তব্য থেকে একটা বিষয় স্পষ্ট, রাজ্যে সিপিএমের স্লোগান এখন আর অধিকাংশ মানুষ তেমনভাবে গ্রহণ করছে না। নিজের বক্তব্যের পক্ষে সূর্যবাবু পরের লাইনেই লিখেছেন গত চার বছর ধরে পার্টি তৃণমূল ও বিজেপি বিরোধী স্লোগান দিয়ে চলেছে৷ “কিন্তু জনগণ তার নিজস্ব অভিজ্ঞতায় শেখে।” অর্থাৎ তৃণমূল ও বিজেপি বিরোধী স্লোগান যে মানুষ গ্রহণ করছে না তা কার্যত স্পষ্ট তাঁর এই বক্তব্য থেকে।
“আক্রমণ বহুমুখী, গণপ্রতিরোধই একমাত্র বিকল্প” শীর্ষক এই নিবন্ধে সূর্যকান্ত মিশ্র লিখেছেন, “শুধু রাজনৈতিক নেতৃত্বে হবে না, সাংগঠনিক নেতৃত্বও চাই।” সিপিএম সূত্রে খবর, আট বা নয়ের দশকে রাজ্য সিপিএমে যেভাবে সাংগঠনিক নেতৃত্বকে অগ্রাধিকার দেওয়া হত তা এখন আর নেই বললেই চলে। আর সেই কারণেই যোগ্য সাংগঠনিক ও রাজনৈতিক নেতার অভাবে ক্রমশ সমর্থকের সংখ্যা কমছে। ভোটব্যাংকেও তাই ধস নেমেছে। পাশাপাশি পার্টি কর্মীদের উদ্দেশে সূর্যবাবুর বার্তা, “তত্ত্বজ্ঞানে চলবে না তত্ত্বকে প্রয়োগ করতে হবে।” পার্টিতে নিষ্ক্রিয় কর্মীদের যে কোনও জায়গা নেই দলীয় মুখপত্রে তা আরও একবার স্পষ্ট করে দিয়েছেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক। তাঁর প্রশ্ন, “যারা পার্টিতে থেকেও লড়াইয়ের ময়দানে নেই, তাঁরা পার্টিতে কেন আছেন সেই প্রশ্ন করতে হবে।” পার্টি নেতৃত্বের নিচুতলার উপর দায় চাপানোর অভ্যাস বদল করতে বলেছেন সূর্যবাবু। এদিনই দক্ষিন ২৪ পরগনা জেলা সিপিএম কর্মীদের সঙ্গে সাংগঠনিক ইস্যুতে আলোচনা করেন সূর্যকান্ত মিশ্র ও সুজন চক্রবর্তী৷
The post পার্টির রাজনৈতিক স্লোগান গ্রহণ করছে না জনগণ, স্বীকারোক্তি সূর্যকান্তর appeared first on Sangbad Pratidin.