শ্রীকান্ত পাত্র, ঘাটাল: বহু বছর পেরিয়ে গেলেও আজও ডাকাতদের বংশধরদের দেওয়া ছাগ রক্তেই সন্তুষ্ট হন পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরের চাঁদপুর গ্রামের সেনবাড়ির কালী মা। তাই প্রতি বছর কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে কালীপুজোয় প্রথম ছাগ বলি দেন ওই গ্রামের এককালের ডাকাতদের বংশধররা। পুজোয় মেতে ওঠে গোটা গ্রাম।
কথিত আছে, সেন পরিবারে প্রাচীন কাল থেকে তামার যন্ত্রে কালীপুজো হত। সেইসময় তাঁদের বাড়ির অদূরে থাকত এক ডাকাত পরিবার। তাঁরা মাটির মূর্তি নির্মাণ করে বেশ জাঁকজমক করেই কালীপুজো (KaliPuja 2020) করতেন। সেন পরিবারের এক কর্তার কথায় একসময় ডাকাতরা ডাকাতি ছেড়ে দিয়েছিল বলে জনশ্রুতি। তারপর থেকে ডাকাতদের পুজোর সঙ্গে জুড়ে যায় সেন বাড়ির কালীপুজো। সেই থেকে ডাকাতদের অনুরোধে সেন বাড়িতে তামার যন্ত্রের বদলে মাটির মূর্তি নির্মাণ করে পুজো শুরু হয়। প্রথম ছাগ বলি দিতেন ওই ডাকাতরা। আজও সেন পরিবারে মাটির মূর্তি নির্মাণ করেই পুজো হয়। এখনও সেই ডাকাতদের বংশধররাই প্রথম বলি দেন ছাগ। তারপর একে একে হয় বলি।
[আরও পড়ুন: কালীপুজোর রাতে কুয়ো থেকে মুক্তি পায় প্রেতের দল! জানুন আসানসোলের এই মন্দিরের কাহিনি]
কথিত আছে, সেন পরিবারের পূর্বপুরুষ নীলাম্বর সেন নদিয়া (Nadia) জেলা থেকে গিয়ে মেদিনীপুরের চাঁদপুর নামক জনপদে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। তিনিই তামার যন্ত্রে কালীপুজো শুরু করেন। সালটা বাংলা ৯৬২ বঙ্গাব্দ। তারপর থেকেই সেন বাড়িতে সারা বছরই মায়ের পুজো হয়। সেন পরিবারের দাবি, দেবী খুবই জাগ্রত। মায়ের মন্ত্রঃপুত পাতা জন্ডিস রোগ সারিয়ে তুলতে পারে। জানা গিয়েছে, পুজোর দিন হাজারেরও বেশি ভক্ত জড়ো হন চাঁদপুরের সেন বাড়িতে। তবে এ বছর করোনা আবহে ভক্তদের মন্দিরে প্রবেশ নিষিদ্ধ। সেন পরিবারের প্রবীণ সদস্য ওঁকারনাথ সেন বলেন, “করোনা আবহে আমরা মানতকারীদের মন্দিরে ঢুকতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে অন্যান্য বছরের মতো প্রথা মেনে মায়ের পুজো হবে।”