হুজুরিমল কোম্পানির কাছ থেকে দানরূপে যে জমি পান, তা তিনি ব্যবহার করেননি৷ বোধহয় দানের জমিতে মন্দিরাদি প্রতিষ্ঠা করলে পুণ্য হবে না, এই ভেবেই তিনি নিজের টাকায় গঙ্গার ঘাট ও চাঁদনি তৈরি করিয়ে দেন ১৭৭০-১৭৭১ সালের মধ্যে৷
কালীঘাটে কালী মন্দিরের কাছেই কালীর ঘাট৷ ইটের তৈরি এই ঘাটের যে ছাউনি, তার গায়ে ডানদিকে থামের উপরে শ্বেতপাথরের ফলকে লেখা– ‘শ্রীশ্রী কালীমাতা চিত্রগুপ্ত বংশোদ্ভব শ্রীবাস্তবাকায়সু লালা দুর্গাপ্রসাদের জ্যেষ্ঠপুত্র লালা বামচরণের স্বর্গগতা পত্নী চিরজ্ঞি দেবীর অনুমত্যানুসারে লালা লছমনপ্রসাদ ও তাঁহার জ্যেষ্ঠ পুত্র শ্রী পঞ্চমরাম কর্তৃক সর্বসাধারণের স্নানের জন্য এই ঘাট প্রতিষ্ঠিত হইল৷ সন ১৩৩২ সাল ১০ জ্যৈষ্ঠ একাদশী তিথি৷’
ফলকের একেবারে নিচে ছোট হরফে লেখা ইঞ্জিনিয়র জ্ঞানেন্দ্রনাথ রায়৷
এই ঘাটটির অবস্থা অত্যন্ত অপরিচ্ছন্ন৷ নোংরা দুর্গন্ধযুক্ত কালো জলে যখন-তখন ভেসে থাকতে দেখা যায় মরা জীবজন্তু৷ বাঁ-পাশে খেয়া পারাপারের ব্যবস্থা নৌকোর পর নৌকো সাজিয়ে৷ এভাবে কালীঘাট থেকে চেতলা যাওয়া যেত পাঁচ পয়সা দিয়ে৷
ঘাটের বাঁ-দিকে সাবিত্রী সত্যবান, শনিঠাকুরের মূর্তি৷ শ্রাদ্ধ করার ছোট ঘর৷ ডানদিকে হনুমান ও সাবিত্রী-সত্যবানের মূর্তি৷ ঘাটে ঢোকার মুখে ডানদিকে দেবীদত্ত দুধওয়ালা ধর্মশালা৷ আর দু’পাশেই কিছু বেআইনি দখলদার ঝুপড়ি ও ঘরবাড়ি৷
আদিগঙ্গার পূর্বদিকে মহীশূর রাজঘাট ও উদ্যানের ঘাটও এখন আর জনসাধারণের ব্যবহারের উপযোগী নয়৷ রাজঘাটের বাঁ-দিকে কেওড়াতলা মহাশ্মশান কালীঘাট ছুঁয়ে এই গঙ্গা (আদিগঙ্গা) টালিগঞ্জ হয়ে সাগরে গিয়ে মিলেছে৷
The post কালীর ঘাটের গোপন কথা appeared first on Sangbad Pratidin.