গৌতম ব্রহ্ম, পানাজি: ক্যান্সার থেকে অনিদ্রা, ওসিডি থেকে শীঘ্রপতন, হেপাটাইটিস থেকে এইডস, বহু রোগেরই ওষুধ গাঁজা থেকে তৈরির নিদান রয়েছে আয়ুর্বেদে। কিন্তু নিষেধাজ্ঞার পাহাড় টপকে হাতে গোনা দু-একটি সংস্থাই শুধু ওষুধ তৈরি করছিল। এবার বিধিনিষেধ শিথিল করার দাবি উঠল ওয়ার্ল্ড আয়ুর্বেদ কংগ্রেসে। যা সমর্থন করল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) ও আয়ুর্বেদের নিয়ামক গবেষক সংস্থা CCRAS।
পানাজিতে ৮ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়েছে আয়ুর্বেদের এই মহাকুম্ভ। সেখানেই হু পরিচালিত কনক্লেভে ওষুধের উপকরণ হিসেবে গাঁজা থেকে নিষেধাজ্ঞা সরানোর দাবি তুললেন একাধিক দেশের প্রতিনিধি। শ্রীলঙ্কা, ইন্দোনেশিয়া, মালদ্বীপ, জাপান, বাংলাদেশ- কে নেই তালিকায়! CCRAS-এর অধিকর্তা ডা. রবিনারায়াণ আচার্য জানালেন, টাটা মেডিক্যাল সেন্টারের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে গাঁজা থেকে তৈরি ওষুধ ক্যান্সার রোগীদের উপর প্রয়োগ করা হয়েছিল। তাতে ভাল ফল মিলেছে। পেন কিলার হিসাবে এই ভেষজ ব্যবহার করা যেতে পারে।
[আরও পড়ুন: ১২ ডিসেম্বর পার, ফাঁকা বুলিই সার! এবার শুভেন্দুর মুখে ‘জানুয়ারি তত্ত্ব’]
আয়ুর্বেদ কংগ্রেসের পাশাপাশি পানাজিতে আয়োজন করা হয়েছিল ৪০০ স্টলের আরোগ্য এক্সপো। কেন্দ্রীয় আয়ুর্বেদ অনুসন্ধান সংস্থানের সহায়ক নির্দেশক ডা. তুষারকান্তি মণ্ডল জানালেন, গাঁজা গাছকে সংস্কৃতে বলে ভাং। এর পাতা ও কাণ্ডের নির্যাস ওষুধ হিসেবে ব্যবহারের নিদান রয়েছে চরক, সুশ্রুত সংহিতা ও অস্টাঙ্গ হৃদয়ে। কিন্তু নার্কোটিক ড্রাগসের তালিকাভুক্ত হওয়ায় ওষুধ তৈরির উপকরণ হিসাবে পেতে খুবই সমস্যা হয়। আবগারী দপ্তর থেকে সংগ্রহ করতে বিস্তর কাঠখড় পোড়াতে হয়। গুণগত মানও ঠিক রাখা যায় না। তাই ওষুধ তৈরির স্বার্থে সীমাবদ্ধ উপায়ে চাষের অনুমতি দিলে নিয়ম শিথিল হলে ভাল হয়। রাজীব গান্ধী আয়ুর্বেদ হাসপাতালের অধ্যক্ষ ডা. তাপস মণ্ডল জানালেন, ওষুধ হিসেবে গাঁজার ব্যবহার বহুমুখী। খিদের সমস্যা, ঘুমের সমস্যা, বমি, অবসাদের মতো নানা রোগে বড় ভূমিকা পালন করতে পারে গাঁজা।
উল্লেখ্য, আরোগ্য এক্সপোতে স্টল রয়েছে যশ কোচার। যিনি পেশায় আইনজীবীও। যশের বাবা আয়ুর্বেদ চিকিৎসক। আইন বাঁচিয়ে যশ এখন গাঁজা থেকে একাধিক ওষুধ তৈরি করে বিক্রি করছেন। জানান, নিয়মের গেরোয় কাঁচা মাল পেতে খুব সমস্যা হয়। নিয়ম শিথিল হলে খুব ভাল হয়।