সম্প্রতি বাজারে এসেছে ওলা ইলেকট্রিকের ইনিশিয়াল পাবলিক অফার। বিশেষজ্ঞদের অভিমত, আগামিদিনে পুরনো এবং দূষণ-বৃদ্ধিকারী ফসিল ফুয়েলে চলা যানবাহন ত্যাগ করে বাজার দখলে রাখবে ইলেকট্রিক ভেহিকল তথা ইভি। সেই বাজার ধরতেই এখন সাজ সাজ রব চারদিকে। লিখছেন লগ্নি পরামর্শদাতা নীলাঞ্জন দে
ওলা ইলেকট্রিকের ইনিশিয়াল পাবলিক অফার নিয়ে আগ্রহ বেশ চোখে পড়ার মতো। ঘটনাবহুল আইপিও মার্কেটে এমনিতেই একাধিক বড় ইস্যু আসার কথা, তবে ওলা-র প্রস্তাব বেশ তাৎপর্য্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। পুরোনো, দূষণ-বাড়ানো ফসিল ফুয়েল ছেড়ে ইভি (ইলেকট্রিক ভেহিক্যাল) নেওয়া, এই ট্রেন্ড ভবিষ্যতে আরও জোর কদমে বাড়বে, এমনই বিশ্বাস করেন বিশেষজ্ঞরা।
টু-হুইলার জগতে তাই ইতিমধ্যেই আলোড়ন উঠেছে, কারণ বাজার ধরতে নেমে পড়েছে নতুন-পুরনো মিলিয়ে একগুচ্ছ সংস্থা। ওলা ইলেকট্রিকের নাম প্রথম সারিতেই আছে বলে বিনিয়োগকারীদের অভিমত। কম খরচে (ফিক্সড এবং রানিং কস্ট, এই দুইয়ের প্রসঙ্গেই সকলে সরব) স্কুটার চালাতে চান যাত্রীরা, তাতে অবশ্যই সাশ্রয় হবে ব্যবহারকারীর। ভবিষ্যত ভাল, তাই ব্যবসা বাড়াতে অসুবিধা হবে না এই নিউ জেনারেশন কোম্পানির ক্ষেত্রে। আজকের আইপিও তাই খুব প্রাসঙ্গিক, লগ্নিকারীদের জন্য এখানে ভ্যালুয়েশন বৃদ্ধি সময়ের অপেক্ষা।
[আরও পড়ুন: ইউনিট লিংকড ইনসিওরেন্স প্ল্যান কী? বিস্তারিত জানুন বিনিয়োগ পরামর্শদাতার থেকে]
কয়েক মাস আগে সেবির দপ্তরে পাঠানো ড্রাফট অফার ডকুমেন্টের ভিত্তিতে কয়েকটি জরুরি কথা:
১. এই অফারটি “ফ্রেশ ইস্যু” এবং “অফার ফর সেল”।
২. প্রাইস ব্যান্ড: ৭২-৭৬ টাকা প্রতি শেয়ার
৩. প্রতিটি ইনভেস্টর একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক মিনিমাম বিড করতে পারবেন।
৪. সংস্থাটি মোট ৬,১৪৬ কোটি টাকা মোবিলাইজ করতে চাইছে। এটি এই বছরের সবথেকে বড় অফার।
৫. প্রাইস ব্যান্ডের উপরের দিকে, ওলা ইলেকট্রিকের ভ্যালুয়েশন দাঁড়াবে ৩৩,৫০০ কোটি টাকার কাছাকাছি। (ডলার ৪ বিলিয়ন)
৬. অফারের পর প্রোমোটারদের হোল্ডিং এখনকার ৪৫% থেকে নেমে আসবে, গিয়ে দাঁড়াবে প্রায় ৩৭%।
৭. ইস্যু বন্ধ হবে : ৬ই আগস্ট, ২০২৪
৮. লিস্টিং হবে : ৯ই আগস্ট, ২০২৪
৯. দেশের বৃহত্তর টু-হুইলার নির্মাতা
১০. সরকারী নীতির সহায়তা
১১. সরাসরি গ্রাহকদের কাছে পৌঁছানোর চ্যানেল
ব্রোকিং সংস্থাগুলো ইতিমধ্যেই গ্রাহকদের আইপিওটি নিয়ে জানিয়েছে। বিভিন্ন ব্রোকারদের বার্তাগুলো দেখে যা জানা যাচ্ছে, তার নির্যাস :
১. নূন্যতম লগ্নি : ১৪,৮২০ টাকা (১৯৫ শেয়ার)
২. সর্বোচ্চ লগ্নি : ১,৯২,৬৬০ টাকা (২,৫৩৫ শেয়ার)
৩. ৮ই আগস্ট শেয়ারগুলো ক্রেডিট হয়ে যাবে।
৪. রিটেল ইনভেস্টর যেন সব তথ্য জেনেই বিনিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নেন। সব মিলিয়ে ভাল ফল দেখাতে পারে এই স্টকটি।
৫. ইদানিং ইভি বা ব্যাটারি চালিত যানবাহনের প্রতি নজর দিচ্ছেন অনেকে। ভবিষ্যতে আরও অনেক ইভি রাস্তায় দেখা যাবে বলে বিশ্বাস করেন তাঁরা। এই পরিপ্রেক্ষিতে ইভির স্টকে আস্থা রাখার জন্য তাঁদের একাংশের সওয়াল খুব তাৎপর্যপূর্ণ।
উল্লেখ্য, এখনও ১০০ শতাংশ ইভি কোম্পানির সংখ্যা খুব কম, লিস্টেড শেয়ার যথেষ্ট সংখ্যক এখনই পাওয়াও যাবে না বলে বাজারের ধারণা। তবে ভবিষ্যতে এই পরিস্থিতি বদলাবে। সরাসরি স্টকে বিনিয়োগ না করতে চাইলে পরোক্ষভাবে, অর্থাৎ ফান্ডের মাধ্যমে, তাঁরা লগ্নি করতে পারবেন।
ইতিমধ্যেই ট্রান্সপোর্টেশান অ্যান্ড লজিস্টিক্স নিয়ে একাংশ আগ্রহী হয়েছেন। এমন ইঙ্গিতই দিচ্ছেন মিউচুয়াল ফান্ড সূত্র।