নব্যেন্দু হাজরা: সিনেমার পর্দায় গাড়ি চুরির ঘটনা হামেশাই দেখা যায়। কিন্তু শহর কলকাতায় একবারে পরিবহণ দপ্তরের অফিস থেকে আটক হওয়া প্রায় কোটি টাকার বিএমডব্লু (BMW) নিয়ে চম্পটের ঘটনা যে কোনও চিত্রনাট্যকেই ফেল করাবে। ঘটনার পর কেটে গিয়েছে সাত দিন। কিন্তু এখনও কোনও হদিশ মেলেনি ১১ লক্ষ টাকা ট্যাক্স বাকি থাকা দুধসাদা বিএমডব্লু গাড়ির (ডব্লুবি০৬জে৬৩৯৯)। গাড়ির চালকের নামে অভিযোগ দায়ের হয়েছে থানায়।
ঘটনাটি বিশ্বকর্মা পুজোর পরের দিনের। পরিবহণ দপ্তরসূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৯ সেপ্টেম্বর দুপুরে সায়েন্স সিটি মোড়ের কাছে এই বিলাসবহুল গাড়িটিকে চেকিংয়ের জন্য আটকায় কর্তব্যরত মোটর ভেহিক্যালস ইন্সপেক্টররা (এমভিআই)। কিন্তু চালক গাড়ি না থামিয়ে গতি বাড়িয়ে পালায়। তবে বেশিদূর যেতে পারেনি। ধাওয়া করে রুবি মোড়ের কাছেই গাড়িটিকে আটকানো হয়। কাগজপত্র পরীক্ষা করতে গিয়ে দেখা যায়, বিএমডব্লুটির ২০১৭ সাল থেকে ট্যাক্স বাকি। যার পরিমাণ ১০ লাখ ৯৭ হাজার টাকা। নেই ইনসিওরেন্স-সহ অন্যান্য কাগজপত্রও।
[আরও পড়ুন: ‘দীর্ঘায়ু হোন, সুস্থ থাকুন’, মনমোহনের জন্মদিনে বার্তা মোদির, শুভেচ্ছা INDIA শরিকদেরও]
এরপরই গাড়িটিকে আটক করা হয়। নিয়ে আসা হয় কসবা পরিবহণ ভবনে। আর তারপরই শুরু সিনেমা। প্রথমে গাড়িটিকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানান ওই চালক। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। গাড়ির চাবি নিয়ে নেন এমভিআইরা। বলা হয়, ট্যাক্সের বকেয়া টাকা মিটিয়ে গাড়ি ছাড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য। তাঁরা আবার অন্য গাড়ি চেকিং শুরু করেন, সেই সময় আচমকাই আটক বিএমডব্লুর চালক রিমোটের সাহায্যে গাড়ি স্টার্ট দিয়ে তা নিয়ে চম্পট দেন। দুই এমভিআই বাধা দিতে এসে ছিটকে পড়েন তাঁরা। তাঁদের অভিযোগ, যে গতিতে ওই চালক গাড়ি নিয়ে পালায়, তাতে আরেকটু হলে তাঁরা গাড়ির তলায় পড়তেন। তেমনই উদ্দেশ্য ছিল চালকের। ঘটনার পরই তড়িঘড়ি অভিযোগ জানানো হয় কসবা থানায়। তবে সোমবার পর্যন্ত হদিশ মেলেনি।
[আরও পড়ুন: ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্যভবনে শুভেন্দু, উঠল স্লোগান, পুলিশের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা]
জানা গিয়েছে লালবাজারের (Lalbazar) কাছে একটা কোম্পানির নামে প্রথমে ছিল গাড়িটি। তারপর তা বেচে দেওয়া হয়। গাড়িটি চালাচ্ছিল বেনিয়াপুকুরের বাসিন্দা কামরান আলম। তাঁর বাড়িতে যায় পুলিশ। কিন্তু ওইদিনের পর থেকে সে আর বাড়ি ফেরেনি। চালকের মোবাইলও সুইচড অফ। পরিবহণ দপ্তরের কর্তারা বলছেন, এভাবে আটক গাড়ি নিয়ে পালানোর ঘটনা অতীতে ঘটেনি এখান থেকে। আসলে এমভিআইরা গাড়ি আটক করে তার চাবি খুলে নিয়েছিলেন। বোঝেননি চালকের পকেটে গাড়ির রিমোট ছিল। দামি গাড়ির রিমোট থাকে। পরেরবার থেকে সতর্ক হয়ে যাবেন তাঁরা।