রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: সমুদ্র সৈকত বলতে দিঘা (Digha), মন্দারমণি (Mandarmani) বা তাজপুর (Tajpur) নয়। পুজোয় এবার নজর কাড়তে চলেছে কাঁথির দেশপ্রাণ ব্লকের দারিয়াপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কানাইচট্টার (Kanai Chatta) সমুদ্র সৈকত। পর্যটকদের জন্য আরও উন্নত পরিকাঠামো গড়ে তোলার কাজ শুরু করেছে পঞ্চায়েত সমিতি ও সংশ্লিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েত যৌথভাবে উদ্যোগী হয়েছে। সম্ভাবনাময় কানাইচট্টায় এতদিন দুর্গম পথের জন্য পর্যটকরা সেভাবে আগ্রহী হননি। কেবলমাত্র পিকনিক স্পট হিসাবেই থেকে গিয়েছিল। কিন্তু রাজ্য পর্যটনে ঢেউ আসায় এই নতুন পর্যটনকেন্দ্রটিকে সাজিয়ে তুলতে মরিয়া প্রশাসন।
অবস্থাগতভাবে কানাইচট্টার সুবিধাও রয়েছে। এর পাশে পিকনিক স্পট হিসাবে রয়েছে বাঁকিপুট, জুনপুটের মতো জায়গা। শীতের সময় বিশেষ করে বড়দিন বা পয়লা জানুয়ারিতে অনেকেই ঝাউবনে পিকনিক করেন। কিন্তু পিকনিকের জন্য পরিকাঠামো না থাকায় খানিক নাকালই হতে হয় পর্যটকদের। কানাইচট্টার সৈকতেই স্থানীয় একটি সমবায় সমিতির উদ্যোগে খামারবাড়ি রয়েছে। সেটি আকর্ষণীয়।
এবার এই পর্যটন ক্ষেত্রটিকে সাজাতে সরকারিভাবে নানা উদ্যোগ শুরু হয়েছে। বর্তমানে সৈকতে যাতায়াতের সুবিধার জন্য ১০০দিনের কাজ প্রকল্পে দু’টি রাস্তা হয়েছে। এছাড়া স্থানীয় নারায়ণ মন্দিরের কাছে পানীয় জলের সাবমার্সিবল পাম্প বসানো হয়েছে। আগামী দিনে শৌচালয়ের পরিকাঠামোও গড়ে তোলা হবে। এছাড়াও সৈকতে সৌন্দর্যায়ন করার পরিকল্পনাও গ্রহণ করা হয়েছে। কানাইচট্টার কাছেই দারিয়াপুরে রয়েছে ঐতিহাসিক কপালকুণ্ডলা মন্দির। রয়েছে সমুদ্রে যাতায়াতকারী নাবিকদের দিক নির্দেশকারী লাইট হাউস। পেটুয়াঘাটে বড়সড় মৎস্যবন্দরও রয়েছে।
[আরও পড়ুন: পর্যটকদের জন্য সুখবর, পুজোর আগেই চালু হতে পারে ভারত-ভূটান উড়ান]
ভ্রমণপিপাসু বাঙালি সব সময় কাছেপিঠের ছোট্ট জায়গায় টুক করে ঘুরে আসতে চায়। সেই তালিকাতেই দ্রুত ঢুকে পড়তে চাইছে এই নতুন কানাইচট্টা। কলকাতার পর্যটক বিশ্বজিৎ মাইতি বলেন, “এই জায়গাটিতে পর্যটনের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। বেশ নির্জন ও শান্ত। রাজ্য সরকার যেভাবে দিঘা, তাজপুর বা মন্দারমণিকে সাজিয়েছে, আশাপাশের এই ছোট ছোট সম্ভাবনাময় জায়গাগুলিকেও সাজাতে পারে। তাতে স্থানীয় মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থারও বদল হবে। আমরাও নতুন পর্যটন কেন্দ্র পাব।”
পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তরুণ জানা বলেন, “কানাইচট্টা সহ বাকি স্পটগুলিতে পর্যটন-পরিকাঠামো গড়ে তোলার ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেওয়ার আরজি জানিয়ে আমরা ইতিপূর্বে পর্যটন দপ্তর ও জেলা প্রশাসনের কাছে প্রকল্প জমা দিয়েছি। আমরা আশাবাদী, এবিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হবে। কানাইচট্টায় পিকনিক স্পট কিংবা অন্যান্য এলাকায় পর্যটন-পরিকাঠামো গড়ে তোলার ক্ষেত্রে পঞ্চায়েত সমিতি সবরকম সহযোগিতা করবে।”