সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সকাল হওয়ার অনেক আগেই যখন গোটা দেশ গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন, তখন ভারতের এক প্রান্তে প্রথম আলোর রেখা জেগে ওঠে। পাহাড়ের খাঁজে খাঁজে সেই সোনাঝরা আলো ছড়িয়ে পড়ে বনাঞ্চল আর পাহাড়ি নদীতে। রাজ্যের নাম অরুণাচল প্রদেশ। ভৌগোলিক অবস্থানের কারণেই একে বলা হয় ‘ল্যান্ড অফ দ্য রাইজিং সান’। আর এই রাজ্যের আঞ্জাও জেলার ‘ডং’ গ্রাম হল সেই জায়গা, যেখানে ভারতের প্রথম সূর্যোদয় দেখা যায়। অরুণাচল প্রদেশ মানেই পাহাড়, কুয়াশা আর আদিম অরণ্যের গল্প। ভারতের এই ‘উদীয়মান সূর্যের দেশে’র একটি ছোট্ট গ্রাম এখন পর্যটকদের নতুন আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু।
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১,২৪০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত এই গ্রাম ভারত-চীন-মায়ানমার সীমান্তের খুব কাছে। একসময় ভাবা হত আন্দামান দ্বীপপুঞ্জে প্রথম সূর্য দেখা যায়। কিন্তু এখন ডং গ্রামই সেই তকমায় ভূষিত। এখানকার শান্ত পরিবেশ, নির্জন পাহাড় আর দিগন্ত জোড়া সবুজ ভ্রমণপিপাসুদের মনে এক অদ্ভুত প্রশান্তি এনে দেয়। প্রতি বছর এখানে স্থানীয়ভাবে ‘সানরাইজ ফেস্টিভ্যাল’ পালিত হয়।
কখন যাবেন?
অক্টোবর থেকে এপ্রিল মাস হল ডং ভ্রমণের সেরা সময়। শীতকালে আকাশ পরিষ্কার থাকে বলে সূর্যোদয় খুব ভালো দেখা যায়। তবে বর্ষাকালে (মে-সেপ্টেম্বর) ধস ও বৃষ্টির কারণে এখানে না যাওয়াই ভালো।
১. বিমানপথ: অসমের ডিব্রুগড় হল নিকটতম বড় বিমানবন্দর।
২. সড়কপথ: ডিব্রুগড় থেকে প্রথমে অরুণাচলের তেজু পৌঁছাতে হবে। তেজু থেকে ডং গ্রামে যাওয়ার রাস্তা পাহাড়ি এবং অত্যন্ত রোমাঞ্চকর।
৩. পারমিট: ভারতীয় পর্যটকদের জন্য ইনার লাইন পারমিট (ILP) এবং বিদেশিদের জন্য প্রটেক্টেড এরিয়া পারমিট প্রয়োজন।
প্রয়োজনীয় কিছু টিপস
ডং অত্যন্ত দুর্গম এলাকা। এখানে মোবাইল নেটওয়ার্ক থাকে না বললেই চলে। থাকার জায়গাও খুব সীমিত, তাই আগে থেকে ব্যবস্থা করে যাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। সাথে অবশ্যই গরম কাপড় রাখবেন। স্থানীয় সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে এই নির্জন প্রকৃতির রূপ উপভোগ করুন। ভারতের প্রথম আলো দেখার এই অভিজ্ঞতাকে আপনার জীবনের অন্যতম সেরা স্মৃতি করে রাখুন।
