shono
Advertisement

মুসলিম শিক্ষিকার মঙ্গলকামনায় হুইলচেয়ারে ৩০০ কিমি পাড়ি, শবরীমালায় পুজো দেবেন যুবক

৭ দিন হুইলচেয়ারে যাত্রা, তারপর অক্ষম পায়েই পাহাড়ে চড়বেন প্রতিবন্ধী যুবক।
Posted: 04:26 PM Dec 28, 2022Updated: 04:33 PM Dec 28, 2022

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভালবাসাই মানুষের ধর্ম। ঘৃণার চাষ করে কতিপতি স্বার্থপর। হিন্দু-মুসলিম-খ্রিস্টান নিয়ে হইচই করে তারা। ভাতের বদলে অভুক্তের হাতে ধর্মের আফিম ধরায়। নচেত কেরলের (Kerala) বিশেষ ভাবে সক্ষম যুবক কান্নানের মতো সহজ মানুষরাই ছড়িয়ে আছেন ভারতজুড়ে। হুইলচেয়ারে ৩০০ কিলোমিটার পাড়ি দিচ্ছেন কান্নান। যাচ্ছেন বিখ্যাত শবরীমালা মন্দিরে (Sabarimala Temple)। বিপদের দিনে পাশে থাকা মুসলিম শিক্ষিকা শমিরার জন্য দেবতা আয়াপ্পার আশীর্বাদ আনতে চলেছেন।

Advertisement

আমগাত্তুচালিল কান্নানের মতো মানুষের কাছে আজও ধর্মের চেয়ে বড় মনুষ্যত্ব, কৃতজ্ঞতা, দায়িত্ব বোধ। সেই কারণেই এই কঠিন যাত্রা। কেরলের মাল্লাপুরম জেলা থেকে শবরীমালা মন্দির, ৩০০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে সময় লাগবে ঠিক ১২ দিন। পামপা নদী তীরে পৌঁছানোর পর কাজে আসবে না হুইলচেয়ার। এরপর পাহাড় চড়ে দেবতার আয়াপ্পার মন্দির পৌঁছবেন বিশেষ ভাবে সক্ষম কান্নান। প্রশ্ন হল, শমিরার জন্য এত কষ্ট কেন করছেন যুবক?

[আরও পড়ুন: কথা বলা বন্ধ করেছে বান্ধবী, রাগের মাথায় তরুণীকে ৫১ বার কোপাল যুবক]

উত্তর পেতে ফিরতে হবে ২০১৩ সালের ৩ ডিসেম্বরে। ওই দিন লরি থেকে ভারী গাছের গুড়ি নামাতে গিয়ে অন্ধকার ঘনায় পেশায় দিনমজুর কান্নানের জীবনে। দুর্ঘটনায় একটি পা বাদ যায়। অন্য পা প্যারালাইজ হয়। মুহূর্তে বদলে যায় কর্মঠ মানুষটার জীবনের গ্রাফ। এরপর থেকে ভরসা হয় হুইলচেয়ার। কাজকম্ম বন্ধ হয়। এই অবস্থায় তিন মেয়ে ও এক শিশুপুত্রকে নিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন। তখনই পাশে দাঁড়ান কনডোট্টির সরকারি কলেজের সহকারি অধ্যাপিকা শমিরা। যিনি জাতীয় সার্ভিস স্কিমের কোঅর্ডিনেটরও। শমিরার উদ্যোগেই মাথার উপর ছাদ তৈরি হয়। বাড়ি হয় যুবকের। 

এবার তাই শিক্ষিকা শমিরার মঙ্গলকামনায় হুইলচেয়ারে শবরীমালায় পাড়ি দিয়েছেন বিশেষ ভাবে সক্ষম কান্নান। যুবক জানিয়েছেন, বারো দিন সকাল ৬টা থেকে ১১টা অবধি যাত্রা করবেন। এরপর বিশ্রাম নেবেন কোনও মন্দিরে অথবা বিশ্রামালয়ে। ফের সন্ধে ৬টা থেকে রাত ১১টা অবধি যাত্রা করবেন। সপ্তাহ খানেকের মধ্যে পৌঁছবেন নদী তীরে। তারপর হুইলচেয়ার থেকে নেমে পাহাড় চড়ার পালা।

বর্তমানে কান্নানের স্ত্রী একটি হোটেলে সাফাই কর্মীর কাজ করেন, মেয়ে প্যারামেডিক্যালের ছাত্রী। দুর্ঘটনার পর দীর্ঘদিন কিছুই করে উঠতে পারছিলেন না তিনি নিজে। তবে সম্প্রতি লটারির টিকিট বিক্রি করা শুরু করেছেন। মোটের উপর চলে যাচ্ছে জীবন। যার জন্য অধ্যাপক শমিরার প্রতি কৃতজ্ঞ তিনি।

[আরও পড়ুন: প্রিকশন ডোজ নেওয়া থাকলে ভুলেও ন্যাজাল ভ্যাকসিন নয়, সতর্ক করল কোভিড টাস্ক ফোর্স]

কান্নানের কথায়, “শিক্ষিকার জন্যই তাঁর জীবনে পরিবর্তন হয়েছে। উনি আমার ও পরিবারের কাছে ঈশ্বরের সমান। আমি আয়াপ্পার একনিষ্ঠ ভক্ত। এই যাত্রা শিক্ষিকার জন্যই। আমার স্থির বিশ্বাস প্রার্থনায় আয়াপ্পা সাড়া দেবেন, শিক্ষিকাকে আশীর্বাদ করবেন।” অন্যদিকে অধ্যাপিকা শমিরা বলেন, “চার বছর আগে ওঁকে বাড়ি তৈরিতে সাহায্য করেছিলাম। এখনও বৃষ্টি হলেই আমাকে ফোন করে কৃতজ্ঞতা জানান।” 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup রাজধানী এক্সপ্রেস toolbarvideo ISL10 toolbarshorts রোববার