দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: হাই কোর্টের (Calcutta HC) নির্দেশ অমান্য করে ফের ম্যানগ্রোভ অরণ্য ধ্বংসের অভিযোগ উঠল দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তীতে। স্থানীয় বাসিন্দাদের সহায়তায় নদীর চড়ে ম্যানগ্রোভ (Mangrove) কেটে মাছের ভেড়ি তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছিল কয়েকজন অসাধু ব্যক্তি। তবে তাঁদের সেই চক্রান্ত ব্যর্থ করে দিয়েছে ব্লক ও পুলিশ প্রশাসন। মঙ্গলবার বাসন্তীর মাতলা নদীর তীরে কামারডাঙা সরদারপাড়ায় এই কাজ চলাকালীন হানা দেন বিডিও এবং পুলিস। কয়েকজন পালিয়ে গেলেও ঘটনাস্থল থেকে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, নদীর তীরে একটা বড় এলাকাজুড়ে এই বেআইনি কাজ শুরু হয়েছিল। ম্যানগ্রোভ কেটে অস্থায়ী বাঁধ তৈরি করার কাজও অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। কিন্তু ম্যানগ্রোভ কেটে কেন এই ভেড়ি তৈরির পরিকল্পনা? স্থানীয় সূত্রের খবর, এলাকার কিছু মানুষকে ভুল বুঝিয়ে টাকার বিনিময়ে এই কাজ করার চেষ্টা করেছিল জনা কয়েক ব্যক্তি। ম্যানগ্রোভ সম্পর্কে সুন্দরবনের (Sunderban) জনমানসে সচেতনতার কিছুটা অভাব রয়েছে। তাই তাকে ধ্বংসের পথে এগিয়ে যেতে দেখেও কোনও প্রতিবাদ করা হয়নি। পুলিস যখন ঘটনাস্থলে পৌঁছয়, তখন দেখা যায় JCB মেশিন দিয়ে মাটি কাটার কাজ চলছে। তৎক্ষণাৎ সেই কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়।
[আরও পড়ুন: ধোঁয়ায় ঢেকেছে আকাশ! দিওয়ালিতে যথেচ্ছ বাজি পোড়ানোয় রেকর্ড দূষণ দিল্লিতে]
এরপর যে ভেড়ি তৈরির জন্য অস্থায়ী বাঁধ দেওয়া হয়েছিল, তাও ভেঙে ফেলা হয়। তবে উল্লেখযোগ্য বিষয়, ৫ কোটি ম্যানগ্রোভ রোপনের জন্য যে জমি চিহ্নিত করা হয়েছিল, তার মধ্যে এই ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পড়ছে না। এ বিষয়ে বিডিও বলেন, ”পঞ্চায়েতের সঙ্গে কথা বলে ওই ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় নতুন করে আবার ম্যানগ্রোভ লাগানো হবে, যাতে জায়গাটি আবারও পুরনো চেহারায় ফিরিয়ে আনা যায়। আমি নিজে থেকে দাঁড়িয়ে সেই কাজ সম্পন্ন করব।”
[আরও পড়ুন: রাসায়নিক মিশে রক্তবর্ণ রাশিয়ার নদী! দূষণের নমুনা দেখে আতঙ্কিত পরিবেশ বিজ্ঞানীরা]
কয়েকদিন আগে বাসন্তীর নদীর চর থেকে ম্যানগ্রোভ কেটে ফিশারি তৈরির ঘটনার কথা জেনে উষ্মাপ্রকাশ করেছিলেন হাই কোর্টের বিচারপতি। ম্যানগ্রোভ এলাকায় নজরদারি বাড়ানোর জন্য প্রশাসনকে নির্দেশ দেন তিনি। সেই ঘটনার কয়েক দিনের মধ্যেই ফের ম্যানগ্রোভ কাটা হল সেই বাসন্তীতেই। এতে কারা মূল অভিযুক্ত, তা চিহ্নিত করতে শুরু হয়েছে তদন্ত। ইতিমধ্যে একটি এফআইআরও দায়ের করা হয়েছে।