সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘যারা সংসদের নিরাপত্তা দিতে পারে না, তারা দেশের নিরাপত্তার দিতেও অক্ষম।’ শীতকালীন অধিবেশন চলাকালীন লোকসভায় হানাদারির ঘটনায় মন্তব্য করলেন তৃণমূল (TMC) সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (Kalyan Banerjee)। শুধু তৃণমূল নয়, বুধবার সংসদে চার ব্যক্তির ঢুকে পড়ায় ঘটনায় নিরাপত্তার প্রশ্ন তুলে মোদি সরকারকে তোপ দাগল কংগ্রেসও (Congress)। এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর বিবৃতি দাবি করল বিরোধীরা।
বুধবার অধিবেশন চলাকালীন লোকসভায় আতঙ্ক ছড়ায়। আচমকা সেখানে ঢুকে পড়েন পড়ে অভিযুক্তরা। তাঁদের কাছে গ্যাস ছোড়ার সরঞ্জাম ছিল। যা দিয়ে সংসদ কক্ষে হলুদ ধোঁয়া ছড়ায় তাঁরা। সঙ্গে ‘জয় ভীম’ স্লোগান দেন। গোটা ঘটনায় নিরাপত্তায় গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, কাকলি ঘোষ দস্তিদার প্রমুখ। কল্যাণ বলেন, “নিরাপত্তার গফিলতি হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রককে জবাব দিতে হবে। কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলো কী করছিল? ওঁরা কী করে ঢুকল? পুলিশের কাছে কী খবর ছিল?” অভিযোগ করেন, মোদির ইগো রাখতে, ইতিহাস নাম তুলতে অবৈজ্ঞানিকভাবে নতুন সংসদভবন তৈরি হয়েছে। তার জেরেই এই ঘটনা।
[আরও পড়ুন: নিরাপত্তারক্ষীরা নন, সংসদে হানাদারদের ধরে ‘নায়ক’ সাংসদরাই]
সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, আচমকাই এমন হামলায় তাঁরা হতভম্ব হয়ে পড়েছিলেন। এমনকী, অজ্ঞাতপরিচয়রা গুলি চালাতে পারে বা বোমা ছুড়তে পারে প্রাথমিক ভাবে এমনও আতঙ্ক তৈরি হয়েছিল। যদিও অভিযুক্তদের আটক করা সম্ভব হয়। কী করে লোকসভায় এমন ঘটতে পারে, সেই প্রশ্ন তুলে নিরাপত্তার গাফিলতির অভিযোগ করেন তিনি।
তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার বলেন, “যে সরকার বার বার নিজেদের দেশের পাহারাদার বলে দাবি করে, তাদের জমানাতেই এমন ঘটনা ঘটে গেল! যে সরকারের আমলে সাংসদদের কোনও নিরাপত্তা নেই, সেখানে দেশের সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়?’’
[আরও পড়ুন: Security Breach in Lok Sabha: প্রকাশ্যে সংসদে হামলাকারী ৪ আততায়ীর পরিচয়, জঙ্গি যোগের জল্পনা তুঙ্গে]
এদিকে কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে বুধবারের ঘটনায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর বিবৃতি দাবি করেন। রাজ্যসভায় নিজের ভাষণে বলেন, “আমরা আপনাকে (অমিত শাহ) অনুরোধ করছি, দয়া করে অধিবেশন স্থগিত করুন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এই বিষয়ে বিস্তারিত বিবৃতি দিন।” চাপের মুখে পালটা বিরোধীদের সমালোচনা করেন বিজেপি নেতা পীযূষ গোয়েল। বলেন, সংসদে হানাদারি নিয়েও রাজনীতি শুরু করেছে বিরোধীরা। এটা দেশের নিরাপত্তার প্রশ্ন। কংগ্রেসের আচরণে ভালো বার্তা যাচ্ছে না দেশের জন্য।
উল্লেখ্য, এই ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লা। তিনি বলেন, “দিল্লি পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। তবে আমদের চিন্তা ছিল ওই ধোঁয়া নিয়ে। তা কী ছিল বা কেমন ছিল। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, সেই ধোঁয়ায় বিশেষ কোনও কিছু ছিল না। তা প্রতিবাদ করার জন্যই ব্যবহার হয়েছিল। ফলে আতঙ্কের কারণ নেই।” পাশাপাশি সাংসদদের সচিবদের আপাতত সংসদে ঢোকায় নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে।