বাবুল হক, মালদহ: বাটনা হাই মাদ্রাসার পরিচালন সমিতির নির্বাচন ঘিরে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে তুমুল লড়াই। অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠল মালদহের রতুয়া থানার চাঁদমনি এলাকা। বেশ কয়েকটি টালির বাড়ি এবং একাধিক মোটরবাইক ভাঙচুর করা হয়। হয় বোমাবাজি, চলে গুলি। রতুয়া থানার বিশাল পুলিশবাহিনী মোতায়েন থাকলেও দিনভর এলাকার পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। সংঘর্ষে দু’পক্ষের অন্তত ১২ জন জখম হয়েছে। তাঁদের মধ্যে একজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। জেলা সদর থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ও কমব্যাট ফোর্স পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। তবে সন্ধ্যায় ভোটপর্ব চুকে গেলেও এলাকায় যথেষ্ট উত্তেজনা রয়েছে। রাত পর্যন্ত গ্রেপ্তারের কোনও খবর নেই।
রবিবার উত্তর মালদহের রতুয়ার চাঁদমনি-২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাটনা হাই মাদ্রাসার পরিচালন সমিতির নির্বাচন ছিল। অভিভাবক প্রতিনিধির মোট আসন ৬টি। তার মধ্যে একটি আসনেও প্রার্থী দেয়নি বাম, বিজেপি বা কংগ্রেস। বিরোধীদের কোনও প্রার্থীই নেই। তবু ৬টি আসনে মোট ১২জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠী ৬ জন করে প্রার্থী দেয়। এদিন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মাদ্রাসার অদূরেই তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী পৃথক পৃথক প্যান্ডেল তৈরি করে শিবির করেছিল। দুই শিবিরেই ছিল প্রচুর ভিড়। মাদ্রাসার নির্বাচন চলাকালীন একটি শিবিরে এসে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে বসে ছিলেন রতুয়ার তৃণমূল বিধায়ক তথা দলের জেলা কমিটির চেয়ারম্যান সমর মুখোপাধ্যায়। কিছুক্ষণ পর সেই শিবিরে এসে বসেন রাজ্যের বস্ত্র বিভাগের রাষ্ট্রমন্ত্রী তাজমুল হোসেন। অপর শিবিরে ছিলেন তৃণমূলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি ফজলুল হক এবং পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির স্বামী হেসামুদ্দিন-সহ স্থানীয় নেতারা।
[আরও পড়ুন: মাড়গ্রামে জখম তৃণমূল কর্মীর SSKM হাসপাতালে মৃত্যু, হামলার নেপথ্যে মাওবাদী! সন্দেহ ফিরহাদের]
স্থানীয় বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায়ের গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে দলীয় কর্মীদের উপর হামলা চালানোর অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূলের রতুয়ার প্রাক্তন ব্লক সভাপতি ফজলুল হক। তিনি বলেন, ‘‘বাটনা হাই মাদ্রাসার পরিচালন সমিতির ভোটে স্থানীয় বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায়, জেলা সভাপতি রহিম বক্সি হস্তক্ষেপ করছেন। ওঁদের অহংকারের পতন হবে। ওঁরা ব্যবসা করতে এসেছেন। এই ঘটনায় তৃণমূল কর্মী হিসাবে আমরা লজ্জিত।” বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায় অবশ্য কোনও প্রতিক্রিয়া জানাতে চাননি। চাঁদমনি গ্রামে দাঁড়িয়ে রাজ্যের মন্ত্রী তাজমুল হোসেন বলেন, ‘‘আমাকে সমর’দা ডেকেছেন। ওঁর নির্দেশে এসেছি। তৃণমূলের দু’টি শিবিরের কথা আমার জানা নেই।” মালদহের পুলিশ সুপার প্রদীপ কুমার যাদব বলেন, ‘‘ঘটনাস্থলে পুলিশ বাহিনী রয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।’’