রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: জল্পনার অবসান। বিধানসভা নির্বাচনের (Assembly Election 2021) আগেই দাদা শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে বিজেপিতে (BJP) যোগ দিলেন সৌমেন্দু। শুক্রবার কাঁথির ডরমেটরি ময়দানে গেরুয়া শিবিরে নাম লেখান তিনি। তাঁর সঙ্গে কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যান-সহ ১৫ জন বিদায়ী কাউন্সিলরও দলবদল করলেন।
মঙ্গলবার বারাকপুরের দলীয় অনুষ্ঠান থেকে অধিকারী পরিবারে পদ্মফুল ফোটানোর কথা বলেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পদ হারিয়েছিলেন সৌমেন্দু (Soumendu Adhikari)। কাঁথির পুর প্রশাসক পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। সৌমেন্দুর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন শুভেন্দুর আরেক ভাই দিব্যেন্দুও। পুরসভায় না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। মঙ্গলের পর বুধবার রাজনৈতিক মহলে কম চাপানউতোর হয়নি। ওইদিন বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় মাহাতোকে দেখা গিয়েছিল শান্তিকুঞ্জে। তিনি দাবি করেছিলেন, শিশির অধিকারী-সহ পরিবারের সকলের সঙ্গেই ‘সাক্ষাৎ’ হয়েছে। যদিও সেকথা উড়িয়ে দিয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকারী (Sisir Adhikari)। তারপর থেকে রাজনৈতিক মহলে ক্রমশ জোরালো হচ্ছিল সৌমেন্দুর দলবদলের জল্পনা। তারই মাঝে বৃহস্পতিবার কাঁথি পুরসভার প্রশাসক পদ থেকে অপসারণ নিয়ে রাজ্য সরকারের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta HC) দ্বারস্থ হন অধিকারী পরিবারের কনিষ্ঠ পুত্র সৌমেন্দু অধিকারী।
[আরও পড়ুন: নতুন বছরের উপহার, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বিশ্বভারতীর রাস্তা ফিরে পেয়ে খুশি স্থানীয় বাসিন্দারা]
কানাঘুষো শোনা যাচ্ছিল, দাদার হাত ধরে শুক্রবার তিনি যোগ দেবেন গেরুয়া শিবিরে। কাঁথির ডরমেটরি ময়দানেই দলবদল হবে বলেই গুঞ্জন তৈরি হয়েছিল। শুক্রবার সকালে যদিও সেই জল্পনার অবসান ঘটান খোদ শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। নন্দীগ্রামের সোনাচূড়ের সভায় সাফ জানিয়ে দেন বিজেপিতে যোগ দিতে চলেছেন ভাই সৌমেন্দু। নন্দীগ্রামে তৃণমূলকে ঝেঁটিয়ে সাফ করার হুঁশিয়ারিও দেন তিনি।
তারপর যোগদান ছিল শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা। টানাপোড়েনে ইতি টেনে শুক্রবার বিকেলে কাঁথির ডরমেটরি মাঠের সভায় গেরুয়া শিবিরে যোগ দেন সৌমেন্দু। শুভেন্দু অধিকারী ভাইয়ের যোগদানের কথা ঘোষণা করেন। এছাড়াও কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যান-সহ ১৫ জন বিদায়ী কাউন্সিলরও যোগ দিলেন বিজেপিতে। তার ফলে ২১ আসন বিশিষ্ট কাঁথি পুরসভা এখন বিজেপির দখলেই চলে গেল। এদিনের সভা থেকে একাধিক ইস্যুতে ফের তৃণমূলকে তোপ দাগেন তিনি। হারের ভয়ে পুরভোটে বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেও কটাক্ষ করেন শুভেন্দু। বিধানসভা নির্বাচনের আগে ফের দলে ভাঙনে স্বাভাবিকভাবেই অস্বস্তিতে ঘাসফুল শিবির। শুভেন্দুর পাশাপাশি সৌমেন্দু অধিকারীকেও ‘মীরজাফর’ বলে কটাক্ষ করেছেন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)।