হুডখোলা জিপে সাতসকালে তিনি কালিকাপুরের গলিতে। চড়চড়ে রোদে প্রথমে খালি মাথা। তারপর বাধ্য হয়ে টুপি। তিন ঘণ্টার ম্যারাথন রোড শো শেষে তবেই মিমি চক্রবর্তী-কে প্রথম ফাঁকায় পেলেন গৌতম ভট্টাচার্য।
রোড শো-র সময় হুডখোলা জিপে আপনার কাছাকাছি দাঁড়িয়েও রীতিমতো অবাক লাগছিল। ঠিক দেখছি তো? নাকি আপনি ফিল্মের শুটিং করছেন, যেমন করে থাকেন?
মিমি: হাঃ হাঃ, তাই?
পরিচিতদের যদি অবাক লাগে, আপনার লাগছে না যে, স্বপ্নের মধ্যেই হাঁটছি?
মিমি: আমি এটার সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছি যে পলিটিক্স এখন থেকে আমার জীবনের একটা এক্সটেনশন। ফিল্ম যেমন ছিল, থাকবে। এটাও থাকবে। আর আমি এমন একটা মানুষ, সে যখন যা করে, মনপ্রাণ দিয়ে করে। এখানেও তাই করেছি। এক একটা ওয়ার্ডে সাত থেকে আটবার করে ঘুরেছি। যাদবপুরের এক প্রান্ত থেকে আর এক প্রান্ত চষে ফেলেছি। আমাকে আমার কোনও কোনও ওয়েল উইশার বহুবার বলেছে, মিমি তোমার যথেষ্ট ট্যালেন্ট আছে। সামনে অনেক সুযোগও। এক নম্বরে যাও। থেমে থেকো না। আমি এটাতে পুরোপুরি বিশ্বাস করি যে, আই মাস্ট বি অন দ্য টপ। ছেলেখেলা করার কোনও সুযোগ নেই আমার। তাই দিন-রাত এক করে লড়ছি। আই হ্যাভ গিভেন মাই ফাইভ থাউজ্যান্ড পার্সেন্ট ফর দিস নিউ এক্সটেনশন অফ মাই লাইফ।
‘য’-এর বদলে নির্বাচন কেন্দ্রটা ‘জ’ দিয়ে শুরু হলে যেমন হত? যাদবপুরের জায়গায় জলপাইগুড়ি?
মিমি: জলপাইগুড়ি হলে তো কেকওয়াক হয়ে যেত।
কেন?
মিমি: আরে জলপাইগুড়ি মিমিকে আদ্যোপান্ত চেনে। ওখানেই আমি জন্মেছি। বড় হয়েছি। জীবনের দু’টো বড় ধাপ ওখানে কাটিয়েছি। কলকাতা তো শুধু একটা পার্ট দেখেছে আমার- তারা শুধু অ্যাকট্রেস মিমিকে চেনে! জলপাইগুড়ি হলে অনেক ইজি হত। তারা মিমি রাস্তায় নেমে এসেছে দেখলে অবাক হত না (হাসি)।
যখন জানলেন যাদবপুর, এই কেন্দ্রের ইতিহাসটা ঘেঁটে দেখেছিলেন? অতীতে কারা কারা এখান থেকে দাঁড়িয়েছে?
মিমি: দেখলাম তো। প্রথমেই চেক করলাম।
কী দেখলেন?
মিমি: প্রথমেই মনে হল বাপ রে। কারা কারা এই কেন্দ্র থেকে দাঁড়িয়েছে? হার্ভার্ডের প্রফেসর! লোকসভার স্পিকার! সায়েন্টিস্ট! পিএইচডি করা বিদ্বান মানুষ! দিদি নিজে দাঁড়িয়েছেন! হিস্ট্রিটা দেখে আরও ভাল বুঝলাম কেন মানুষ এই কেন্দ্রটাকে টাফ বলছে? কী লিস্ট!
দেখে একটু ইনফিরিয়রিটি কমপ্লেক্স হল?
মিমি: আমার মানসিকতায় ওটা নেই। বরঞ্চ আমি এমন একজন মেয়ে যে প্রচলিত নর্মকে ভাঙতে পছন্দ করে। যে সব সময় স্রোতের উলটোদিকে সাঁতার কেটেছে। ট্রাস্ট মি, আই বিলিভ ইন ব্রেকিং নর্মস। লোকে আমার বিরুদ্ধে কম কথা বলেছে? কত বলেছে যে জলপাইগুড়ি থেকে এসে কলকাতায় এস্ট্যাব্লিশড হবে? ধুর। অত সহজ নাকি? তাদের ভুল প্রমাণ করেছি। এর পর বলেছে, এ টালিগঞ্জে বড় হিরোইন হবে? ধুর। আবার ভুল প্রমাণ করেছি। যত লোকে বলে মিমি পারবে না, মিমিকে দিয়ে হবে না তত মিমি চক্রবর্তীর জেদ বেড়ে যায়। ১২ মার্চ থেকে আজ পর্যন্ত একটা দিন বিশ্রাম নিইনি। ফাটিয়ে সর্বত্র দৌড়চ্ছি। আবার ভুল প্রমাণ করে ছাড়ব। তাই কোনও কমপ্লেক্স নেই।
একটা ধারণা আছে তারারা যদি সর্বক্ষণ সাধারণ মানুষের বৃত্তে নেমে ঘোরাফেরা করেন, তাহলে তাঁদের ম্যাগনেটিক চার্ম কমে যায়। তাঁদের ঘিরে রহস্য কমে যায়। এই যে যাদবপুর কেন্দ্রের অলিতেগলিতেও ঘুরছেন। কখনও ভয় হচ্ছে না যে এরা ফ্রি-তে দেখে ফেলল সবাই। আর টিকিট কেটে আমার জন্য হলে যাবে না?
মিমি: সেই মানুষগুলো বরং আরও ভালবাসবে। কারণ তারা দেখল তাদের হয়ে কাজ করার জন্য মিমি তাদের দরজায় এসে দাঁড়াতেও রাজি। আর এবার তাদের কাছে যা ভালবাসা কুড়োচ্ছি তা অকল্পনীয়। আমার ধারণা ছিল না এত লোক যে আমায় চেনে আর এত ভালবাসে!
[ আরও পড়ুন: কিম্ভূত না সাহসী? মেট গালায় প্রিয়াঙ্কার পোশাক নিয়ে কী বলছে টলিউড ]
প্রার্থী ঘোষণার আগে অনেককে নিয়ে জল্পনা ছিল। কিন্তু আপনার মনোনয়ন কাকপক্ষীতেও টের পায়নি।
মিমি: (হাসি)।
ইন্ডাস্ট্রিতে আপনার খুব কাছের লোকেরাও বলেছেন যে তাঁরা জানতেন না। একটু অবাকই হয়ে গিয়েছেন যে আপনি এত বড় খবর তাদের সঙ্গে আগাম শেয়ার করেননি।
মিমি: দেখুন রাজনীতিতে সিক্রেসি একটা খুব বড় ব্যাপার। অনেক সময় ইচ্ছে না থাকলেও তার সঙ্গে মানিয়ে চলতে হয়।
অফার পাওয়ার পর নিজের পরিবারকে কনসাল্ট করার সুযোগ পেয়েছিলেন? না সেই সময়টাও ছিল না?
মিমি: না ছিল। ওঁদের সঙ্গে কথাও বলি। ওঁরা দারুণ খুশি হন।
তাই? সাধারণভাবে তো উলটোটাই হওয়ার কথা যে তুমি এখন কেরিয়ারের মধ্যগগনে। এত কম বয়স। এখন কোন দুঃখে পলিটিক্সে জয়েন করবে?
মিমি: কী বলছেন? মাই পেরেন্টস ওয়ার সো এক্সাইটেড। ওঁদের উত্তেজনা দেখে আমার তো মনে হচ্ছিল আমি বুঝি বেস্ট অ্যাক্টর অ্যাওয়ার্ড জিতেছি। আসলে আমার বাড়িতে বরাবর একটা রাজনৈতিক ওরিয়েন্টেশন আছে। মা যুব ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। দাদু ছিলেন পঞ্চায়েত প্রধান।
ওঁরা কোন পার্টির?
মিমি: সব তৃণমূল (হাসি)!
সেই রিঅ্যাকশন দেখে আরও রাজি হয়ে গেলেন?
মিমি: ঠিক সেটা নয়, কারণ আমার লাইফের যাবতীয় ডিসিশন আমি নিজেই নিই। সবচেয়ে বড় প্রশ্ন ছিল আমার নিজের কাছে।
সেটা কী?
মিমি: সেটা এই যে, আমি নিজে কি ডিসিশনটায় কনভিন্সড হচ্ছি? আমি কি পেরে উঠব? আমার এতগুলো প্রোজেক্ট সামনে। এতগুলো ব্র্যান্ড এনডোর্স করি। এমনিতেই এত কঠিন শিডিউলের মধে্য থাকি। তারপর এটা যোগ হলে কী করে কোপ করব? একবার সেটা কনভিন্সড হয়ে গেলে আর ডিসিশন নেওয়ার প্রবলেম কী?
প্রচার শেষ হতে মাত্র একদিন বাকি। এখন কতটা কনফিডেন্ট লাগছে?
মিমি: যত দেখছি তত কনফিডেন্স বাড়ছে। আপনাকে বললাম তো আমি জানতাম অনেক লোক ফিল্মের জন্য আমায় জানে-চেনে। তারা যে আমায় এত ভালওবাসে জানতাম না।
রোড শো-তে চলমান গাড়ির মধ্যেই দেখলাম কলকাতার বাইরের সাংবাদিকরা আপনাকে ক্রমাগত ইন্টারভিউ করছেন। ন্যাশনাল টিভি চ্যানেলের লোক বাদ দিয়েও অবাক লাগল বিবিসি-র মহিলা সাংবাদিক দেখে। এটা আর কোনও কেন্দ্রে দেখিনি।
মিমি: হ্যাঁ, আমি খুব গ্রেটফুল যে স্থানীয় মিডিয়া বাদ দিয়েও বাংলার বাইরের মিডিয়া আমার সিটটার প্রতি বা আমাকে নিয়ে এত অ্যাটেনশন দিয়েছে।
দিল্লির সাংবাদিক তো একরকম আপনাকে জয়ী ঘোষিত করে দিলেন যে সেন্ট্রাল হলের প্রায় বাইরে যেন আপনি দাঁড়িয়ে আছেন। এগুলো শুনতে খুব ভাল। কিন্তু উলটো হয়ে গেলে?
মিমি: আপনাকে বললাম তো অন্যরকম কিছু হয়ে গেলেও আমি তৃণমূলেই থাকব। আই হ্যাভ মেড আ ডিসিশন। তাহলেও রাজনীতি ছাড়ছি না।
কিন্তু পলিটিক্সের তো অনেক কম্পালশন আছে। ইনস্টাগ্রামে সাবধানে ছবি পোস্ট করতে হবে। একটু রিভিলিং ছবি হয়ে গেলে নতুন কন্ট্রোভার্সি।
মিমি: কে বলল বদলাবে? আমি আমার মতো থাকব। সেটা যত ডিফারেন্ট দেখতে লাগুক। ইনস্টাগ্রামে ডেইলি ছবি পোস্ট চলবে।
আপনি দাবি করছেন জীবন বদলাবে না। ইনস্টাগ্রাম-টুইটার যেমন ছিল তেমনই থাকবে। সেটা কি পলিটিক্যাল লাইফে থেকে সেভাবে সম্ভব? অবশ্যই আপনাকে ডিসক্রিট হতে হবে।
মিমি: আমি এগ্রি করলাম না। জীবনে কখনও লুকিয়েচুরিয়ে আমি কিছু করিনি। যা করেছি প্রকাশ্যে করেছি। কখনও মনে করিনি জীবনে এটাই সেট নিয়ম তো আমায় এভাবেই চলতে হবে। আমি যেটা ঠিক মনে করব সেটাই করব। তাতে গেমটা চেঞ্জ হয়ে গেলে যাক না।
সেন্ট্রাল হল অবধি যদি পৌঁছে যান, হয়েই গেল। যদি না পৌঁছন তাহলেও তো বলছেন রাজনীতি করে যাবেন। তাহলে মিমি আপনার বলিউড স্বপ্নের কি সমাধি হয়ে গেল? এই যে কিছু দিন পরপর আপনি মুম্বই চলে যেতেন ভাল রোলের লক্ষ্যে, সেগুলো তো অপ্রাসঙ্গিক হয়ে গেল।
মিমি: একটা কোথাও ভুল হচ্ছে। আমি কখনও বলিউডের পিছনে ছুটিনি। আমি বেশিরভাগ সময় গিয়েছি আমি যে অ্যাডগুলো শুট করি, তার জন্য। বেশ কয়েকটা ন্যাশনাল ব্র্যান্ডের আমি কাজ করি। এ ছাড়াও অনেক সময় গিয়েছি নেটফ্লিক্স, অ্যামাজন প্রাইম বা বালাজির সঙ্গে নানা ওয়ার্কশপ করতে। আমি কখনও বলিউড ছবির জন্য দৌড়ইনি। আমি টালিগঞ্জে খুব আনন্দের সঙ্গে আছি।
রোড শো-র মধ্যেই শুনলাম এক ফাঁকে আপনি বলছেন, অরূপদা, কাল অমিত শাহ-র ইন্টারভিউটা দেখেছেন? অমিত শাহ-মোদি এ সব নামগুলো তো এত বছর আপনার সিলেবাসে ছিল না!
মিমি: আমার এখনকার জীবনে এনিথিং দ্যাট কনসার্নস বেঙ্গল ইজ পার্ট অফ মাই সিলেবাস। আর তা ছাড়া কেউ যদি আমার নেত্রীকে অ্যাটাক করে কিছু বলে, আমি তো হিট ব্যাক করবই।
এই যে বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙে পড়ল…
মিমি: ভাবাই যায় না! বিদ্যাসাগর তো শুধুই একজন মনীষী নন, উনি বাঙালি আইডিওলজির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে। তাঁর স্ট্যাচু ভেঙে পড়ছে, ভাবাই যায় না। খবরটা জানা থেকে রক্ত গরম হয়ে যাচ্ছে। এটা বাঙালির আবেগকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলা!
শ্রীকান্ত মোহতা কারাবন্দি হওয়ার পর থেকে শোনা যাচ্ছে কঠিন সময়ে এসভিএফের তথাকথিত কিছু কাছের মানুষ পালিয়ে যেতে ব্যস্ত। আপনি যদিও প্রথম দিনই প্রকাশ্য সমর্থন জানিয়ে টুইট করেছিলেন।
মিমি: কী বলছেন! এটাই কি স্বাভাবিক নয়? এসভিএফ আমার পরিবারের মতো। এখান থেকে আমি বড় হয়ে উঠেছি। প্রতিষ্ঠা পেয়েছি। শ্রীকান্তদা এত গাইড করেছে। সেই লোকটার আজ খারাপ সময় এসেছে বলে পালিয়ে যাব? ভোটটা শেষ হলেই ঠিক করেছি এসভিএফ অফিসে যাব।
নুসরত বসিরহাটে। আপনি যাদবপুরে। নিয়মিত নোট এক্সচেঞ্জ হয় নতুন জীবনের?
মিমি: হ্যাঁ, রেগুলার যোগাযোগ আছে। ইন ফ্যাক্ট ডেইলি বেসিসে আছে। তবে নোট এক্সচেঞ্জ সেভাবে হয় না।
তাহলে আর ডেইলি কথাটা কী হয়?
মিমি: নানা কিছু নিয়ে কথা হয়। কার হেলথ কেমন আছে? কী কী খবর? এইসব টুকটাক।
বারবার বললেন যে ভোটে দাঁড়ানোর পর মানুষের এত ভালবাসা পাবেন ভাবেননি। মিমি, একই সঙ্গে তো প্রচুর সমালোচনাও এসেছে।
মিমি: হুঁ।
ফিল্মস্টাররা সাধারণত মানুষের ভালবাসায় অভ্যস্ত থাকেন। তার তীব্রতা কম-বেশি হতে পারে। কিন্তু তাঁদের হ্যাবিট হয়ে যায় ওয়ান ওয়েতে গাড়ি চালানোর মতো। উল্টোদিক দিয়ে হঠাৎ গাড়ি আসার মতো নিন্দা বা প্রচণ্ড সমালোচনা এলেই এঁদের সমস্যা হয়। আপনার অসুবিধে হয়নি সোশ্যাল মিডিয়ায় এই পরিমাণ ট্রোলড হয়ে?
মিমি: আমি মিথ্যে বলব না যে প্রবলেম হয়নি। প্রবলেম তো হয়েইছে। আমি শুধু একটা কথা বলব?
বলুন না।
মিমি: আমার মনে হয়েছে মানুষকে ম্যালাইন করারও একটা সীমা থাকে। এরা কোন পর্যায়ে নামল! ছবি মর্ফ করে, যেখান-সেখান থেকে এডিট করে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করল? এরা বলছে আমি গ্লাভস পরে নির্বাচনী প্রচারে এসেছি মানুষের ছোঁয়া এড়াব বলে? ওরা কি জানে আমার একটা এনজিও আছে? যার কাজে মাঝেমধ্যে আমি সুন্দরবন যাই। আর একপাল কুকুরের বাচ্চাকে নিজের হাতে স্নান করাই। যে মানুষটা পশুদের প্রতিও এত সহানুভূতিশীল, সে ভোটের প্রচারে গ্লাভস পরে বেরোবে হিউমান টাচ এড়াতে! বিশ্বাসযোগ্য? কিন্তু কালি মাখানোর জন্য সেটাও বলবে। আমি জাস্টিফাই করতে চাই না। কতগুলো বাজে লোকের জন্য নিজেকে অনর্থক ডিফেন্ড করতে যাব কেন?
কিন্তু এগুলো তো সোশ্যাল নেটওয়ার্কের ছবিতে দেখা গেছে। একটা ভিডিওতে যেমন। আপনি সামনে দাঁড়ানো জমায়েতকে প্রচণ্ড বকাঝকা করছেন। লোকের দেখে স্বভাবতই মনে হয়েছে ভোটপ্রার্থী এত উত্তেজিত কেন? এত বকাবকিই বা করছে কেন?
মিমি: সেম কেস। সামনে-পিছন সব কেটে দিয়ে একটা পার্টিকুলার অংশকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সামনে আনা হয়েছে। ওদের কাজই হচ্ছে এই সব নোংরামি করে সেলিব্রিটিদের ট্রোলিং করা। এটাই পেশা। সুখের কথা হল এরা সংখ্যায় খুব কম। মাত্র দু’পার্সেন্ট। আমি ওদের বলতে চাই, এতই যদি তোদের অভিযোগ, সামনে এসে বল না। দেখি তোদের কী সাহস? কী জানেন তো। আমাদের বাবা-মাকে যদি জিজ্ঞেস করা হয় মিমি কী করে, তাঁরা উত্তর দিতে পারবেন। আপনার বাবা-মাকে যদি জিজ্ঞেস করা হয়, তাঁরা সুখের সঙ্গে উত্তর দেবেন। এদের বাবা-মা কী উত্তর দেবে? না, আমার ছেলে ট্রোলিং করে।
এবার বলুন সত্যি সেদিন কী ঘটেছিল?
মিমি: আমার একটা জিপ র্যালি ছিল সেদিন। সোনারপুর সাউথে। ঢোকা থেকেই দেখি অদ্ভুত একটা বিশৃঙ্খল চেহারা। মনে হল বাইরে থেকে লোক ঢুকেছে। আর ঢুকে তারা অসভ্য গালিগালাজও করছে।
[ আরও পড়ুন: এবার সুজিত সরকারের ছবিতে একসঙ্গে অমিতাভ-আয়ুষ্মান ]
তৃণমূলের জমায়েত। আপনারই পার্টিতে এমন ঘটনা কী করে সম্ভব?
মিমি: কী করে সম্ভব হয়েছিল জানি না। কিন্তু পরিস্থিতি ক্রমশ হাতের বাইরে চলে যাচ্ছিল। সবচেয়ে যেটা খারাপ হচ্ছিল, তা হল অশ্রাব্য খিস্তি। আমি তখন রুখে দাঁড়াই যে এ জিনিস চলবে না। অ্যাবিউসিভ ল্যাঙ্গোয়েজ আমি বরদাস্ত করব না। আমাকে এরা ভেবেছেটা কী? চিরকাল প্রতিবাদী ছিলাম। চিরকাল থাকব। মিমি চক্রবর্তী কি বার্বিডল নাকি যে তার সামনে যে কেউ যে কোনও কথা বলে পার পেয়ে যাবে? আমি যদি অন্যায় দেখেও চুপ করে থাকি তাহলে মানুষের রিপ্রেজেন্টেটিভ কী করে হব? তার হয়ে লড়াই করব কী করে?
যাদবপুরের বিপক্ষ প্রতিদ্বন্দ্বীদের সম্পর্কে কিছু বলবেন?
মিমি: বিকাশদা আছেন সিপিএমের। বিকাশ ভট্টাচার্য।
আলাপ আছে ওঁর সঙ্গে?
মিমি: নাহ, তবে জানি। সিনিয়র মানুষ। অনুপম হাজরা আছেন। উনি তো তৃণমূলেই ছিলেন।
কী বলবেন এঁদের সম্পর্কে?
মিমি: দু’জনেই সিনিয়র। আমি ওঁদের কাউকে তাই নিচে নেমে আঘাত করতে পারব না।
জিতবেন?
মিমি: ভোটবাক্স বলবে। সময় বলবে। তবে বললাম না আমি খুব কনফিডেন্ট।
ওই ট্রোলিং করা লোকগুলো?
মিমি: ওরা মাত্র টু পার্সেন্ট। বাকি নাইন্টি এইট পার্সেন্টের ভালবাসা আমার সঙ্গে আছে।
‘বোঝে না সে বোঝে না’। ‘বাপি বাড়ি যা’। ‘গানের ওপারে’। আপনার অভিনয় করা কোন জনপ্রিয় থিমের সঙ্গে এখনকার অবস্থার মিল পাচ্ছেন?
মিমি: একটার সঙ্গেও না (হাসি)। এটা ফিল্ম না। হার্ডকোর পলিটিক্স। এ একেবারে আলাদা।
The post ‘ওরা আমাকে বার্বিডল ভাবলে ভুল করবে’, ভোটের আগে আত্মবিশ্বাসী মিমি appeared first on Sangbad Pratidin.