কলহার মুখোপাধ্যায়, বিধাননগর: ইট, বালি, চুন-সুরকি ব্যবসার সঙ্গে যাঁরা জড়িত, সেই মুখগুলো যেন সামনে না আসে। বুথ এজেন্ট হিসেবে তাঁদের যেন ব্যবহার না করে দল। মানুষ এই মুখগুলোকে ভালভাবে নেন না। ভোটের সময় তাঁদের পিছনের সারিতে রেখে স্বচ্ছ ভাবমূর্তির মানুষদের সামনে নিয়ে আসতে হবে। দমদমে তৃণমূলের কর্মী সভায় সোমবার একথা বলেছেন সাংসদ সৌগত রায় (Saugata Roy)। যা শুনে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা জানিয়েছেন, সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে বলতে গিয়ে এতদিন বিরোধীদের মুখে একই ধরনের বক্তব্য একাধিকবার শোনা গিয়েছে। এদিন সেই বক্তব্যেরই যেন প্রতিধ্বনি শোনা গেল তৃণমূল সাংসদের গলাতেও।
দমদমের অরো সিনেমা হলে এদিন দলীয় কর্মীদের নিয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সভার আহ্বায়ক ছিলেন বিধায়ক ব্রাত্য বসু (Bratya Basu)। তিনি সাংসদের বক্তব্যের বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। দলীয় কর্মীদের ঐক্যবদ্ধতার বার্তা দিয়ে এদিন ব্রাত্যবাবু বলেছেন, “সবাইকে মিলেমিশে কাজ করতে হবে। বিধানসভা ভোট আসন্ন, তাই প্রত্যেককে আরও সচল হতে হবে।” এর পাশাপাশি তৃণমূলের স্থানীয় দলীয় কোন্দলের দিকে ইঙ্গিত করে বিধায়ক বলেছেন, “ভারতবর্ষে এমন কোন দল নেই যে দলে নিজেদের মধ্যে লড়াই হয় না। এই প্রবণতা সব দলেই থাকে। আমাদের খেয়াল রাখতে হবে বিধানসভা ভোটে জিতে আসাটাই মূল।” অনুষ্ঠানের আরও এক বক্তা দমদমের পুরপ্রশাসক হরিন্দর সিং একই সুরে বলেছেন, “ভোটে জেতাই মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত। নিজেদের মধ্যে লড়াই সরিয়ে রেখে সেই কাজে ঝাঁপাতে হবে সবাইকে।”
[আরও পড়ুন: ‘বিজেপির একজনকে মারলে তৃণমূলের ৪ জনকে মারব’, হুমকি বিশ্বপ্রিয় রায়চৌধুরির]
এদিনের বৈঠকে দমদমের ২৭১ টি পার্টের একজন করে বুথ এজেন্ট উপস্থিত ছিলেন। স্থানীয় নেতৃত্বের প্রতি বার্তা দিয়ে তাঁর বক্তব্য, তৃণমূলে যাঁদের ভাবমূর্তি খুব একটা স্বচ্ছ নয়, প্রয়োজনে তাঁদের বলতে হবে দলে থাকুন কিন্তু ভোটের সময় আমার পাশে ঘোরাঘুরি করতে পারবেন না। মিছিলে যদি তাঁদের নিতেই হয় তাহলে একবারে শেষ সারিতে রাখুন। ভাল হয় যদি তাঁদের বাদ দিয়েই কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। অন্যদিকে দলের অভ্যন্তরীণ বিষয় শুধু নয়, কর্মীসভা থেকে বিরোধীদের মোকাবিলা করার বিষয়ে কর্মীদের পরামর্শ দেন বিধায়ক ব্রাত্য বসু। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) সংখ্যালঘু তোষণ করেন বলে বিরোধীরা বিশেষ করে বিজেপি অভিযোগ জানায়, সেই কথার সূত্র ধরে ব্রাত্যবাবু বলেছেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হিন্দু, মুসলমান, জৈন, খ্রিস্টান-সহ সব ধর্মের মানুষের তোষণ করেন। আসলে উনি মানুষের তোষণ করেন। কারণ উনি মানুষেরই মুখ্যমন্ত্রী।” এদিনের সভায় হাজির ছিলেন দমদমের তৃণমূলের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। বরুণ নট্টো, প্রবীর পাল, দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, দয়াময় ভট্টাচার্য, রাজু সেনশর্মা প্রমুখ।